বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে ব্রহ্মপুত্র অববাহিকায়
৪ আগস্ট ২০২০ ০১:৪৫
শেষ ২৪ ঘণ্টায় ব্রহ্মপুত্র অববাহিকার নদীর তীরবর্তী এলাকায় বড়-বড় নদীগুলোর পানির কমে যাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করেছে। যদিও বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, পাঁচটি উত্তরাঞ্চলীয় জেলার আটটি পয়েন্টে এখনও প্রধান নদনদীর পানির স্তর বিপৎসীমার (ডিএম) ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
সোমবার (৩ আগস্ট) সকালের চিত্র ধরে পাউবো সূত্র এ তথ্য জানিয়েছেন। তাদের তথ্য বলছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ধরলার পানি কুড়িগ্রাম ও ঘাগটে ৫ সেন্টিমিটার, গাইবান্ধায় ও ব্রহ্মপুত্রের নুনখাওয়ায় ১৩ সেন্টিমিটার এবং চিলমারী পয়েন্টে ১৯ সেন্টিমিটার কমেছে।
তবে সোমবার সকাল ৯টা পর্যন্ত যমুনার পানির স্তর ফুলছড়িতে ১ সেন্টিমিটার ও বাহাদুরাবাদে ৩ সেন্টিমিটার, সারিয়াকান্দিতে ১ সেন্টিমিটার ও কাজিপুরে ২ সেন্টিমিটার এবং সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে ১ সেন্টিমিটার বেড়েছে।
পানির স্তর হ্রাস-বৃদ্ধির ফলে সোমবার সকালে ব্রহ্মপুত্রের পানি সকাল ৯টায় চিলমারীতে বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার এবং কুড়িগ্রামের ধরলা ও গাইবান্ধার ঘাগোটে বিপৎসীমার ৩৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। একই সময়ে যমুনা ফুলছড়িতে ৪৭ সেন্টিমিটার, বাহাদুরাবাদে ৫৩ সেন্টিমিটার, সারিয়াকান্দিতে ৬০ সেন্টিমিটার, কাজিপুরে ৩০ সেন্টিমিটার ও সিরাজগঞ্জ পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩৯ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল ব্রহ্মপুত্রের পানি।
পাউবো কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুল ইসলাম জানান, যেসব জেলায় থেকে বন্যার পরিস্থিতি উন্নতির দিকে, সেসব অঞ্চলে নদী ভাঙন প্রতিরোধ কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে। আর পাউবো গাইবান্ধা বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোখলেছুর রহমান জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি দৃশ্যমান। কারণ জেলার সব বন্যা পর্যবেক্ষণ পয়েন্টে প্রধান নদ-নদীগুলোর পানির স্তর কমছে।
পাউবো রংপুর জোনের প্রধান প্রকৌশলী জ্যোতি প্রসাদ ঘোষ বলেন— কুড়িগ্রাম, লালমনিরহাট, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার বড় নদীগুলোর পাশাপাশি কিছু স্থানে বিক্ষিপ্তভাবে নদী ভাঙতে দেখা গেছে। ভাঙনের কবল থেকে নদীর তীর রক্ষায় বেশ কিছু পয়েন্টে কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এসব অঞ্চলের ভাঙন নিয়ন্ত্রণে আরও কয়েকটি ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্টে কাজ শুরু হবে।
এদিকে, বিভাগীয় কমিশনার (সার্বিক) মো. জাকির হোসেন বলেন, জেলা প্রশাসন রংপুর বিভাগের ক্ষতিগ্রস্ত জেলার বন্যাকবলিত মানুষের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ আরও জোরদার করেছে। একই তথ্য জানালেন জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তারাও।
কুড়িগ্রামের জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আবদুল হাই সরকার জানান, জেলার দ্বিতীয় দফায় বন্যায় ৬২ হাজার ৬৩০টি পরিবারের প্রায় আড়াই লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। বন্যা পরিস্থিতি এখনো অব্যাহত থাকায় ১৯০ টন চাল, ১৩ লাখ টাকা, ৮ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার, বাচ্চাদের খাবারের জন্য ৬ লাখ টাকা ও ৯ লাখ পশুখাদ্য বিতরণ করা হয়েছে।
গাইবান্ধার জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, দ্বিতীয় পর্যায়ের বন্যা পরিস্থিতিতে জেলার ৬০ হাজারেরও বেশি পরিবারের প্রায় আড়াই লাখ মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। জেলা প্রশাসন বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে ৪৪০ টন চাল, ৮ লাখ টাকা, ৬ হাজার ৬৫০ প্যাকেট শুকনো খাবার, বাচ্চাদের খাবারের জন্য ৪ লাখ টাকা এবং ৯ লাখ টাকার পশুখাদ্যসহ সহায়তা বরাদ্দ বিতরণ অব্যাহত রেখেছে। বাসস।
বন্যা পরিস্থিতি বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি ব্রহ্মপুত্র অববাহিকা