কুড়িগ্রামে দুধকুমারের ভাঙনে নিশ্চিহ্নের পথে দু’টি গ্রাম
৮ আগস্ট ২০২০ ১৭:১৩
কুড়িগ্রাম: জেলায় দুধকুমার নদের ভাঙনে বিলীনের পথে ভূরুঙ্গামারী উপজেলার পাইকেরছড়া ইউনিয়নের পাইকডাঙ্গা ও চরভূরুঙ্গামারী ইউনিয়নের ইসলামপুর গ্রাম। ভাঙনের শিকার হয়েছে ওই গ্রামের ৩টি মসজিদসহ কয়েকশ’ হেক্টর আবাদি জমি ও শতাধিক বসতবাড়ি। ভাঙনের তীব্রতায় হুমকির মুখে পরেছে দু’টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
স্থানীয়রা জানান, বন্যার পানি নেমে যাওয়ার সাথে সাথে দুধকুমারের ভাঙন তীব্র আকার ধারন করেছে। অব্যাহত ভাঙ্গনে হুমকির মুখে পরেছে পাইকডাঙ্গা ও আব্দুল করিম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় দু’টি। এ অবস্থায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে ভাঙনকবলিত এলাকার নদের তীরবর্তী পরিবারগুলো। ভাঙনের হুমকিতে থাকা অনেক পরিবার বাধ্য হয়ে ঘরবাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে।
ভাঙ্গনে ভিটেহারা ইসলামপুর গ্রামের আলাউদ্দিন ও আজগর আলী বলেন, ‘প্রায় পঞ্চাশ বছর আগে আমাদের বসত ভিটা নদীত হারিয়েছিলাম তারপর আবার ফিরে পেয়েছি। কিন্তু এবার আবার হারাইলাম। এখন কি করি, কোথায় যাই বুঝতে পারছি না।’
পাইকডাঙ্গা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আমিনুর রহমান বলেন, ‘নদী যেভাবে ভাঙছে তাতে বিদ্যালয় দুটি রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ভাঙনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।’
উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান (মহিলা), আলোকিত ভূরুঙ্গামারী ও দুধকুমার নদী ভাঙন প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি শাহানারা বেগম মীরা বলেন, ‘আমাদের আবেদনের প্রেক্ষিতে ইতোমধ্যে জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বী মিয়া ও সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের সচিব ভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে, নাগেশ্বরী উপজেলার নুন খাওয় থেকে ভূরুঙ্গামারী উপজেলার শিলখুড়ী ইউনিয়ন পর্যন্ত প্রায় সাড়ে সাত হাজার কোটি টাকার একটি প্রকল্প তৈরি করেছেন। তাদের নির্দেশনা মোতাবেক স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড শিগগিরই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’
চরভূরুঙ্গামারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এটিএম ফজলুল হক ও পাইকেরছরা ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুর রাজ্জাক সরকার বলেন, ‘পানি কমার সাথে সাথে আমাদের ইউনিয়নে নদী ভাঙনের তীব্রতাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভাঙনের তথ্য আমরা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ওমর ফারুক জানান, সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সমন্বিত পরিদর্শন শেষে নদী শাসনের জন্য একটি প্রস্তাব ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। আপাতত শিলখুড়ি খেয়া ঘাটের দুইপারের জনগণের পারাপারের সুবিধার্থে ঘাট উন্নয়নের পরিকল্পনা বাস্তবায়নাধীন। এছাড়াও কালজানি ও দুধকুমার নদীর ভাঙন রোধে ‘দুধকুমার নদী উন্নয়ন প্রকল্প’ নামে একটি প্রকল্প তৈরির কাজ চলছে বলেও তিনি জানান।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফিরুজুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ইতোমধ্যে ভাঙনকবলিত সংশ্লিষ্ট এলাকা পরিদর্শন করেছি। পানি উন্নয়ন বোর্ডের মাধ্যমে একটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। আশা করছি দ্রুতই এর সমাধান দৃশ্যমান হবে।’
চরভূরুঙ্গামারী দুধকুমার পাইকডাঙ্গা ভাঙনের শিকার ভূরুঙ্গামারী