কোরবানির বর্জ্য সরাতে ২ সিটিতে প্রস্তুত সাড়ে ১৭ হাজার কর্মী
৩১ জুলাই ২০২০ ১৬:০৬
ঢাকা: ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রাজধানীর দুই সিটি করপোরেশন এলাকা থেকে কোরবানির বর্জ্য অপসারণে প্রস্তুত রয়েছে সাড়ে ১৭ হাজার পরিচ্ছন্নতাকর্মী। সেই সঙ্গে প্রস্তুত রয়েছে সাড়ে ৭ শ যানবাহন। এবছর করোনাভাইরাস পরিস্থিতিকে গুরুত্ব দিয়ে দ্রুত বর্জ্য অপসারণের জন্য নগরীতে ২৫৬টি নির্ধারিত স্থান চিহ্নিত করে দিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)।
এ বিষয়ে ডিএনসিসি মেয়র আতিকুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, ‘কোরবানি ঈদের দিন প্রায় ১০ হাজার টন বর্জ্য উৎপন্ন হবে। প্রতি বছরের মতো এ বছরও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এসব বর্জ্য অপসারণ করা হবে। হালাল উপায়ে পশু কোরবানির জন্য ২৫০ জন ইমাম ও ২৫০ জন মাংস প্রস্তুতকারীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। কোরবানির পশুর বর্জ্য সুষ্ঠুভাবে অপসারণে অতিরিক্ত জনবল ও যানবাহন বরাদ্দ রাখা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে ডিএনসিসির নিজস্ব, আউটসোর্সিং এবং প্রাইমারি ওয়েস্ট কালেকশন সার্ভিস প্রোভাইডার (পিডব্লিউসিএসপি) কর্মীসহ ১১ হাজার ৫০৮ জন পরিচ্ছন্নতা কর্মী এবং ডিএনসিসির সর্বস্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারী প্রস্তুত থাকবে। এ জন্য কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সকল ধরনের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এই ঈদে স্বাস্থ্য সম্মতভাবে কোরবানি পশু জবাই দেওয়ার জন্য ২৫৬টি স্থান নির্ধারণ করা হয়েছে। পশুর বর্জ্য ফেলতে বিশেষ ধরনের ব্যাগ দেওয়া হয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘বর্জ্য অপসারণে ভারী ও হালকা মিলে ৪৩০টি যানবাহন প্রস্তুত রাখা হয়েছে। ১১টি পানির গাড়ির মাধ্যমে স্যাভলন ও ব্লিচিং মিশ্রিত পানি ছিটিয়ে কোরবানির স্থান দূষণমুক্ত করা হবে। পরিবেশ সুরক্ষা ও দূষণমুক্ত রাখার লক্ষ্যে প্রায় ৫১ টন ব্লিচিং পাউডার ও ৫ লিটার ধারণক্ষমতা সম্পন্ন ৯৬০ ক্যান তরল জীবাণুনাশক ছিটানো হবে।’
অপরদিকে, ডিএসসিসি থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, কোরবানির পশুর হাট ও কোরবানির বর্জ্য সুষ্ঠু তদারকিতে নগর ভবনে একটি মনিটরিং কন্ট্রোল রুম স্থাপন করা হয়েছে। এতে ডিএসসিসির বিভাগীয় প্রধানগণ ছাড়াও কর্মকর্তা-কর্মচারীরা বিভিন্ন পরিক্রমায় দায়িত্ব পালন করবেন। একইসঙ্গে মাঠ পর্যায়ের বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম সচিত্র মনিটরিংয়ের জন্য কর্মকর্তা-কর্মচারী সহকারে আরেকটি টিম গঠন করা হয়েছে। যারা ৭৫টি ওয়ার্ডে সরেজমিনে সচিত্র বর্জ্য অপসারণ কার্যক্রম তদারকি করবেন। এছাড়া বর্জ্য অপসারণ সংক্রান্ত তথ্য জানাতে কন্ট্রোল রুমে হটলাইন চালু করা হয়েছে।
ডিএসসিসি আরও জানিয়েছে, কোরবানি ঈদের দিন প্রায় ৫ হাজার ৫০০ হাজার টন বর্জ্য উৎপন্ন হবে। বর্জ্য সংরক্ষণের জন্য ডিএসসিসি থেকে প্রায় ১ লাখ বিশেষ ধরনের ব্যাগ বিতরণ করা হয়েছে। ডিএসসিসির ৭৫টি ওয়ার্ডের ৭৫টি নির্দিষ্ট স্থানে পশু জবাই করা হবে। এজন্য জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে ১ লাখ লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। মাঠ পর্যায়ে ডিএসসিসির নিজস্ব, আউটসোর্সিং এবং প্রাইমারি ওয়েস্ট কালেকশন সার্ভিস প্রোভাইডার (পিডব্লিউসিএসপি) কর্মীসহ মোট ৬ হাজার জন পরিচ্ছন্নতা কর্মীও কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়োজিত থাকবে। প্রতিদিনের সৃষ্ট বর্জ্য পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে অপসারণ করা হবে। বর্জ্য অপসারণের জন্য ভারী ও হালকাসহ তিন শতাধিক যানবাহন প্রস্তুত রাখা হয়েছে।
এছাড়া ১২টি পানির গাড়ির মাধ্যমে স্যাভলন ও ব্লিচিং মিশ্রিত পানি ছিটিয়ে কোরবানির স্থান দূষণমুক্ত করা হবে। পরিবেশ সুরক্ষা ও দূষণমুক্ত রাখাতে ৪২ টন ব্লিচিং পাউডার ও ১৮০০ লিটার তরল জীবাণুনাশক ছিটানো হবে।
জানতে চাইলে ডিএসসিসি সচিব আকরামুজ্জামান সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের সব প্রস্তুতি শেষ করা হয়েছে। নগর ভবন থেকে সরাসরি মনিটরিংয়ের জন্য আমরা কট্রোল রুম চালু করেছি। প্রতিবছরের মতো এবছরও আমরা ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণ করবো।’
সারাবাংলা/এসএইচ/এমআই