Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

জাপানে সীমিত পরিসরে পরমাণু হামলার ৭৫তম বর্ষপূর্তি


৭ আগস্ট ২০২০ ০০:৪৮

দুনিয়ার প্রথম পরমাণু বোমা হামলার ৭৫তম বর্ষপূর্তি সীমিত পরিসরে পালন করেছে জাপান। খবর এএফপি।

নভেল করোনাভাইরাস সংক্রমণের মুখে বৃহস্পতিবার (৬ আগস্ট) ওই হামলায় মৃতদের স্মরণে হিরোশিমা প্রিফেকচারে সংক্ষিপ্ত অনুষ্ঠানও আয়োজন করা হয়েছে। স্থানীয় সময় সকাল সোয়া আটটায় হিরোশিমার যেখানে প্রথম পরমাণু বোমা ফেলা হয়েছিল, সেখানে আমন্ত্রিতরা নিরব প্রার্থনায় অংশ নেন।

এদিকে, স্মরণ অনুষ্ঠানের শুরুতেই সেদিনের ওই হামলায় মৃত এবং আহতদের জন্য প্রার্থনা করা হয়। বিশ্ব শান্তি কামনার ওই প্রার্থনায় হামলা থেকে বেঁচে যাওয়া ব্যক্তি, মৃত ও আহতদের স্বজন এবং অনেক বিদেশি বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ অংশ নিয়েছেন।

তবে, সাধারণ জনগণকে ওই আয়োজন থেকে দূরে রাখা হয়। তাদের জন্য স্মরণ অনুষ্ঠানটি অনলাইনে লাইভ সম্প্রচার করা হয়েছে। অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া অনেককেই কালো পোশাক পরিহিত অবস্থায় দেখা গেছে।

পরে, হিরোশিমার মেয়র কাজুমি মাতসুই তার বক্তব্যে উগ্র-জাতীয়তাবাদের বিরুদ্ধে সতর্কবানী উচ্চারণ করে বলেন, শুধুমাত্র ওই কারণেই দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ হয়েছে। এছাড়াও, তিনি করোনাভাইরাস মহামারির মতো বৈশ্বিক হুমকি মোকাবিলায় বিশ্বকে ঐক্যব্ধ হওয়ার আহবান জানান।

মেয়র বলেন, ওই বেদনাদায়ক অতীত ফিরে আসুক তা কখনোই কাম্য নয়। সুশীল সমাজকে অবশ্যই এই আত্মকেন্দ্রিক জাতীয়তাবাদকে প্রত্যাখ্যান করতে হবে এবং সকল হুমকির বিরুদ্ধে একতাবদ্ধ হতে হবে।

অন্যদিকে, দেশের সংবিধানের কিছু শান্তিবাদী ধারা সংশোধনের জন্য সমালোচিত জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো অ্যাবে তার ভাষণে, বিশ্বকে পরমাণু বোমামুক্ত করা এবং স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা চালানোর অঙ্গীকার করেন।

পাশাপাশি, কোভিড-১৯ বৈশ্বিক মহামারির কারণে অনুষ্ঠানে হাজির না হয়ে এক ভিডিও বার্তায় জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, পরমাণু বোমার ঝুঁকি সম্পূর্ণ দূর করতে একমাত্র পথ হচ্ছে সমস্ত পরমাণু বোমা ধ্বংস করা।

প্রসঙ্গত, ১৯৪৫ সালের ৬ আগস্ট হিরোশিমায় পরমাণু বোমা হামলায় প্রায় এক লাখ ৪০ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছিল। তাদের বেশিরভাগই তাৎক্ষণিকভাবে মারা গেছেন। অন্যরা হামলার কয়েক সপ্তাহ এবং কয়েক মাসের মধ্যে রেডিয়েশনে, ভয়ংকরভাবে পুড়ে এবং অন্যান্য আঘাতে মারা যান। এর তিনদিন পরেই যুক্তরাষ্ট্র দ্বিতীয় পরমাণু বোমা ফেলে জাপানের নাগাসাকি শহরে। এতে আরও ৭৪ হাজার মানুষেরর মৃত্যু হয়।

অপরদিকে, ওই পরমাণু বোমা হামলা নিয়ে এখনো অনেক ঐতিহাসিক বিতর্কের অবসান হয়নি। যুক্তরাষ্ট্র এই হামলার জন্য এখনো ক্ষমা চায়নি। যদিও অনেকে মনে করেন ওই হামলার মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসান হয়েছে।

বোমা হামলার কয়েকদিন পরে ১৯৪৫ সালের ১৫ আগস্ট জাপান আত্মসমর্পণ করে। কিছু ঐতিহাসিক দাবি করেন, পরমাণু বোমা হামলার মাধ্যমে স্থল অভিযান এড়ানো সম্ভব হয়েছে, স্থল অভিযান হলে আরো বেশী মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা ছিল।

তবে, জাপানে এই পরমাণু বোমা হামলাকে ব্যাপকভাবে যুদ্ধাপরাধ হিসেবে বিবেচনা করা হয়, এই হামলার মাধ্যমে নির্বিচারে বেসামরিক লোক হত্যা ও ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে।

এর আগে, ২০১৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হিসেবে বারাক ওবামা প্রথম হিরোশিমা পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি অবশ্য ওই হামলার জন্য ক্ষমা চাননি। তবে, বোমা হামলা থেকে প্রাণে বেঁচে যাওয়া মানুষদের প্রতি তিনি সহানুভূতি প্রকাশ করেন। পাশাপাশি, বিশ্বকে পরমাণু বোমামুক্ত করারও আহ্বান জানান।

জাতিসংঘ জাপান নাগাসাকি পরমাণউ বোমা হামলা যুক্তরাষ্ট্র হিরোশিমা


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর