সিএমপিতে ‘অনুপ্রবেশ’, একদিন পর গ্রেফতার
২৭ জুলাই ২০২০ ২১:২০
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) একটি কর্মসূচিতে ‘অনুপ্রবেশে’র একদিনের মাথায় ছাত্রলীগ নেতাকে হত্যাচেষ্টার মামলায় গ্রেফতার হয়েছেন ‘আওয়ামী লীগ নেতা’ মো. সোলায়মান। আড়াই বছর আগেও ওই ছাত্রলীগ নেতাকে গুলি করে খুনের চেষ্টার মামলায় জেলে গিয়েছিলেন সোলায়মান।
সোমবার (২৭ জুলাই) বিকেলে চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশে পার্কভিউ হাসপাতাল থেকে সোলায়মানকে গ্রেফতার করে বাকলিয়া থানা পুলিশ।
মো. সোলায়মান (৪২) নগরীর পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্ডের কালামিয়া বাজার এলাকার মৃত মুন্সি মিয়া সওদাগরের ছেলে। বাকলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সদস্য পরিচয় দেওয়া সোলায়মান নগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।
রোববার (২৬ জুলাই) চট্টগ্রাম নগরীর দামপাড়া পুলিশ লাইন সড়কে এলইডি বাতি স্থাপনের একটি কর্মসূচি উদ্বোধন করেন মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীন ও সিএমপি কমিশনার মো. মাহাবুবর রহমান। ওই কর্মসূচিতে মেয়র এবং ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের পাশে দাঁড়ানো সোলায়মানের ছবিও দেখা যায় ফেসবুকে। পুলিশের কর্মসূচিতে ‘বিতর্কিত’ সোলায়মানের উপস্থিতি নিয়ে ব্রিবত হন পুলিশ কর্মকর্তারা।
সিএমপির কয়েকজন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, মেয়র অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছানোর সময় সোলায়মানও ঢুকে পড়েন। উপস্থিত পুলিশ কর্মকর্তারা প্রথমে তাকে সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা ভেবেছিলেন। পরে ফেসবুকে সমালোচনা শুরু হলে পুলিশ কর্মকর্তাদের টনক নড়ে।
২০১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর পূর্ব বাকলিয়া ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক মানিককে গুলি করে আহত করে দুর্বৃত্তরা। এই ঘটনায় তার ভাই জাহেদুল হক আরজু বাদী হয়ে বাকলিয়া থানায় মামলা দায়ের করেছিলেন। মামলায় চার আসামির মধ্যে সোলায়মান অন্যতম। এই মামলায় সোলায়মান গ্রেফতার করে কারাগারে ছিলেন।
বাকলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নেজাম উদ্দিন সারাবাংলাকে জানান, এনামুল হক থানায় অভিযোগ করেছেন— জামিনে বের হওয়ার পর সোলায়মান মানিকের ওপর প্রতিশোধ নেওয়ার চেষ্টা করছিলেন। গত ২৪ জুলাই সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় মানিককে বাকলিয়ার কালামিয়া বাজার এলাকায় একটি খালি মাঠে একা পেয়ে তার গতিরোধ করে সোলায়মান ও তার পাঁচ-ছয় জন সহযোগী। কপালে পিস্তল ঠেকিয়ে তাকে হত্যার হুমকি দেয়। এরপর তাকে মারধর করে পকেট থেকে সাড়ে ৭ হাজার টাকা নিয়ে যায়।
এনামুলের দায়ের করা মামলার ভিত্তিতে সোলায়মানকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে জানান ওসি নেজাম।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানিয়েছেন, সোলায়মানের বিরুদ্ধে কর্ণফুলী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনসহ বিভিন্ন সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ আছে। সাবেক এক মন্ত্রীর নাম ভাঙিয়ে নিজেকে একসময় যুবলীগ নেতা হিসেবে পরিচয় দিতেন। পরবর্তী সময়ে মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে নিজেকে পরিচিত করেন। তিন বছর আগে বাকলিয়া থানা আওয়ামী লীগের সদস্য হিসেবে নিজের পরিচয় দিতে শুরু করেন।