বসেছে পশুর হাট, বিক্রি নিয়ে ব্যাপারীদের শঙ্কা
২৭ জুলাই ২০২০ ২৩:১০
ঢাকা: রাজধানীর দু’টি স্থায়ী ও ১৬টি অস্থায়ী হাটে শুরু হয়েছে কোরবানির পশু বিক্রি। তবে হাটে ক্রেতা সমাগম তেমন ছিল না। যারা এসেছেন, তারাও দামদর শুনেই ফিরতি পথ ধরেছেন। প্রথম দিনে বিক্রির পরিমাণ ছিল সামান্যই। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গরু নিয়ে আসা ব্যাপারীরা বলছেন, ঈদের আর মাত্র চার দিন বাকি আছে। এখনো যদি ক্রেতাদের মধ্যে কোরবানির পশু কেনার প্রবণতা না থাকে, তাহলে হয়তো কাঙ্ক্ষিত পরিমাণ গরু বিক্রি করতে পারবেন না তারা।
অন্যদিকে ক্রেতারা বলছেন, ঈদের এখনো চার দিন বাকি আছে। তাই একটু সময় নিয়ে দেখেশুনে কোরবানির পশু কিনতে চান তারা। আপাতত তাই দাম যাচাই করছেন তারা। তাছাড়া হাটে এখনো পর্যাপ্ত গরু না আসায় একেবারেই পছন্দ না হলে আরও দুয়েকদিন পরেই কিনতে চান বলে জানান তারা।
সোমবার (২৭ জুলাই) রাজধানীর হাজারীবাগের ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজি মাঠসংলগ্ন উন্মুক্ত এলাকায় বসা অস্থায়ী ও গাবতলীর স্থায়ী পশুর হাটে সরেজমিনে ঘুরে এ চিত্র দেখা গেছে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, একই অবস্থা রাজধানীর অন্য হাটগুলোতেও।
ট্যানারী মোড়ের বাসিন্দা গার্মেন্টস ব্যবসায়ী রফিকুজ্জামান দোলনের সঙ্গে কথা হয় সারাবাংলার। গরু দেখতে হাজারীবাগ হাটে এসেছিলেন তিনি। বলেন, আজ প্রথম দিন বিক্রি শুরু হয়েছে। তাই এলাম। যদি একেবারেই দরদামে কোনোটা পছন্দ হয়ে যায়, তবে কিনে ফেলব। তা না হলে হয়তো আরও দুয়েকদিন বা দুয়েকটি হাট দেখব। এখনো তো সময় আছে।
একই কথা বললেন গাবতলী হাটে আসা কল্যাণপুরের বাসিন্দা আব্দুল আউয়্যাল। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, অনলাইনে গরু কিনতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সেখানে পছন্দ করতে পারছিলাম না। একদিকে দাম বেশি দেখাচ্ছে, অন্যদিকে গরু নিজ চোখে দেখা যাচ্ছে না। তাই হাটে এলাম। তবে হাটে এসেও মনে হচ্ছে এবার গরুর অনেক দাম। তাই আরও দুয়েক হাট ঘুরে তারপর কিনব।
দাম নিয়ে ক্রেতাদের এমন ‘আপত্তি’র সঙ্গে ভিন্নমত পোষণ করছেন চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা থেকে আসা ব্যাপারী জমির উদ্দিন। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, আমি ১২টা গরু আনছি গতকাল। এখনো একটাও বিক্রি হয়নি। দুয়েকজন দাম জিজ্ঞাসা করছে। কাস্টমার তেমন নেই। সামান্য লাভ পেলেই বিক্রি করে দিবো। কারণ এবার গরুর দাম অনেক কম। তাই খরচ উঠে সামান্য কিছু লাভ হলেই বিক্রি করে দিবো।
একই কথা বললেন হাজারীবাগ হাটে পিরোজপুর থেকে আসা ব্যাপারী সুমন মিয়া। তিনি বলেন, পরশু দিন ৭টা গরু নিয়ে হাটে আসলাম। কিন্তু এখনও বিক্রি করতে পারিনি একটাও। কাস্টমাররা আসছে। দাম জিজ্ঞেস করেই চলে যাচ্ছে। এভাবেই চলছে। কাস্টমাররা মনে করছে দাম বেশি। কিন্তু আমরা তো খামারে লালন-পালনের খরচসহ যাবতীয় খরচ হিসেব করেই সামান্য লাভ রেখেই বিক্রি করছি। তবুও কাস্টমারের দেখা নাই। শুয়ে বসেই দিন কাটছে এখন।
এদিকে, স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিত করতে হাটে ‘খাস’ আদায়ের জন্য সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে বসানো হয়েছে কাউন্টার। সেই সঙ্গে মাইকিংয়ের মাধ্যমে মাস্ক পরা এবং শিশু ও বয়স্কদের হাটে না নিয়ে আসার বিষয়ে সচেতনতামূলক প্রচারণা চালানো হচ্ছে।
এ বিষয়ে গাবতলী হাটের ইনচার্জ সজীব সারাবাংলাকে বলেন, অনেকেই স্বাস্থ্যবিধি মানতে চায় না। বিশেষ করে ক্রেতারা না মানলে তো আর জোরাজুরি করা যায় না। তবে আমরা সাধ্যমতো চেষ্টা করছি মানতে বাধ্য করতে। স্বাস্থ্যবিধি রক্ষায় এবার আমাদের হাসিল ঘর বাড়ানো হয়েছে। গত বছর সাতটা হাসিল ঘর ছিল। এবার ১২টা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে হাটে নিয়মিত জীবাণুনাশক ছিটানোর কাজে নিয়োজিত রয়েছে আমাদের কর্মীরা।
একই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে হাজারীবাগ হাটসহ অন্যা সব হাটেও। আর হাট কর্তৃপক্ষ ক্রেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে, তারা নিজেরাও যেন স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করেন।
কোরবানির পশুর হাট গরুর দাম গরুর হাট গাবতলী হাট পশুর হাট বিক্রি নিয়ে শঙ্কা হাজারীবাগ হাট