রাজনীতিবিদরা লোভে নিমজ্জিত হলে জনগণের স্বপ্ন ছিনতাই হয়: কাদের
১১ আগস্ট ২০২০ ২০:২২
ঢাকা: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘রাজনীতি মহান ব্রত এটা কোনো পেশা নয়। সাধারণ জনগণ নিষ্ক্রিয় থাকলেও তাদের স্বার্থ রক্ষার জন্য রাজনৈতিক নেতা-কর্মীদের সক্রিয় থাকতে হয়। রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা লোভের চোরাবালিতে নিমজ্জিত হলে জনগণের স্বপ্ন ছিনতাই হয়ে যায়।’
মঙ্গলবার (১১ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত ‘স্বেচ্ছাশ্রম বাংলাদেশ: বঙ্গবন্ধুর চিন্তা-ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। ওবায়দুল কাদের তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে সংযুক্ত হন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘যারা বলে রাজনীতিতে শেষ কথা বলতে কিছু নেই। তারা জনকল্যাণের মূলমন্ত্র থেকে সরে গিয়ে লুটপাটের সংস্কৃতির বিস্তার ঘটায়। রাজনীতিকে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধির হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘সত্যিকারের রাজনৈতিক নেতাকর্মীরা লোভের বশবর্তী হয়ে রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হয় না। কোনো মহান লক্ষ্য-উদ্দেশ্য আদর্শ চেতনা ও মূল্যবোধকে সামনে রেখে রাজনীতিতে আসে। রাজনৈতিক সংস্কৃতি নষ্ট হলে কিংবা রাজনৈতিক নেতা-কর্মীরা লোভের চোরাবালিতে নিমজ্জিত হলে জনগণের স্বপ্ন ছিনতাই হয়ে যায়।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন সংগ্রামে রাজনীতির পটভূমি ও প্রেক্ষাপট তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছোটবেলা থেকেই কোনো অন্যায় দেখলে চিন্তা না করে তার প্রতিবাদ করা ছিল সহজাত প্রবৃত্তি। প্রতিবাদের সহজাত এই প্রবৃত্তি থেকে তার রাজনীতিতে অংশগ্রহণ শুরু হয়। প্রতিবাদকারী কিশোর থেকে রাজনৈতিককর্মী এরপর রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের প্রতিফলন- প্রতিপালন ও আদর্শের অনুশীলনের মাধ্যমে রাজনৈতিক কর্মী থেকে রাজনৈতিক নেতা। তারপর বাঙালির অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন সংগ্রামের বোঝা কাঁধে বয়ে তিনি হয়ে ওঠেন রাজনীতিবিদ। বিশ্বের মহান নেতাদের অন্যতম এবং বাঙালি জাতির পিতা।’
ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বপ্রণোদিত হয়ে রাজনীতিতে এসেছেন। তিনি ছিলেন মানুষের ভালোবাসার প্রার্থী। তিনি ছিলেন একজন সমাজকর্মী। একজন দেশকর্মী। বাঙালি জাতিকে ভালবেসে তিনি হাসিমুখে ফাঁসিকাষ্ঠে যেতেও দ্বিধা করেননি।’ তাই এই মহান নেতার জীবনী পর্যালোচনা করলে একজন দক্ষ ও সফল রাজনীতিবিদ হতে হলে কতটা স্বেচ্ছাসেবী পরিশ্রমী, জনবান্ধব, আত্মত্যাগী, কর্তব্যপরায়ণ হতে হয় তা অনুধাবনের জন্য বর্তমান প্রজন্মের প্রতি আহ্বান জানান।
‘জাতির পিতা শেখ মুজিবুর রহমানের আদর্শ ধারণ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্যোগের এসময়ে জাতিকে সংকট উত্তরণের পথ দেখিয়ে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। শেখ হাসিনার নির্দেশে স্বেচ্ছাসেবক লীগ বিগত দিনের মতো আগামী দিনগুলোতেও জনকল্যাণমূলক কার্যক্রম অব্যাহত রাখবে। শেখ হাসিনার একটি শক্তিশালী বাহিনী হিসেবে রাজপথে ও জনমানুষের মাঝে নিজেদের ভাবমূর্তি উত্তরোত্তর সমুজ্জ্বল করতে সক্ষম হবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা প্রথম থেকেই বলে আসছি, সকলের ঐক্যবদ্ধ প্রয়াসে যেকোনো দুর্যোগ মোকাবিলা করে আমরা আমাদের কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হব। মানবিক নেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে যেকোনো অপশক্তির বিরুদ্ধে জয় আমাদের হবেই, ইনশাল্লাহ।’
এছাড়া করোনা ও বন্যা দুর্গত এলাকায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোর জন্য স্বেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মীদের প্রতি ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানান তিনি।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নির্মল রঞ্জন গুহর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম এবং মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল।
সভা পরিচালনা করেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান।