Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

শেখ কামালের ৭১তম জন্মবার্ষিকী আজ


৫ আগস্ট ২০২০ ০০:০৪

ঢাকা: জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র মুক্তিযোদ্ধা ও ক্রীড়া সংগঠক শহিদ শেখ কামালের ৭১তম জন্মবার্ষিকী আজ বুধবার (৫ আগস্ট)। এ বছর প্রথমবারের মতো সরকারিভাবে নানা আয়োজনে তার জন্মদিনটি পালন করা হবে। করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এসব আয়োজন পালন করবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে।

এছাড়া ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলোও পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের প্রথম শহিদ শেখ কামালের জন্মদিন পালন করবে। শেখ কামালের গড়ে তোলা আবাহনী ক্রীড়া চক্রও এ দিনটিতে রেখেছে নানা আয়োজন।

বিজ্ঞাপন

শেখ কামালের জন্মদিনে বুধবার সকাল ১১টায় জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ অডিটোরিয়ামে তার বর্ণাঢ্য জীবনের ওপর ভার্চুয়াল আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মের এই আলোচনায় প্রধান অতিথি হিসেবে যুক্ত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আলোচনা অনুষ্ঠানে শহিদ শেখ কামালকে নিয়ে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে নির্মিত তথ্যচিত্র প্রর্দশন করা হবে এবং “শহিদ শেখ কামাল: ‘আলোমুখী এক প্রাণ’” শীর্ষক স্মারক গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হবে।

একই ভেন্যুতে দুপুর ১২টার দিকে অসহায় ও করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া সংগঠকদের আর্থিক অনুদান দেওয়া হবে। বিকেল ৩টায় যুব উন্নয়ন অধিদফতরের সারাদেশে একযোগে এক লাখ চারা গাছ বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল।

শেখ কামালের জন্মদিনকে ঘিরে আওয়ামী লীগ এবং এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনগুলো বুধবার দিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করবে। দলের দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়ার সই করা এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, সকাল সাড়ে ৮টায় ধানমন্ডি আবাহনী ক্লাব প্রাঙ্গণে এবং সকাল সোয়া ৯টায় বনানী কবরস্থানে শ্রদ্ধা জানাবে আওয়ামী লীগ। এছাড়া কোরআনখানি, মিলাদ ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন রয়েছে। এছাড়াও বিভিন্ন ক্রীড়া ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি পালন করবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে যথাযথ মর্যাদায় দিবসটি পালনের জন্য সব স্তরের নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ীদের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

বিজ্ঞাপন

এদিকে, শেখ কামালের জন্মদিনে সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের (সিআরআই) আয়োজনে ‘তারুণ্যের জেগে ওঠার নাম শেখ কামাল’ শীর্ষক এক বিশেষ ওয়েবিনার সঞ্চালনা করবেন সাংবাদিক ও গবেষক সুভাষ সিংহ রায়। ওয়েবিনারে আলোচক হিসেবে যুক্ত থাকবেন মুক্তিযোদ্ধা ও নাট্যজন নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ম হামিদ, ক্রীড়া সংগঠক ও আওয়ামী লীগের ক্রীড়া সম্পাদক হারুন-উর-রশিদ, সিনিয়র ক্রীড়া সাংবাদিক অঘোর মন্ডল এবং আবাহনীর প্রথম অফিসিয়াল ফটোগ্রাফার সিনিয়র ফটো সাংবাদিক পাভেল রহমান। ওয়েবিনারটি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ ও ইউটিউব চ্যানেলে সরাসরি সম্প্রচারিত হবে।

১৯৪৯ সালের এই দিনে ওই সময়কার গোপালগঞ্জ মহকুমার টুঙ্গীপাড়া গ্রামে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেসা দম্পতির ঘর আলো করে জন্ম দেন শেখ কামাল। পঁচাত্তরের ১৫ আগস্টের সেই কালো রাতে ঘাতকের বুলেট কেড়ে নেয় মাত্র ২৬ বছর বয়সী কামালের প্রাণ। ভয়াল সেই রাতে তিনিই ছিলেন খুনিদের হত্যাকাণ্ডের প্রথম শিকার।

শেখ কামাল বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একজন নিবেদিতপ্রাণ কর্মী ছিলেন। ঊনসত্তরের গণঅভ্যুত্থান ও একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরোচিত ভূমিকা রাখেন তিনি। ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে পাকহানাদার বাহিনী ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাসভবনে হামলা চালানোর ঠিক আগ মুহূর্তে বাড়ি থেকে বেরিয়ে যান তিনি, সরাসরি অংশ নেন মুক্তিযুদ্ধে। স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম ওয়ার কোর্সে প্রশিক্ষণ নিয়ে মুক্তিবাহিনীতে কমিশন্ড পান তিনি। পরে মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি জেনারেল ওসমানির এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

স্বাধীনতার পর শেখ কামাল সেনাবাহিনী থেকে অব্যাহতি নিয়ে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করেন। পাশাপাশি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত থেকে সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও ক্রীড়া সংগঠক হিসেবে সক্রিয় ভূমিকা রেখে যেতে থাকেন।

রাজধানীর শাহীন স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে সম্মানসহ স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন শেখ কামাল। ‘ছায়ানটে’র সেতার বাদন বিভাগের ছাত্র ছিলেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শাহাদাত বরণের সময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের স্নাতকোত্তর শেষ পর্বের পরীক্ষার্থী ছিলেন। ওই সময় বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের অঙ্গসংগঠন জাতীয় ছাত্রলীগেরও কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন তিনি।

স্বাধীনতা উত্তর যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশের পুনর্গঠন ও পুনর্বাসন কর্মসূচির পাশাপাশি সমাজের পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর ভাগ্য উন্নয়নে উদ্বুদ্ধকরণে মঞ্চ নাটক আন্দোলনের ক্ষেত্রে তিনি প্রথমসারির সংগঠক ছিলেন। বন্ধু শিল্পীদের নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন ‘স্পন্দন শিল্পী গোষ্ঠী’। শেখ কামাল ছিলেন ঢাকা থিয়েটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। অভিনয়শিল্পী হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাট্যাঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। তিনি উপমহাদেশের অন্যতম সেরা ক্রীড়া সংগঠন, বাংলাদেশে আধুনিক ফুটবলের প্রবর্তক আবাহনী ক্রীড়া চক্রেরও প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন।

১৯৭৫ সালের ১৪ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ব্লু’ পদকপ্রাপ্ত দেশবরেণ্য অ্যাথলেট সুলতানা খুকুর সঙ্গে বিয়ে হয় শেখ কামালের। এর একমাসের মাথায় স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তির বয়ে আনা সেই ইতিহাসের নৃশংসতম কালো রাত সাক্ষী হয় শেখ কামালের জীবনাবসানের।

আবাহনী ক্রীড়া চক্র ঢাকা থিয়েটার বঙ্গবন্ধুর জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল স্পন্দন শিল্পগোষ্ঠী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর