Saturday 23 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চালক ঘুমিয়ে পড়ায় ব্যস্ত বাজারে ঢুকে গেল বাস, প্রাণ গেল ৬ জনের


৮ আগস্ট ২০২০ ১২:৪০

চুয়াডাঙ্গা: চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার সরোজগঞ্জে বাজারে বাসচাপায় ছয়জন নিহত ও চারজন আহত হয়েছেন। বেশ কয়েকটি ছোট গাড়ি ও বাজারে আসা লোকজনকে রয়েল পরিবহনের একটি বাস চাপা দিলে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।

আহত একজনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ঘটনাস্থলে থাকা সারাবাংলার চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রতিনিধি জানান, ঝিনাইদহ-চুয়াডাঙ্গা মহাসড়কের সরোজগঞ্জ বাজারটি স্থানীয়ভাবে নামকরা একটি বাজার। শনিবার ছিল সাপ্তাহিক হাটের দিন। তাই ভোর থেকে বিভিন্ন এলাকা থেকে ওই হাটে লোকজনের ভিড় ছিল। বাজারটি মহাসড়ক সংলগ্ন হওয়ায় সড়কের দুইপাশেই বাজারে আসা লোকজনের ভিড় ছিল। এ ছাড়া মহাসড়কের পাশে ইঞ্জিনচালিত ভ্যান আলমসাধু, যাত্রীবাহী ভ্যান ও বেশকিছু সাইকেল-মোটরসাইকেল দাঁড়িয়ে ছিল। এমন অবস্থায় শনিবার সকাল সাড়ে ৬টার দিকে সরোজগঞ্জ সিনেমা হল এলাকায় দিকে দ্রুতগতির বাসটি মূল সড়ক থেকে বামদিকে কিছুটা টার্ন নিয়ে বাজারের লোকজনকে চাপা দিয়ে আবার মূল সড়কে উঠে পড়ে।

রয়েল এক্সপ্রেসের বাসটি চট্টগ্রাম থেকে মেহেরপুরে যাচ্ছিল। শুক্রবার রাতে বাসটি চট্টগ্রাম ছাড়ে। শনিবার সকালে সেটি সর্বশেষ গন্তব্য মেহেরপুরে যাওয়ার কথা ছিল।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সদর উপজেলার যুগীরহুদা গ্রামের চাঁদ আলীর ছেলে সরোজগঞ্জ বাজারের চায়ের দোকানদার নিজাম ও বাজারের আতর আলী মার্কেটের স্বত্বাধিকারী মিজানুর রহমান জানান, যাত্রীবাহী পরিবহনটি বাজারে দাঁড়িয়ে থাকা বরফবোঝাই আলমসাধু, ভ্যানগাড়ি, মোটরসাইকেল ও সাধারণ মানুষদের চাপা দিয়ে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

রয়েল পরিবহনের বাসে থাকা একজন প্রত্যক্ষদর্শী যাত্রীর বরাত দিয়ে সারাবাংলার প্রতিনিধি জানান, বাস চালাতে চালাতে চালক হঠাৎ ঘুমিয়ে পড়েন। এ সময় একজন যাত্রী তার আসন থেকে উঠে গিয়ে চালককে সজাগ করার জন্য পিঠ চাপড়ান। এ সময় চালক আচমকা জেগে উঠে কোনোকিছু বোঝার আগেই বাজারের বামপাশে বাসটি ঢুকিয়ে দেন। লোকজনকে চাপা দেওয়ার পর বাসটি আবার ডানে টার্ন নিয়ে মূল সড়কে উঠে আসে।

বিজ্ঞাপন

বাসচাপায় নিহতরা হলেন, উপজেলার খাড়াগোদা গ্রামের পল্লী চিকিৎসক সদর উপজেলার মাহতাব উদ্দিনের ছেলে মিলন (৩৫), বসু ভাণ্ডারদহ গ্রামের নিতাই হালদারের ছেলে ষষ্টি হালদার (৪০), তিতুদহ গ্রামের প্রিয়ত আলীর ছেলে রাজু আহমদ (৩০), তিতুদহ গ্রামের রহিম মল্লিকের ছেলে শরিফুল (৪৫), তিতুদহ গ্রামের হায়দার আলীর ছেলে কালু মণ্ডল (৩৫) ও তিতুদহ গ্রামের নুতার ছেলে সোহাগ (২৫)।

আহত হন সরোগঞ্জ বাজারের বজলুর ছেলে বাবলু (৪৫), তিতুদহ গ্রামের মরহুম তৈয়ব আলীর ছেলে আলমগীর (২৭) ও একই গ্রামের জুড়ন মণ্ডলের
ছেলে বেল্টু (৩০) ও মোহাম্মদ জুম্মা গ্রামের খোদা বক্সের ছেলে আকাশ (২৫)।

এর মধ্যে গুরুতর আহত বাবলুকে চিকিৎসার জন্য রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকা আরও একজন প্রত্যক্ষদর্শী সারাবাংলাকে জানান, বাসটি থামানোর জন্য খাড়াগোদা গ্রামের পল্লী চিকিৎসক মাহতাব উদ্দিন বাসের সামনে দাঁড়িয়ে চালককে থামতে ইশারা দেন। তাকেও বাসটি চাপা দিলে ঘটনাস্থলে তিনি মারা যান।

সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু জিহাদ ফকরুল আলম খান জানান, দুর্ঘটনার পরপরই চালক পালিয়ে গেছেন। বাসটি জব্দ করে পুলিশ লাইনসে রাখা হয়েছে। চালককে ধরতে অভিযান চলছে।

চুয়াডাঙ্গার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর) কনক কান্তি দাস বলেন, ‘রয়েল এক্সপ্রেসের ঢাকা মেট্রো ব ১৫-২১৬১ যাত্রীবাহী পরিবহনের চালক যে দুর্ঘটনাটি ঘটিয়েছে তাতে ছয়জন মারা গেছেন। ওদের পরিবার সদস্যরা যদি মামলা করে তবে হত্যা মামলা দায়ের করা হবে। তারা মামলা না করলে পুলিশ বাদী হয়ে বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে হত্যাকাণ্ড ঘটানোর দায়ে মামলা করবে।’

বিজ্ঞাপন

বাসচাপা রয়েল পরিবহন

বিজ্ঞাপন

মাদকের টাকার জন্য মা'কে খুন
২৩ নভেম্বর ২০২৪ ০৮:৫৭

আরো

সম্পর্কিত খবর