Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫০-এ পা


২৭ জুলাই ২০২০ ০০:৩৫

ঢাকা: জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের দৌহিত্র এবং আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পুত্র সজীব ওয়াজেদ জয়ের জন্মদিন আজ সোমবার (২৭ জুলাই)। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আইসিটি বিষয়ক উপদেষ্টা হিসেবে বাংলাদেশের সমান বয়সী জয় ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের নেপথ্য কারিগর। জাতি যেমন এ বছর ৫০তম মহান স্বাধীনতা দিবস উদযাপন করেছে, ঠিক তেমনি এ বছর জয়েরও ৫০তম জন্মদিন।

মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে ১৯৭১ সালের ২৭ জুলাই ঢাকায় পরমাণু বিজ্ঞানী এম এ ওয়াজেদ মিয়া ও শেখ হাসিনার প্রথম সন্তান সজীব ওয়াজেদের জন্ম হয়। মুক্তিযুদ্ধে জয় ছিনিয়ে আনার প্রত্যয়ে নানা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রিয় এই নাতির নাম রাখেন ‘জয়’।

১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর মায়ের সঙ্গে বাবার কর্মস্থল জার্মানি হয়ে ভারতে যান সজীব ওয়াজেদ জয়। তার শৈশব-কৈশোর কাটে ভারতে। সজীব ওয়াজেদ জয় প্রথমে ভারতের ব্যাঙ্গালোর থেকে কম্পিউটার বিজ্ঞানে ও পরে যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেছেন। পরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন তিনি।

২০০২ সালের ২৬ অক্টোবর ক্রিস্টিন ওয়াজেদকে বিয়ে করেন। তাদের একমাত্র সন্তানের নাম সোফিয়া ওয়াজেদ।

শুরু থেকেই আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যক্রমে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত নন জয়। তবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) উপদেষ্টা তিনি। দলে সক্রিয় না হলেও অবশ্য ২০১০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি জয় রংপুর জেলা আওয়ামী লীগের প্রাথমিক সদস্যপদ গ্রহণ করেন সজীব ওয়াজেদ। এর মধ্য দিয়ে তিনি দলীয় রাজনীতিতে নাম লেখান। নবম ও দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে অংশ নেন তিনি। নির্বাচনি প্রচারণায় সাধারণ মানুষের কাছে ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্নের কথা তুলে ধরেন। কেবল নির্বাচনি প্রচারণাই অবশ্য নয়, সরকার ও দলের তথ্যপ্রযুক্তি, রাজনীতি, সামাজিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষা-বিষয়ক বিভিন্ন কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তরুণ উদ্যোক্তা তৈরি করার লক্ষ্যে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন।

২০১৬ ও ২০১৯ সালে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলনে কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদে জয়ের দায়িত্বশীল পদপ্রাপ্তি নিয়ে গুঞ্জনের ডালপালা পাখা মেলেছিল। কিন্তু সব গুঞ্জনকে গুঞ্জনিই প্রমাণ করেছেন। দলীয় গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদে আসীন হওয়ার তুলনায় অন্তরালে থেকেই কাজ করে যাওয়াকেই নিজের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন তিনি।

দেশ গঠনে তরুণদের মতামত, পরামর্শ শুনতে ‘লেটস টক’ ও ‘পলিসি ক্যাফে’ দু’টি কর্মসূচি এরই মধ্যে বেশ সাড়া ফেলেছে। এছাড়া তরুণ উদ্যোক্তা ও নেতৃত্বকে একসঙ্গে যুক্ত করার পাশাপাশি প্রশিক্ষিত করতে তরুণদের বৃহত্তম প্ল্যাটফর্ম ‘ইয়াং বাংলা‘র সূচনা করেন তিনি। বর্তমানে বেশিরভাগ সময়েই দেশের বাইরে অবস্থান করলেও জাতীয় রাজনীতি ও সরকারের গৃহীত বিভিন্ন কর্মসূচি নিয়ে মাঝে মাঝে ফেসবুকে মতামত জানিয়ে থাকেন।

২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে আওয়ামী লীগের নির্বাচনি ইশতেহারে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের ঘোষণাকে সামনে নিয়ে আসেন জয়। নির্বাচনে জিতে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করলে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে ‍তুলতে কাজ শুরু করেন। পরে ২০১৪ সালে আওয়ামী লীগ ফের সরকার গঠন করলে অবৈতনিক হিসেবে প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টার দায়িত্ব পান। শেখ হাসিনা টানা তৃতীয় মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হলে জয়ও দ্বিতীয় মেয়াদে তার অবৈতনিক আইসিটি উপদেষ্টার দায়িত্ব পান। আর এর মাধ্যমেই ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনিমার্ণের মাধ্যমে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয়ে কাজ করছেন তিনি। আধুনিক বাংলাদেশ গড়ার ক্ষেত্রে বিভিন্ন পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা বাস্তবায়নে রেখে চলেছেন সক্রিয় ভূমিকা।

এরই মধ্যে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তোলার পেছনে নেপথ্যের এই কারিগরের সুনাম ছড়িয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি খাতের বিশেষজ্ঞ হিসেবেও তার পরিচিতি বিশ্বব্যাপী। ২০০৭ সালে তাই ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম তাকে ‘গ্লোবাল লিডার অব দ্য ওয়ার্ল্ড’ নির্বাচিত করে।

ডিজিটাল বাংলাদেশ নিয়ে নিজের স্বপ্নের কথা জানিয়ে গত বছরের ১৭ জুলাই আগারগাঁও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের এক অনুষ্ঠানে জয় বলেন, মানুষের জীবনকে সহজ করার জন্য আমাদের টার্গেট প্রায় ৯০ শতাংশ সরকারি সেবা মোবাইলে থাকবে। আঙুলের সঙ্গে থাকবে। সাধারণ নাগরিকদের জীবনের সহযোগিতা করে সময় বাঁচানোর কাজ, এটাই হচ্ছে ডিজিটাল বাংলাদেশের মিশন।

তবে এই ‘মিশন’ সাময়িক কোনো মিশন নয়। গত বছরের জুলাইয়েই ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ: সমৃদ্ধির অগ্রযাত্রায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি’ শীর্ষক এক কর্মশালায় প্রধান আলোচকের বক্তৃতায় তিনি বলেন, আমাদের ডিজিটাল বাংলাদেশের ভিশন ২০২১ সালেই শেষ হয়ে যাবে না। আমরা প্ল্যানিং করছি অন্তত আগামী ১৫ বছরের জন্য।

এদিকে, সজীব ওয়াজেদ জয়ের ৫০তম জন্মদিন উপলক্ষে রোববার (২৬ জুলাই) ‘সজীব ওয়াজেদ জয়: সমৃদ্ধ আগামীর প্রতিচ্ছবি’ শীর্ষক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। তিনি গ্রন্থটির মোড়ক উন্মোচন শেষে এক ব্রিফিংয়ে বলেন, আমাদের অনেকের অজান্তে বদলে গেছে দেশের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির অবকাঠামো। ডিজিটাল বাংলাদেশের অবয়ব কী— এখন আর কাউকে বোঝাতে হয় না। তার প্রমাণ করোনাকালে অব্যাহত যোগাযোগ ব্যবস্থা। ডিজিটাল বাংলাদেশের এই নেপথ্যের নায়ক এবং আইসিটি খাতে নিঃশব্দে ঘটে যাওয়া বিপ্লবের স্থপতি সজীব ওয়াজেদ জয়।

টপ নিউজ ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা প্রধানমন্ত্রীর সন্তান বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র সজীব ওয়াজেদ জয়


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর