Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মাঠে নয় মসজিদে ঈদ জামাত, কোলাকুলি নয় এবারও


৩১ জুলাই ২০২০ ২০:০৩

ঢাকা: করোনা মহামারির কারণে ঈদুল ফিতরের মতো এবারও ঈদের জামাত মাঠে অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে মসজিদে ঈদুল আজহার নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ধর্ম মন্ত্রণালয়ের ওই নির্দেশনার পর দেশের কোনো ঈদগা মাঠেই বরাবরের মতো সাজসজ্জা বা ঈদ জামাতের প্রস্তুতি নেই। অর্থাৎ করোনা পরিস্থিতি ভিন্ন আবহে উদযাপিত হবে ঈদুল অজহা।

করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রোধে ঈদের জামাত ও পশু কোরবানি নিয়ে ধর্ম মন্ত্রণালয় সম্প্রতি ১৩ দফা নির্দেশনা দিয়েছে। নির্দেশনায় জানানো হয়েছে, ঈদগাহ ময়দান, খোলা মাঠ বা উন্মুক্ত স্থানে নয় মসজিদেই এবার ঈদুল আজহার নামাজ পড়তে হবে। পাশাপাশি একে অপরের সঙ্গে কোলাকুলি ও হাত মেলানো থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

গত ঈদুল ফিতরের নামাজের জামাতও মসজিদে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এবারও ঈদুল আজহার নামাজ আদায় সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে গত ১২ জুলাই দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেম-ওলামা এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও বিভাগের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভা করেন। ওই সভা থেকেই ১৩ দফা নির্দেশনার সিদ্ধান্ত আসে।

নির্দেশনাগুলো হল- করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে মুসলিমদের জীবন ঝুঁকি বিবেচনা করে এ বছর ঈদুল আজহার জামাত ঈদগাহ বা খোলা জায়গার পরিবর্তে কাছের মসজিদে আদায় করতে হবে। প্রয়াজনে একই মসজিদে একাধিক জামাত আদায় করা যাবে। জামাতের সময় মসজিদে কার্পেট বিছানো যাবে না। নামাজের পূর্বে মসজিদ জীবাণুনাশক দ্বারা পরিষ্কার করতে হবে। মুসল্লিরা প্রত্যেকে নিজ নিজ দায়িত্বে জায়নামাজ নিয়ে আসবেন। প্রত্যেককে বাসা থেকে অজু করে মসজিদে আসতে হবে এবং অজু করার সময় কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে। মসজিদে অজুর স্থানে সাবান বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার রাখতে হবে। মসজিদের প্রবেশদ্বারে হ্যান্ড স্যানিটাইজার বা হাত ধোয়ার ব্যবস্থাসহ সাবান-পানি রাখতে হবে। জামাতে আগত মুসল্লিদের অবশ্যই মাস্ক পরে আসতে হবে। মসজিদে সংরক্ষিত জায়নামাজ ও টুপি ব্যবহার করা যাবে না।

আরও নির্দেশনাগুলো হল- নামাজ আদায়ের সময় কাতারে দাঁড়ানোর ক্ষেত্রে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে দাঁড়াতে হবে এবং এক কাতার হতে আর এক কাতার ফাঁকা রেখে পরবর্তী কাতার করতে হবে। শিশু, বৃদ্ধ, যেকোনো ধরনের অসুস্থ ব্যক্তি এবং অসুস্থদের সেবায় নিয়োজিত ব্যক্তি জামাতে অংশগ্রহণ করবেন না। স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ, স্থানীয় প্রশাসন এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর নির্দেশনা অবশ্যই অনুসরণ করতে হবে। জামাত শেষে কোলাকুলি এবং পরস্পর হাত মেলানো থেকে বিরত থাকতে হবে। নামাজ শেষে খতিব ও ইমামরা মহান রাব্বুল আলামিনের দরবারে দোয়া চাইবেন। খতিব, ইমাম, মসজিদ পরিচালনা কমিটি ও স্থানীয় প্রশাসনকে বিষয়গুলো বাস্তবায়ন নিশ্চিত করতে হবে। কোরবানির ক্ষেত্রে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা যথাযথভাবে পালন করতে হবে। স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, জনপ্রতিনিধি, ইসলামিক ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারী এবং সংশ্লিষ্ট মসজিদের পরিচালনা কমিটি এসব নির্দেশনা বাস্তবায়ন করবেন।

এদিকে কেন্দ্রীয়ভাবে বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে প্রথম ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে সকাল ৭টায়। মসজিদটিতে পর্যায়ক্রমে ৬টি ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে। বায়তুল মুকাররমে সর্বশেষ ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে ১১টা ১০ মিনিটে। রাজধানী ঢাকার বেশিরভাগ মসজিদে সকাল ৭টা থেকে ১০টার মধ্যেই ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে বায়তুল মুকররম মসজিদের ঈদ জামাতের সময়সূচি প্রকাশ করা হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, সারাদেশে সামাজিক দূরত্ব ও স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে ঈদুল আজহা উদযাপিত হবে। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদে পর্যায়ক্রমে ছয়টি ঈদের নামাজের জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

ইসলামিক ফাউন্ডেশন জানিয়েছে, বায়তুল মুকাররম মসজিদে সকাল ৭টায় প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে। এতে ইমামতি করবেন বায়তুল মুকাররম জাতীয় মসজিদের সিনিয়র পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মাওলানা মো. মিজানুর রহমান। মুকাব্বির হিসেবে থাকবেন মসজিদটির মুয়াজ্জিন হাফেজ ক্বারী কাজী মাসুদুর রহমান।

দ্বিতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে ৭টা ৫০ মিনিটে। এতে ইমামতি করবেন মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মুফতি মুহিব্বুল্লাহি বাকী নাদভী আর মুকাব্বির হিসেবে থাকবেন ময়াজ্জিন হাফেজ কারী হাবিবুর রহমান মেশকাত।

তৃতীয় জামাত অনুষ্ঠিত হবে ৮টা ৪৫ মিনিটে। এতে ইমামতি করবেন পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা এহসানুল হক আর মুকাব্বির হিসেবে থাকবেন মুয়াজ্জিন মাওলানা ইসহাক।

চতুর্থ জামাত অনুষ্ঠিত হবে ৯টা ৩৫ মিনিটে। এতে ইমামতি করবেন মসজিদের পেশ ইমাম হাফেজ মাওলানা মহিউদ্দিন কাসেম ও মুকাব্বির হিসেবে থাকবেন বায়তুল মুকাররমের চীফ খাদেম মো. শহীদুল্লাহ।

পঞ্চম জামাত অনুষ্ঠিত হবে সাড়ে ১০টায়। এতে ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মুহাদ্দিস হাফেজ মাওলানা ওয়ালিয়ূর রহমান খান ও মুকাব্বির হিসেবে থাকবে বায়তুল মুকররম মসজিদের খাদেম হাফেজ মো. আব্দুল মান্নান।

ষষ্ঠ ও শেষ জামাত অনুষ্ঠিত হবে ১১টা ১০ মিনিটে। এতে ইমামতি করবেন ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সাবেক উপ-পরিচালক মাওলানা মুহাম্মদ আব্দুর রব মিয়া ও মুকাব্বির হিসেবে থাকবেন মসজিদের খাদেম মো. আব্দুর রাজ্জাক।

ইসলামিক ফাউন্ডেশনের সহকারী জনসংযোগ কর্মকর্তা শায়লা শারমীন সারাবাংলাকে বলেছেন, ‘ঈদুল ফিতরের মতো এবারও ঈদুল আজহায় ঈদগা মাঠে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে না। সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী মসজিদে ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হবে।

ঈদ জামাত টপ নিউজ মসজিদ মাঠ


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর