বেঁধে দেওয়া সময়ে বোনাস হয়নি অধিকাংশ কারখানায়
২৭ জুলাই ২০২০ ২৩:৫২
ঢাকা: সরকারের বেঁধে দেওয়া সময়ে শ্রমিকদের বোনাস পরিশোধ করেনি পোশাক খাতসহ বিভিন্ন খাতের অধিকাংশ কারখানা। এখন পর্যন্ত পোশাক খাতের ২০ শতাংশেরও কম কারখানায় বোনাস পরিশোধ করা হয়ছে বলে শিল্প পুলিশের তথ্য বলছে। তবে পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ বলছে, ৭৪ শতাংশ কারখানায় বোনাস পরিশোধ করা হয়েছে। আর বোনাস পরিশোধের পরিসংখ্যান স্পষ্ট করছে না আরেক সংগঠন বিকেএমইএ। তবে শিল্প পুলিশ বলছে, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও বিটিএমএ’র সদস্যভুক্ত ৩ হাজার ৩৭২টি কারখানার মধ্যে ৬৬১টি কারখানায় বোনাস দেওয়া হয়েছে। এখনও বোনাস দেওয়া হয়নি ২ হাজার ৭১১ টি কারখানায়। এছাড়া পোশাক কারখানাসহ বিভিন্ন খাতের ৭ হাজার ৬০২টি কারখানার মধ্যে বোনাস পরিশোধ করা হয়েছে ১ হাজার ৫৮৮ টির। এখনও বোনাস পরিশোধ করা হয়নি ৬ হাজার ১৪টি কারখানায়।
গত ২০ জুলাই এক বৈঠকে শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ান জানিয়েছিলেন, পোশাক শ্রমিকদের ঈদ বোনাস ২৭ জুলাই এবং চলতি মাসের বেতনের অর্ধেক ৩০ তারিখের মধ্যে মালিকরা পরিশোধ করবেন। অন্য সকল খাতের শ্রমিকদের চলতি মাসের বেতন এবং ঈদ বোনাস ২৫ জুলাইয়ের মধ্যে পরিশোধ করবেন। মালিক, শ্রমিক ও সরকারের ত্রিপক্ষীয় ওই বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত হয়েছিল। তবে বেঁধে দেওয়া এই সময়ে বোনাস পরিশোধ করেনি বেশিরভাগ কারখানা। চলতি মাসের বেতন নিয়ে এখনও কারও কোনো বক্তব্য নেই।
সোমবার (২৭ জুলাই) পোশাক মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ বোনাস পরিশোধের একটি তথ্য প্রকাশ করেছে। তাদের তথ্যমতে, বিজিএমইএ’র সদস্যভুক্ত ১ হাজার ৮৭৪ টি কারখানার মধ্যে ১ হাজার ৩৭৮ টি কারখানায় ঈদের বোনাস হয়েছে। ৭৪ শতাংশ কারখানা ২৭ জুলাইয়ের মধ্যে বোনাস দিয়েছে। এখনও বোনাস দেয়নি ৪৯৬টি কারখানা; অর্থাৎ ২৬ শতাংশ কারখানায় এখনও বোনাস হয়নি।
এদিকে শিল্প পুলিশের ২৭ জুলাইয়ের তথ্য মতে, পোশাক কারখানাসহ বিভিন্ন খাতের ৭ হাজার ৬০২ টি কারখানার মধ্যে বোনাস পরিশোধ করা হয়েছে ১ হাজার ৫৮৮ টির। এখনও বোনাস পরিশোধ করা হয়নি ৬ হাজার ১৪টি কারখানায়। বিজিএমইএ’র ১ হাজার ৮৮২টি কারখানার মধ্যে বোনাস পরিশোধ হয়েছে মাত্র ৪৪৩ টির। বোনাস পরিশোধ করা হয়নি এমন কারখানার সংখ্যা ১ হাজার ৪৩৯টি। বিকেএমইএ’র ১ হাজার ১০১টি কারখানার মধ্যে বোনাস পরিশোধ করেছে ১৩৪টি। আর এখনও বোনাস দেয়নি ৯৬৭টি কারখানা। বিটিএমএ’র ৩৮৯টি কারখানার মধ্যে ৮৪ টি কারখানায় বোনাস হয়েছে। এখনও বোনাস হয়নি ৩০৫টি কারখানার। বেপজার অভ্যন্তরের কারখানা ও অন্যান্য খাতের কারখানাগুলোর অবস্থা একই।
শিল্প পুলিশের তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, দেশের পোশাক খাতের (বিজিএমইএ, বিকেএমইএ ও বিটিএমএ) ৩ হাজার ৩৭২টি কারখানার মধ্যে ৬৬১টি কারখানায় বোনাস দেওয়া হয়েছে। এখন বোনাস দেওয়া হয়নি ২ হাজার ৭১১ টি কারখানায়। অর্থাৎ ১৯ দশমিক ৬০ শতাংশ কারখানায় বোনাস হয়েছে। ৮০ ভাগের বেশি কারখানায় এখনও বোনাস হয়নি।
বোনাস পরিশোধ নিয়ে শিল্প পুলিশ ও বিজিএমইএ’র তথ্যের ফারাক প্রসঙ্গে পোশাক মালিকদের সংগঠনটির দাবি, প্রতিটি কারখানা থেকেই তারা তথ্য সংগ্রহ করেছেন। এক সপ্তাহ আগে থেকেই কারখানাগুলোতে বোনাস পরিশোধ শুরু হয়েছে। আর বিজিএমই যে তথ্য প্রকাশ করেছে তাতে কোনো ভুল নেই।
জানতে চাইলে বিকেএমইএ’র প্রথম সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের সদস্যভুক্ত কতগুলো কারখানায় বোনাস হয়েছে এখনও তা বলা যাচ্ছে না। তবে কোনো কারখানায় বেতন-বোনাস নিয়ে শ্রমিকদের মধ্যে অসন্তোষ দেখা দেয়নি। আমরা মালিকদের বলেছি, শ্রমিক-মালিক সমতার ভিত্তিতে বেতন ও বোনাস পরিশোধ করতে। আমাদের পক্ষ থেকে কোনো মালিকে সময় বেঁধে দেওয়া হয়নি।
পোশাক খাত বিকেএমইএ বিজিএমইএ বিটিএমএ বেতন বেঁধে দেওয়া সময় বোনাস