Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৭ বছরে গরুর চামড়ার দাম অর্ধেকের নিচে, খাসি ৪ ভাগের একভাগ


২ আগস্ট ২০২০ ০৮:৩৬

ঢাকা: চামড়াজাত পণ্যের দাম বাড়লেও প্রতিবছরই কমছে কোরবানির পশুর চামড়ার দাম। ব্যবসায়ীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে প্রতিবছর কোরাবনির ঈদের আগে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় চামড়া দাম কমিয়ে পুনর্নির্ধারণ করে দেয়। আর এভাবেই গত সাত বছরে বছরে গরুর চামড়ার দাম কমে অর্ধেকের নিচে ও খাসি চারভাগের একভাগে নেমেছে। এতে করে ট্যানারি মালিকরা লাভবান হলেও বঞ্চিত হচ্ছেন মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ী ও কোরবানি দেওয়া সাধারণ মানুষ।

বিজ্ঞাপন

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, ২০১৩ সালে লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর কাঁচা চামড়ার মূল্য ছিল ৮৫ থেকে ৯০ টাকা। ওই সময়ে লবণযুক্ত ছাগলের চামড়ার বিক্রি হয়েছে ৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। মাত্র সাত বছরের ব্যবধানে ২০২০ সালে লবণযুক্ত প্রতিবর্গফুট গরুর কাঁচা চামড়ার দাম মাত্র ৩৫ থেকে ৪০ টাকায় এবং প্রতি বর্গফুট ছাগলের চামড়ার ১৩ থেকে ১৫ টাকায় নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। গত সাত বছরে গরুর চামড়া দাম কমেছে ৫৮ দশমিক ৮২ শতাংশ। একই সময়ে ছাগলের চামড়ার দাম কমেছে ৭৪ শতাংশ। অর্থাৎ ২০১৩ সালে ছাগলের চামড়া যে দামে পাওয়া যেত, ২০২০ সালে এসে গরুর চামড়া তার চেয়েও কম দামে পাওয়া যাচ্ছে।

বিজ্ঞাপন

সূত্র জানায়, ২০১৩ সালে লবণযুক্ত প্রতি বর্গফুট গরুর কাঁচা চামড়ার দাম ছিল ৮৫ থেকে ৯০ টাকা এবং ছাগলের চামড়া ৫০ থেকে ৫৫ টাকা। ২০১৪ সালে কমিয়ে গরুর চামড়া ৭০ থেকে ৭৫ টাকা এবং ছাগলের চামড়া ৪০ থেকে ৪৫ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। অন্যদিকে ২০১৫ ও ২০১৬ সালে পরপর দুই বছর প্রতি বর্গফুট গরুর কাঁচা চামড়া ৫০ থেকে ৫৫ টাকা এবং ছাগলের চামড়া ২০ থেকে ২৫ টাকায় নির্ধারণ করে দেওয়া ছিল। তবে ২০১৭, ২০১৮ ও ২০১৯ সালে টানা তিনবছর প্রতি বর্গফুট গরু চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করা হয় ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। তবে ২০১৭ সালে ছাগলের প্রতিবর্গফুট চামড়া ২০ থেকে ২২ টাকায় নির্ধারণ করা হলেও ২০১৮ ও ২০১৯ সালে তা আরও কমিয়ে ১৮ থেকে ২০ টাকা করা হয়। সর্বশেষ গত ২৬ জুলাই ২০২০ সালের কোরবানি ঈদের জন্য  প্রতিবর্গফুট গরুর চামড়া ৩৫ থেকে ৪০ টাকা এবং ছাগলের ১৩ থেকে ১৫ টাকা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়েছে।

এ ব্যাপারে বাংলাদেশ ট্যানারি অ্যাসোসিয়েশনের (বিটিএ) সভাপতি শাহীন আহমেদ বলেন, ‘আন্তর্জাতিকবাজারে চামড়ার চাহিদা আর আগের মতো নেই। পাশাপাশি ট্যানারিগুলোতে আগের বছরের চামড়া বিশাল অংশ অবিক্রিত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। এসব কারণেও চামড়ার দাম কমে যাচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, চামড়াজাত পণ্যের উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় দেশে-বিদেশে চামড়া থেকে উৎপন্ন বিভিন্ন পণ্যের দাম কমছে।’ কাঁচা চামড়া রফতানি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘কাঁচা চামড়া রফতানি করা সহজ নয়। কারণ এটা একটা প্রক্রিয়ার বিষয়। রফতানি করতে হলেও কিছু প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে।’

অন্যদিকে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি চামড়ার দাম কমে যাওয়া প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক বাজারে কাঁচা চামড়ার মূল্য এবং সামগ্রিক প্রেক্ষাপট বিবেচনা করে চামড়ার দাম আগের বছরের তুলনায় কিছুটা কমে নির্ধারণ করা হয়েছে।’

তিনি বলেন, ‘চামড়ার আন্তর্জাতিক বাজার দর, আন্তর্জাতিক বাজারে বাংলাদেশি চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যের চাহিদা, কোভিড-১৯ পরিস্থিতিতে চাহিদা, বাংলাদেশের চামড়ার গুণগত মান, স্থানীয় চাহিদা ও মজুদ পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবারের চামড়ার দাম কমানো হয়েছে।’

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘চামড়ার নির্ধারিত মূল্য নিশ্চিত করে যথাযথ প্রক্রিয়ায় তা সংগ্রহ ও যথাসময়ে লবণ লাগাতে হবে।’ চামড়া নিয়ে এবার কোনো ধরনের সমস্যা হবে না বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘প্রয়োজনে এবার কাঁচা চামড়া ও ওয়েস্ট ব্লু চামড়া রফতানি করা হবে।’

এর আগে গত ২৬ শে জুলাই ব্যবসায়ীদের সঙ্গে এক বৈঠকে কোবানির চামড়ার মূল্য নির্ধারণ করে দেয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এতে বলা হয়, এ বছর লবণযুক্ত গরুর কাঁচা চামড়ার মূল্য ঢাকায় প্রতিবর্গফুট ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, ঢাকার বাইরে ২৮ থেকে ৩২ টাকা। অন্যদিকে ছাগলের চামড়া প্রতি বর্গফুট সারাদেশে ১৩ থেকে ১৫ টাকা এবং বকরির সারাদেশে ১০ থেকে ১২ টাকা মূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে।

৭ বছর অর্ধেক কোরবানির পশু গরু চামড়া ছাগল দাম বিটিএ লবণযুক্ত

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর