পাটুরিয়া ঘাটে ২০ কিলোমিটার গাড়ির লাইন, দুর্ভোগে লাখো মানুষ
৩১ জুলাই ২০২০ ১৪:৫৫
মানিকগঞ্জ: ভয়াবহ যানজট দেখা দিয়েছে পাটুরিয়া ঘাটে। ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের প্রায় ২০ কিলোমিটার পথ ছাড়িয়ে গেছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ঈদে ঘরমুখো মানুষ। ঘণ্টার পর ঘণ্টা গাড়ির ভেতরেই চলে যাচ্ছে তাদের সময়। কোনোভাবেই যানজট সামাল দিত পারছে না ঘাট কর্তৃপক্ষ কিংবা প্রশাসনের সদস্যরা।
সরজমিন সকাল থেকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক ও ফেরি ঘাটে দেখা যায়, অচলাবস্থা। ঘাটে পৌঁছাতে পারছে না যানবাহনগুলো। মহাসড়কের রাস্তায় আটকে থাকছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। হাজার হাজার যানবাহনের লম্বা লাইন ও লাখো মানুষের ঈদ যাত্রায় নেমে এসেছে চরম ভোগান্তি। পাটুরিয়া ঘাট থেকে যানবাহনের লম্বা লাইন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ২০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করেছে।
ব্যাক্তিগত গাড়ি অর্থাৎ প্রাইভেটকার, মাইক্রোবাস আর মোটরসাইকেলের দখল করে আছে পাটুরিয়া ঘাট ও মহাসড়ক। গাবতলি থেকে ছেড়ে আসা লোকাল বাস রাস্তায় এলোমেলো বিচরণে যানজটের মাত্রা আরও বেড়েছে। এতে স্মরণকালের ভয়াবহ যানজটে পড়েছে এবারের ঈদ যাত্রা। ফলে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের লাখো মানুষ পড়েছেন ভোগান্তিতে।
পাটুরিয়া ঘাটে পৌঁছাতে না পেরে সকাল ৭টা থেকে ঘিওরের পুখুরিয়া বাসস্ট্যান্ডে গাড়ির ভেতর অবস্থান করছেন ফরিদপুরের সাহেব আলী। বললেন, ‘ব্যক্তিগত গাড়ি নিয়ে যাচ্ছি, কিন্ত ঘাটেই পৌঁছাতে পারছি না। বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে কি দুর্ভোগে ৫-৬ ঘণ্টা ধরে পড়ে আছি তা বোঝানো যাবে না।’
একই জায়গায় আটকে আছেন রাজবাড়ির আলেক মিয়া। তিনি ও তার পরিবারের ৫ সদস্য বাসের ভেতর আটকে আছেন ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা। জানালেন, ঘাটে যেতে এখনো প্রায় ১৫-১৬ কিলোমিটার পথ বাকি। গাড়িগুলোর কোনো ধরনের নিয়ম-নীতি মানছে না। যে যার মতো রাস্তায় এলোমেলো ভাবে চলাচল করছে। যার কারণে ভয়াবহ এই যানজটে লেগেছে।
এদিকে পাটুরিয়া ঘাটে ফেরি চলাচলেও অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে পদ্মায় তীব্র স্রোতের কারণে। ঘাটে এসেও ঘণ্টার পর ঘণ্টার দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের যাত্রীদের। ১৬টি ফেরির মধ্যে স্রোতের সাথে পাল্লা দিতে গিয়ে মাঝে মধ্যেই ২-৩টি ফেরি বিকল হয়ে পড়ছে। পদ্মায় তীব্র স্রোতের কারণে ফেরি চলাচলে বিড়ম্বনা দেখা দেওয়ায় মানুষের দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করেছে।
বিআইডাব্লিউটিসি আরিচা অঞ্চলের এজিএম খন্দকার তানভির হোসেন জানান, পদ্মা নদী উত্তাল থাকায় ফেরি চালাচলে মারাত্মক ব্যঘাত ঘটছে। স্রোতের সাথে পাল্লা দিয়ে ফেরিগুলো নদীতে চলাচল করতে প্রচণ্ড রকমের বেগ পেতে হচ্ছে। স্বাভাবিক সময়ে একটি ফেরি ৪০ মিনিটেই পাটুরিয়া থেকে দৌলতদিয়া ঘাটে পৌঁছাতে পারতো। কিন্ত কয়েক দিন ধরে পদ্মা উত্তাল থাকায় সময় লাগছে দ্বিগুণ। এছাড়া ফেরিগুলোকে নৌপথের উজানে প্রায় ৩ কিলোমিটার ঘুরে গন্তব্যে যেতে হচ্ছে। এতে ফেরির টিপ সংখ্যাও কমে গেছে। ফলে ঈদে ঘরমুখো যাত্রী ও যানবাহনের অতিরিক্ত চাপ পড়ছে।
তিনি আরও জানান, ১৬টি ফেরি সচল রাখা হলেও এবারের ঈদে যানবাহনের চাপ খুব বেশি। যে কারণে সামাল দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। ঘাট ছাড়িয়ে যানবাহনের লম্বা লাইন ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের বহুদূর চলে গেছে।