Sunday 20 Oct 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বৃষ্টি হলেই পানিবন্দি কালাইয়ের ২ গ্রাম, নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেই


৫ আগস্ট ২০২০ ১৬:৫৬

জয়পুরহাট: জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার পশ্চিম কুজাইল ও চক-নয়াপাড়া গ্রামের দুই শতাধিক পরিবার বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধ অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন কয়েকবছর ধরে। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টি হলেই সড়ক ডুবে যায়। প্রতিবছর বর্ষা মৌসুমে দুর্ভোগ আরও বাড়ে। বাড়ি, ফসল, বিদ্যালয় তলিয়ে যায়। পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে বলে গ্রামবাসীর অভিযোগ।

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, ক্ষেতলাল উপজেলার সীমানা দিয়ে অপসারিত হয়ে বর্ষা মৌসুমে উপজেলার পশ্চিম কুজাইল ও চক- নয়াপাড়া গ্রামে পানি আসে। ক্ষেতলাল সীমান্তে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ করে অপরিকল্পিতভাবে এক ব্যক্তি বাড়ি নির্মাণ করার পর থেকে এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এ বিষয়ে কালাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর অভিযোগ করা হলেও কোন সুরাহা হয়নি। ফলে সেই থেকে জলমগ্ন অবস্থায় বসবাস করছেন গ্রাম দুটোর দুই শতাধিক পরিবারের প্রায় সহস্রাধিক মানুষ।

বিজ্ঞাপন

মঙ্গলবার (৪ আগস্ট) সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, নিস্কাশনের পথ বন্ধ থাকায় বৃষ্টির পানিতে ডুবে আছে পশ্চিম কুজাইল ও চক-নয়াপাড়া গ্রামে যোগাযোগের একমাত্র সড়ক। ডুবে আছে বেশকিছু বাড়ি-ঘরও। এ ছাড়া সারা বছর ঘর গৃহস্থালীর অপসারণ করা পানি প্রবাহের নর্দমাগুলোও ডুবে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। ডুবে থাকার কারণে একমাত্র শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পশ্চিম কুজাইল
সালাফিয়া মাদ্রাসায় শিক্ষার কাজে ঘটেছে চরম ব্যাঘাত। সড়ক ও মাদ্রাসা জলাবদ্ধতার কারণে বর্ষা মৌসুমে শিশু শিক্ষার্থীরা মাদ্রাসায় আসতে পারে না।

দীর্ঘদিন পানিবন্দি থাকার ফলে ওইসব পরিবারের সদস্যরা পানিবাহিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। সড়ক ডুবে থাকার ফলে কৃষকদের উৎপাদিত ধান আলু ও অন্যান্য কৃষি পণ্যও হাট-বাজারে নিয়ে যেতে নানা সমস্যায় পড়তে হয় গ্রামের কৃষকদের। এ অবস্থা থেকে রেহাই পেতে গ্রামবাসীর পক্ষ থেকে কালাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবরে অভিযোগ করা হলেও কোন সমাধান মেলেনি। পরে স্থানীয় জিন্দারপুর ইউনিয়ন পরিষদে অভিযোগ করার পর চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিয়া কয়েক দফা চেষ্টা করেও ব্যর্থ হয়েছেন।

বিজ্ঞাপন

পশ্চিম কুজাইল সালাফিয়া মাদ্রাসার পরিচালক তাজমহল হোসাইন বলেন,পানি নিষ্কাশন না হওয়ার কারণে বর্ষা মৌসুমে গ্রামের সড়ক ও মাদ্রাসা জলাবদ্ধ হয়ে পড়ে। ফলে শিক্ষার্থীরা মাদ্রাসায় আসতে পারে না।

গ্রামের পল্লী প্রাণি চিকিৎসক নবীর উদ্দিন বলেন, বর্ষার পানিতে পুরো গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে আছে ৩-৪ বছর ধরে। বর্ষার পানি প্রবাহের পথ ভরাট করে ক্ষেতলাল উপজেলা সীমান্তে জনৈক ব্যক্তি বাড়ি নির্মাণ করার ফলে আমরা দুই গ্রামের মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছি। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে বিষয়টি সুরাহার জন্য দরবার বসিয়েও কোন লাভ হয়নি।

স্থানীয় জিন্দারপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান জিয়া গ্রামবাসীদের কষ্টের কথা স্বীকার করে বলেন, গ্রাম দুটো কালাই উপজেলার হলেও পানি নিষ্কাশনের পথটি ক্ষেতলাল পৌরসভা সীমানার মধ্যে। এ ব্যাপারে ক্ষেতলাল পৌরসভা মেয়রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও সহযোগিতা না করায় বিষয়টি সুরাহা করা সম্ভব হয়নি।

ক্ষেতলাল পৌরসভার মেয়র সিরাজুল ইসলাম বলেন, ওই গ্রামগুলোর পানি নিষ্কাশনের আগের যে পথ সেটির জমি ভরাট করে এখন তারা যে পথে পানি নিষ্কাশন করার কথা বলছেন, সেখানে বাড়ি-ঘর নির্মাণ হয়েছে। বাড়ি-ঘর ভেঙ্গে দিয়ে পানি নিষ্কাশনের পথ বের করা সম্ভব না।

কালাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোবারক হোসেন বলেন, অভিযোগের বিষয়টি আমার জানা ছিল না। তবে অপরিকল্পিতভাবে ঘর-বাড়ি নির্মাণ করার ফলেই এ ধরণের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

কালাইয়ে পানিবন্দি মানুষ জয়পুরহাটের কালাই

বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর