Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অভ্যন্তরীণ রুটে ঈদের আগেও ‘যাত্রীহীন’ এয়ারলাইন্সগুলো


২৮ জুলাই ২০২০ ১০:৩২

ঢাকা: যেকোনো ঈদে দেশের অভ্যন্তরীণ রুটগুলোতে আকাশপথের টিকিট মানেই যেন সোনার হরিণ। এই টিকিট কিনতে যাত্রীদের ঘণ্টার পর ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতেও দেখা গেছে। যাত্রীদের মুখে ভোগান্তির কথা গণমাধ্যমে ফলাও করে প্রচারও করা হয়ে থাকে। এসব খবরে বলা হয়, বেশিরভাগ সময়ই ‘ঈদের টিকিট’ নাকি বিক্রি হয়ে যায় তিন মাস আগেই!

আর সবকিছুর মতো করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ বদলে দিয়েছে এই চিত্র। সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রেক্ষাপটে হাজির হয়েছে এবারের ঈদুল আজহা। আর সেই প্রেক্ষাপটের কারণেই বিমানের টিকিট কিনতে তেমন তোড়জোড় নেই যাত্রীদের মধ্যে।

বিজ্ঞাপন

এয়ারলাইন্সগুলো বলছে, অন্যান্যবার ঈদের আগে যাত্রীদের ঘরমুখো হওয়ার যে চাপ দেখা যেত, এবার তার ছিটেফোঁটাও নেই। অথচ ঈদুল আজহার বাকি আর মাত্র চার দিন। ফলে ঈদ সামনে রেখে কোনো এয়ারলাইন্সকেই অভ্যন্তরীণ রুটে বাড়তি ফ্লাইট যোগ করতে হয়নি। বাড়তি ফ্লাইট যুক্ত করবে কী, এয়ারলাইন্সগুলো রীতিমতো যাত্রীহীনতায় ভুগছে বলে জানাচ্ছে!

অভ্যন্তরীণ রুটে বিমান চলাচল নিয়ে কথা হয় বেসরকারি এয়ারলাইন্স নভোএয়ারের সিনিয়র ম্যানেজার (সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং) এ কে এম মাহফুজুল আলমের সঙ্গে। তিনি সারাবাংলাকে বলেন, কোরবানির ঈদের আর বেশি দিন বাকি নেই। এবার আমাদের যাত্রীর চাপ তেমন নেই বললেই চলে। অন্যান্য বছর ঈদের আগে অভ্যন্তরীণ সব রুটেই বাড়তি ফ্লাইট দিতে হতো। এবার তার প্রয়োজন হচ্ছে না। কারণ পর্যাপ্ত যাত্রীই নেই।

মাহফুজুল আলম জানান, ঢাকা-কক্সবাজার ছাড়া অভ্যন্তরীণ সব রুটে ফ্লাইট চলছে তাদের। এর মধ্যে প্রতিদিন ঢাকা থেকে চট্টগ্রামে চারটি, সিলেটে চারটি, সৈয়দপুরে চারটি, রাজশাহীতে দুইটি, যশোরে দুইটি ও বরিশালে দুইটি ফ্লাইট চলছে।

বিজ্ঞাপন

ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্সেও কক্সবাজার ছাড়া দেশের বাকি সব রুটে ফ্লাইট চলছে। এর মধ্যে ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে পাঁচটি, ঢাকা-সিলেট রুটে দুইটি, ঢাকা-সৈয়দপুর রুটে চারটি, ঢাকা-রাজশাহী রুটে দুইটি, ঢাকা-যশোর রুটে চারটি ও ঢাকা-বরিশাল রুটে দুইটি বিমান চলছে।

বেসরকারি এয়ারলাইন্সটির সিইও সিকদার মেজবাহ উদ্দীন আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ঈদের আগে যাত্রীদের যেমন চাপ থাকে, তেমন কোনো চাপই নেই। তাই বাড়তি ফ্লাইট দেওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। আমরা বলতে গেলে ভালো নেই। করোনাভাইরাসের কারণে যাত্রীদের মধ্যে এক ধরনের ভীতি কাজ করছে। ফলে পর্যাপ্ত যাত্রীই পাচ্ছি না।

বেসরকারি দুই এয়ারলাইন্সের তুলনাতেও অনেক বেশি পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ বিমান। যাত্রী স্বল্পতার কারণ দেখিয়ে অভ্যন্তরীণ মাত্র তিনটি রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করছে রাষ্ট্রায়ত্ত এয়ারলাইন্সটি। বিমানের সিইও ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোকাব্বির হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, স্বাভাবিক সময়ে আমরা যে যাত্রী পেয়ে থাকি, এখন যাত্রীর পরিমাণ তার চেয়েও কম। করোনা বিমান খাতের অনেক ক্ষতি করে দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মেনে ফ্লাইট পরিচালনা করা হচ্ছে। ফলে প্রতিটি ফ্লাইটে যাত্রী সংখ্যা স্বাভাবিকের তুলনায় কম রাখতে হচ্ছে। আমাদের বর্তমানে ঢাকা-সৈয়দপুর, ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে ফ্লাইট চলছে। বাকি রুটগুলোতে যাত্রী না থাকায় ফ্লাইট পরিচালনা করতে পারছি না।

এদিকে, মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে করোনাভাইরাসের কারণে বন্ধ রয়েছে দেশের পর্যটন রাজধানীখ্যাত কক্সবাজার বিমানবন্দর। কিন্তু পর্যাপ্তসংখ্যক স্বাস্থ্যকর্মী না থাকায় বিমানবন্দরটিতে স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না, ফলে বিমানবন্দরটি চালুও করা যাচ্ছে না। বিষয়টি সমাধানে স্বাস্থ্য অধিদফতরকে সিভিল এভিয়েশনের পক্ষ থেকে বারবার তাগাদা দেওয়া হলেও কোনো সমাধান মিলছে না।

এ বিষয়ে সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মাশা‍র্ল মফিদুর রহমান সারাবাংলাকে বলেন, সোমবারও (২৭ জুলাই) আমি বিমান মন্ত্রণালয়ের সচিবকে কক্সবাজার বিমানবন্দর চালু করার বিষয়ে কথা বলেছি। এমনকি অন্য পন্থায় চালু করার বিষয়ে তাগিদ দিয়েছি। কিন্তু কোনো সমাধান হচ্ছে না। তবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। দেখা যাক কী হয়! ঈদের আগেও যদি চালু করা যায়, তাহলেও এয়ারলাইন্সগুলোর জন্য কিছুটা হলেও ভালো হতো। কারণ এই রুটে যাত্রীর সংখ্যা নেহায়েত কম নয়।

করোনাভাইরাসের কারণে মূলত মার্চ মাসের শেষ সপ্তাহ থেকেই দেশের অভ্যন্তরীণ সব রুটে ফ্লাইট চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়। দফায় দফায় বন্ধের মেয়াদ বাড়ানোর পর শেষ পর্যন্ত ১ জুন থেকে অভ্যন্তরীণ ফ্লাইট চলতে শুরু করে। তবে যাত্রী স্বল্পতার কারণে গত প্রায় দুই মাসে অনেক ফ্লাইটই বাতিল হয়েছে।

অভ্যন্তরীণ রুট ঈদ টিকিট

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর