শিমুলিয়া ঘাটে যাত্রী সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে পুলিশ-প্রশাসন
৩১ জুলাই ২০২০ ১৬:৫৪
মুন্সীগঞ্জ: ঘরমুখো মানুসের ভীড় বেড়েছে মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া ঘাটে। দেশের দক্ষিণাঞ্চলের ২১ জেলার যাত্রীদের ভীড় সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে জেলা প্রশাসন, পুলিশ, বিআইডব্লিউটিসি ও বিআইডব্লিউটিএ কতৃপক্ষ।
শুক্রবার (৩১ জুলাই) শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে তিনটি ফেরি ঘাট দিয়ে ১৬টি ফেরির মধ্যে ১০টি ফেরি দিয়ে পারাপার করছেন। ৩নং রো রো ফেরি ঘাটটি গত দুই দিন আগে পদ্মায় বিলীন হয়েছে। প্রবল স্রোতের কারণে ডাম্প বা ঠেলা ফেরি বন্ধ রেখেছে কর্তৃপক্ষ।
এছাড়া ৮৭টি লঞ্চ চলাচল করছে। লঞ্চ স্টাফরা অতিরিক্ত যাত্রী বোঝাই করে প্রবল স্রোতে পদ্মা পাড়ি দিচ্ছেন। সরকারের দেওয়া নিয়ম ভেঙে যেমন লঞ্চ চলছে, তেমনি স্পিড বোটগুলোও নিয়ম না মেনে অতিরিক্তি যাত্রী নিয়ে ছুটছেন গন্তব্যে। লঞ্চ ও স্পিড বোটে যাত্রীরা গাদাগাদি করে যাচ্ছেন, নেই সামাজিক দূরত্ব, আবার কিছু যাত্রী মাস্ক ব্যবহার করছেন না।
বরগুনাগামী সুগন্ধা পরিবহনের সুপার ভাইজার রবিউল জানান, গতকাল সন্ধ্যা ৭টায় শিমুলিয়া ঘাটে এসে ফেরির অপেক্ষায় রয়েছন, বিকেল ৩টা পর্যন্ত ফেরিতে উঠতে পারেননি তারা। অসংখ্য মোটরসাইকেলের ভিড়ে ফেরি এলেও তা মুহূর্তেই ভরে যাচ্ছে বলেও জানান তিনি।
বাস যাত্রী সেকেন্দার আলী জানান, দুই দিন ধরে ঘাটে বসে আছেন। রাত বাসেই কেটেছে। কখন নাগাদ নদী পার হতে পারবেন জানেন না। ঈদ বাসেও কাটতে পারে বলেও তিনি মনে করেন।
ভোর ৬টায় বাইক নিয়ে শিমুলিয়া ঘাটে এসেছেন শরীয়তপুরের রাসেল। ৩টার দিকে একটা ফেরিতে উঠতে পেরে বেজায় খুশি। স্বস্থির নিশ্বাস ছেড়ে রাসেল বলেন, ‘ভাই নদী পার হতে পারলেই হলো।’ এই জীবনে মনে থাকতে আর কখনো ঈদের সময় বাড়ি আসবে না বলেও সে জানায়। কাঠ ফাঁটা রোদে পুড়ে সকালে একজন অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেছিলেন বলেও জানায় রাসেল।
মাওয়া বিআইডব্লিউটিএ সহকারী পরিচালক শাহাদাত হোসেন জানান, প্রবল স্রোতের কারণে সকাল থেকে যে লঞ্চগুলো কাঁঠালবাড়ির দিকে রওনা করে তাদের অনেক সময় লেগেছে। শিমুলিয়া ঘাটে দুপুর থেকে লঞ্চ কম আছে। আসার সঙ্গে সঙ্গে লোড হয়ে যাচ্ছে। আমাদের মতো চেষ্টা করে যাচ্ছি যাতে যাত্রী নিরাপদে নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরতে পারেন।
শিমুলিয়া স্পিড বোট ইজারাদার স্বাধীন আহমেদ জানান, তারা ১৫০ টাকা আগের ভাড়াই নিচ্ছেন। ২২ সিটের বোটে ১৭ জন, ২৬ সিটের বোটে ১৯ জন, এভাবে পার করা হচ্ছে।
শিমুলিয়া বিআইডব্লিউটিসি সহব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ফয়সাল জানান, স্রোতের কারণে ১৬টি ফেরির মধ্যে ১০টি চালু রাখা হয়েছে। ৩ নং ফেরি ঘাট ভেঙে যাওয়ায় কিছুটা সমস্য হচ্ছে। মোটর বাইক ও ছোট গাড়ির চাপ বেশি আছে।
মাওয়া ট্রাফিক ইনচার্জ পরিদর্শক মো. হিলাল উদ্দিন জানান, আজ গাড়ি ও যাত্রীচাপ বেড়েছে। যাত্রীদের নির্বিঘ্নে বাড়ি ফিরতে যাতে কোনো অসুবিধা না হয় সেদিক খেয়াল রেখেই বিভিন্ন দফতর কাজ করছে। ঈদে এখন আর কোনো ভিআইপি নেই, সবাই সমান।