‘ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে হস্তশিল্পের প্রসারে সরকার সহযোগিতা করবে’
২৫ জুলাই ২০২০ ২০:০৬
ঢাকা: করোনায় অন্যান্য ব্যবসায়ীদের মতো বিপর্যস্ত হস্তশিল্পের উদ্যোক্তারা। তাই সামাজিক দূরুত্ব বজায় রেখে কীভাবে কাঙ্ক্ষিত ক্রেতার কাছে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে হস্তশিল্প পণ্য পৌঁছে দেওয়া যায় সেজন্য উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাক্রাফট নামের একটি সংগঠন। আর ডিজিটাল প্লাটফর্মে হস্তশিল্পের প্রসার ঘটাতে এ সংগঠনকে সবধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।
শনিবার (২৫ জুলাই) বিকেলে হস্তশিল্প ও ডিজিটাল মার্কেটিংবিষয়ক এক অনলাইন আলোচনায় অংশ নিয়ে মন্ত্রণালয়ে যুগ্ম-সচিব মো. শফিকুজ্জামান এ আশ্বাস দেন।
মো. শফিকুজ্জামান বলেন, ‘করোনাকালে আমরা উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা করতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। বিশেষ করে হস্তশিল্প উদ্যোক্তাদের। কারণ এই সময়ে তাদের তৈরিকৃত পণ্যটি সঠিকভাবে পৌঁছানো না গেলে অনেক বড় ক্ষতির মুখে পড়বে দেশীয় এই শিল্পটি। তাই তাদের জন্য ডিজিটাল প্লাটফর্মের উদ্যোগ অবশ্যই কার্যকর করতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘হ্যান্ডিক্রাফটের অনেক উদ্যোক্তার নিজস্ব শোরুম থাকলেও করোনার কারণে সামাজিক দূরত্বের কারণে সেখানে কেউ যেতে চায় না। তাই তারাও ডিজিটাল প্লাটফর্মে নিজেদের যুক্ত করে শিল্পটির উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা রাখতে পারে। এজন্য আমাদের মন্ত্রণালয়ে যেসব নীতিমালা রয়েছে সেসব নীতিমালা অনুযায়ী আমরা সবরকমের সহযোগিতা করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি মনে করি, এ শিল্পে লক্ষ লক্ষ নারী শ্রমিকও কাজ করছে। তাদের শ্রমকে টিকিয়ে রাখতে, শ্রমের প্রকৃত মূল্য দিতে এ উদ্যোগ প্রসংশনীয়। তবে এজন্য যারা ব্যাংক ঋণসহ আর্থিক ও যাবতীয় সুবিধা দিয়ে থাকে তাদেরকেও এগিয়ে আসতে হবে।’
কোরবানির পশুর চামড়া সঠিকভাবে সংরক্ষণের আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সামনে কোরবানির ঈদ। এই ঈদে পশুর চামড়া সঠিকভাবে সংরক্ষণ করতে পারলে এ শিল্প অনেক বেশি উপকৃত হবে। তাই যারা চামড়া সংরক্ষণের দায়িত্ব নিচ্ছে তাদের এ বিষয়ে সতর্ক থাকবে হবে।’
এ সময় বাংলাক্রাফটের সভাপতি গোলাম আহসান বলেন, ‘আমরা চাই হ্যান্ডিক্রাফটের উদ্যোক্তারা যেন করোনার এ মহামারির সময়ও নিজেদের উদ্যোগগুলো দেশীয় ও বিশ্ববাজারে ছড়িয়ে দিতে পারে। এজন্য ডিজিটাল প্লাটফর্মের বিকল্প নেই। তাই কীভাবে এ প্লাটফর্মে হ্যান্ডিক্রাফটের প্রসার ঘটানো যায় সেটিই এখন বিবেচ্য।’
তিনি বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে কিছু পরিকল্পনা নিয়েছি। প্রথমত বাংলাক্রাফটের ই-শপ নামে একটি প্লাটফর্ম তৈরি করতে চাই। এর মাধ্যমে প্রায় পাঁচশ’র মত উদ্যোক্তাকে প্রয়োজনী প্রশিক্ষণ ও পরামর্শ নিশ্চিত করা চাই। ইতোমধ্যে একটি কর্মশালাও শেষ হয়েছে। কাজেই এসব কর্মশালা থেকে কীভাবে ডিজিটাল প্লাটফর্মে ক্রেতার কাছে নিজেদের পণ্য পৌঁছে দেওয়া যাবে সে বিষয়ে যথেষ্ট অভিজ্ঞতা নেওয়া সম্ভব।’
এ সময় ফ্লো ইন্টারেক্টিভ সংস্থার প্রধান নির্বাহী পরিচালক ইকতেদার বিন মাসুদ উন্নত বিশ্বের উদাহরণ উপস্থাপন করে বলেন, ‘বিশ্বের অনেক দেশই এখন ডিজিটাল প্লাটফর্মে নিজেদের সকল কার্যক্রম পরিচালনা করছে। সে হিসেবে বাংলাদেশেও এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। তাই ডিজিটাল প্লাটফর্মে খুব দ্রুতই ক্রেতার কাছে পৌঁছানো সম্ভব আমাদের দেশেও।’ এজন্য উদ্যোক্তাদের যথেষ্ট দক্ষতা অর্জনের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি।
অনলাইন আলোচনায় বাংলাক্রাফ্ট’র সহ-সভাপতি শাহিদ হোসেন শামীমের সঞ্চালনায় আরও অংশ নেন বিভিন্ন হস্তশিল্প উদ্যোক্তারা।