সিরাজগঞ্জে নদীর পানি বেড়ে ভাঙন আতঙ্ক
২৭ জুলাই ২০২০ ২০:১৪
সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জে পানি বেড়ে যাওয়ার সঙ্গে শুরু হয়েছে ভয়াবহ নদীভাঙন। ভাঙনের তীব্রতায় নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে দুই শতাধিক বসতভিটা, আবাদি জমি, মসজিদসহ বিভিন্ন স্থাপনা। বাড়ি ও জমি হারিয়ে উঁচু বাঁধ ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আশ্রয় নিয়েছে মানুষ। ভাঙন আতঙ্কে অনেকেই বসতবাড়ি সরিয়ে নিচ্ছেন অন্যত্র।
ছোনগাছা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল আলম বলেন, গত কয়েক দিন ধরে নদী ভাঙ্গন শুরু হয়েছে। শুক্রবার (২৪ জুলাই) সবচেয়ে বেশি ভাঙ্গন দেখা যায়। মুহূর্তের মধ্যে শতাধিক বাড়ি নদীগর্ভে বিলিন হয়ে যায়। তাৎক্ষনিকভাবে বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানানো হয়। পরে ভাঙ্গন রোধে পানি উন্নয়ন বোর্ড বালির বস্তা ফেলে। এতে ভাঙন কিছুটা কমলেও পরদিন থেকে আবারও শুরু হয়। এখনও ভাঙন আতঙ্কে আছে কয়েকটি গ্রাম।
আজ সোমবার দুপুরে সিরাজগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী রনজিৎ কুমার সরকার জানান, গত ২৪ ঘন্টায় সিরাজগঞ্জে ৮৪ সেন্টিমিটার ও কাজিপুর পয়েন্টের ৯২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। জেলার কাজীপুর, বেলকুচি, উল্লাপাড়া, শাহজাদপুর, সদর, চৌহালী ও তাড়াশ উপজেলার সাড়ে ৪ লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। পানিবন্দি ও নদী ভাঙ্গন কবলিতরা বাঁধ ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আশ্রয় নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্ত হায়দার আলী বলেন, ভাঙ্গনে আমার বসতবাড়ি, আসবাবপত্র, গবাদি পশু, নগদ টাকা সব কিছু নদীতে ভেসে গেছে। ঘর থেকে কিছুই বের করতে পারিনি। এখন আমি নিঃস্ব। শেষ আশ্রয়টুকু নদীর পেটে। এখন বাঁধের উপর আশ্রয় নিয়েছি।
এবারের বন্যায় জেলার ৬৪ ইউনিয়নের ৮০৪টি গ্রাম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ৬৩৩টি বাড়ি সম্পূর্ণ এবং ৪১ হাজার ১৪৯ বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় ১৪ হাজার ১৩ হেক্টর ফসলী জমি, ১৮টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ৩৯.৬ কিলোমিটার বাঁধ, ৯টি ব্রীজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
সিরাজগঞ্জ ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আব্দুর রহিম বলেন, তিনদফা বন্যায় জেলার সাড়ে ৪লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে জিআর ক্যাশ ১৩ লাখ টাকা, জিআর চাল ৫০০ মেট্রিক টন, গো খাদ্যের জন্য ৬ লাখ, শিশু খাদ্য
কেনা বাবদ ৪ লাখ টাকা এবং শুকনো খাবার ৮ হাজার প্যাকেট বরাদ্দ পাওয়া গেছে। বন্যা কবলিত মানুষের মাঝে এগুলো বিতরণ করা হচ্ছে।