কোরবানির আগেই মূলধন সংকটে জয়পুরহাটের চামড়া ব্যবসায়ীরা
৩০ জুলাই ২০২০ ২৩:৫৬
জয়পুরহাট: কোরবানির ঈদ সামনে রেখে উত্তরের সীমান্ত জেলা জয়পুরহাটের চামড়ার আড়তে নেই কোনো প্রস্তুতি। করোনার কারণে এমনিতেই লোকসান, তার ওপর ট্যানারি মালিকদের মোটা অঙ্কের টাকা বাকি দিয়ে নিঃস্ব হয়েছেন অনেক ব্যবসায়ী। প্রায় ৮ কোটি টাকা ঢাকার ব্যবসায়ীদের কাছে পাওনা থাকায় মূলধন সংকটে ভুগছেন স্থানীয় ব্যবসায়ীরা। এ অবস্থায় চামড়া শিল্পকে বাঁচাতে সরকারের সরাসরি হস্তক্ষেপ চেয়েছেন চামড়া মালিক সমিতি।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, ঈদকে ঘিরে জয়পুরহাটের আড়তগুলো থেকে প্রায় ১০০ কোটি টাকার পশুর চামড়া ঢাকায় সরবরাহ করা হয়। কিন্তু ঢঅকার ট্যানারি মালিকেরা গত কয়েক বছরের পাওনা টাকা এখনও পরিশোধ করতে পারেনি, ফলে নতুন চামড়া কিনতে পুঁজি সংকটে পড়েছেন তারা।
সরেজমিনে জানা যায়, পাঁচবিবি উপজেলার রেলগেট, আক্কেলপুর উপজেলার হাজিপাড়া, জয়পুরহাট শহরের আরাফাত নগর, আমতলী এলাকায় চামড়ার আড়তগুলোতে প্রতি বছরের মতো এবার নেই কোনো প্রস্তুতি। সেই সঙ্গে চামড়ার প্রধান কাঁচামাল লবণের দাম এবং শ্রমিকের মজুরি বেড়ে যাওয়ায় ব্যবসায়ীরা লোকসানের সম্মুখীন হচ্ছেন। এছাড়া ট্যানারি মালিকদের কাছে কোটি কোটি টাকা বকেয়া থাকায় চরম পুঁজি সংকটে রয়েছেন এখানকার ব্যবসায়ীরা।
জয়পুরহাটের চামড়া ব্যবসায়ী শাহিন আকতার জানান, কোরবানির ঈদ সামনে রেখে তারা আড়তগুলো প্রতি বছরের মতো এবার ধোঁয়ামোছা করছেন না তারা। গতবারের চামড়ার টাকা এখনো ট্যানারি মালিকদের কাছে পাওনা রয়েছে। চামড়ার বাজারে মন্দাভাব বিরাজ করায় কয়েক বছর ধরে তারা লাভের মুখ দেখতে পারেনি।
তিনি আরও বলেন, ‘একদিকে লোকসান, অন্যদিকে বকেয়া এভাবে তাদের মূলধন শেষ, ব্যাংক লোন পরিশোধ করতে না পারায় নতুন করে লোন দিচ্ছে না। ফলে আসন্ন ঈদে নতুন করে চামড়া কেনা মুশকিল হয়ে পড়বে। ট্যানারি মালিকেরা সবসময় সিন্ডিকেট দিয়ে চামড়া কিনে এবং দাম পরিশোধের বেলাতেও সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অল্প করে টাকা দেয় যা দিয়ে ব্যবসা চালাতে পারে না।’
কোরবানির আগেই পুঁজি সরবরাহ করে চামড়া শিল্পকে সচল রাখবে ট্যানারি মালিকেরা এমন আশা ব্যক্ত করে জয়পুরহাট জেলা চামড়া ব্যাবসায়ী গ্রুপের সভাপতি শামিম আহমেদ জানান, ‘দেশের অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি চামড়া শিল্পের প্রসারে কাঁচামাল লবণের দাম স্থিতিশীল রাখাসহ চামড়া পাচার রোধ। এছাড়া বকেয়া টাকা পরিশোধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিলে এ শিল্প টিকে থাকবে।’
এদিকে জয়পুরহাট-২০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল ফেরদৌস হাসান টিটো জানান, জয়পুরহাট-২০ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধীনে সীমান্ত এলাকা রয়েছে প্রায় সাড়ে ৪১ কিলোমিটার। এরমধ্যে ২২ কিলোমিটার এলাকা তারকাঁটায় ঘেরা, বাকি ১৮ কিলোমিটার সীমান্তে তারকাঁটা নেই। চোরাকারবারিরা মূলত এই জায়গাটিকেই তাদের পাচারের পথ হিসেবে ব্যবহার করে থাকে। তাই এই জায়গাগুলো সবসময় নজরদারির মধ্যে রাখা হয়।’ চামড়া পাচার রোধে সব ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।