Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

২ বছরেও হয়নি বাস স্টপেজ, উপেক্ষিত প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা


১২ আগস্ট ২০২০ ১১:৪২

ঢাকা: নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের দুই বছর পার হয়েছে কয়েকদিন আগে। কিন্তু সড়কে শৃঙ্খলা ফেরাতে ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী ও তার কার্যালয় থেকে দেওয়া নির্দেশনার দৃশ্যমান কোনো বাস্তবায়ন এখনও নেই। ওই সময় প্রধানমন্ত্রীর গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশনার মধ্যে ছিল রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে নির্ধারিত স্থানে বাস স্টপেজ বা প্যাসেঞ্জার শেড নির্মাণ। কিন্তু এখন পর্যন্ত রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে তা নির্মাণ করা হয়নি। ফলে এখনও সড়কে ফেরেনি শৃঙ্খলা, বাস থামছে যত্রত্রত, যাত্রী উঠাচ্ছে রাস্তার ওপর থেকে। এ কারণে প্রতিনিয়ত সড়কে ঝরছে প্রাণ।

বিজ্ঞাপন

বাস মালিকরা বলছেন, সিটি করপোরেশন জায়গা দিলে তারা নিজেরাই বাস স্টপেজ বা প্যাসেঞ্জার শেড তৈরি করে নেবেন। কিন্তু ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে এ নিয়ে দেখে গেছে সমন্বয়হীনতা।

রাজধানী কুড়িল বাড্ডা সড়কে সরেজমিন দেখা গেছে, রাস্তায় চলাচল করছে সুপ্রভাত, সালসাবিল, অনাবিল, ভিক্টর গ্রিন ঢাকাসহ শত শত বাস। সবগুলো বাসই অহরহ নিয়ম লঙ্ঘন করছে। রাস্তায় যত্রতত্র দাঁড়ানো গাড়ি, যেখানে সেখানে থেমে যাত্রী উঠাচ্ছে। এর মধ্যে সুপ্রভাত পরিবহনের একটি বাস অনুসরণ করে দেখা যায়, কুড়িল থেকে মালিবাগের পাঁচ কিলোমিটার দূরত্বে সেটি ১৭ বার থেমেছে। তবে কোনোবারই বাসটি স্টপেজে থামেনি। এর মধ্যে অন্তত ১০ বার রাস্তার ওপর থেকে যাত্রী ওঠানামা করেছে। এই সড়কে কয়েকটি বাসস্টপেজ স্থান চিহ্নিত করা আছে, যা অনুসরণ করছেন না কোনো চালকই। আর অহরহ এই ঘটনাগুলো ঘটছে পুলিশের সামনেই।

এ বিষয়ে ঢাকা সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েত উল্ল্যাহর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘বছর দেড়েক আগে থেকে সিটি করপোরেশনের কাছে জায়গা চেয়েছি। আমরা এও বলেছি, বাস স্টপেজ নির্মাণ করে দিয়ে সেখান থেকে টাকা নিতে পারে করপোরেশন। বাস মালিকরা সেটা দেবে। অথবা জায়গা দিয়ে দিক আমরা নির্মাণ করে নেবো। কিন্তু এখন পর্যন্ত এর কোনো অগ্রগতি জানাতে পারেনি তারা।’

এদিকে সিটি করপোরেশন বলছে, বিষয়টি ঢাকা মহানগর পুলিশ দেখছে। আর সড়কে বাস স্টপেজ চিহ্নিত করা আছে, সেখানে বাস থামাতে হবে। তবে বাস মালিকরা সিটি করপোরেশনে এ নিয়ে আনুষ্ঠানিক কোনো যোগাযোগ করেনি।

বাংলাদেশ বাস-ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি ফারুক তালুকদার সোহেল জানান, বিশ্বে একমাত্র বাংলাদেশেই দরজা খুলে বাস চলে। তার কারণ কোনো স্টপেজ নির্ধারণ করা নেই। এজন্য যত্রতত্র যাত্রী তুলতে চায় সিটি বাস। এ নিয়ে একাধিকবার সংশ্লিষ্ট মহলে তারা বক্তব্য জানিয়েছে। তাতে কোনো কাজ হয়নি।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা মহানগর পুলিশ ও পরিবহন মালিক সমিতি অফিসে যোগযোগ করে জানা গেছে, ঢাকায় বিভিন্ন সড়কে অন্তত দেড় হাজার বাস স্টপেজ ও প্যাসেঞ্জার শেড দরকার। কিন্তু এর অধিকাংশই এখনও নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।

তবে ব্যতিক্রম একমাত্র ঢাকার বিমানবন্দর সড়ক। বনানী থেকে বিমানবন্দর সড়ক নিয়ন্ত্রণ করে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর। তাদের তত্ত্বাবধানে এই সড়কে যত্রতত্র বাসে যাত্রী ওঠানামা বন্ধ করা হয়েছে। দরপত্র প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই ছয় কিলোমিটারের রক্ষণাবেক্ষণ ও বিউটিফিকেশন কাজ করছে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ভিনাইল ওর্য়াল্ড। তারা ছয় কিলোমিটারে ১২টি যাত্রী ছাউনি নিমাণ করেছে। যেখানে রয়েছে সুপরিসর জায়গা এবং বাস বে। এতে যাত্রীরা স্বাচ্ছন্দ্যে ওঠানামা করছেন। আবার সড়কে বাস থামার সুযোগও দেওয়া হচ্ছে না।

ভিনাইল ওর্য়াল্ডের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আবেদ মনসুর জানান, ছয় কিলোমিটার সড়কে অত্যন্ত পরিকল্পিতভাবে উন্নয়ন ও রক্ষণাবেক্ষণ কাজ করা হয়েছে। প্রায় ৯৫ ভাগ কাজ শেষ। চলছে শেষ মুহূর্তের ঘষামাজা। বিউটিফিকেশন পুরোপুরি শেষ হলে সারাদেশের জন্য উদাহরণ হতে পারবে সড়কটি। এই সড়কের বাস বে, প্যাসেঞ্জার শেড ও সবুজায়ন বেশ দৃষ্টিনন্দন। আর এগুলো করা হয়েছে উন্নত বিশ্বের আদলে।

উপেক্ষিত ঢাকা মহানগর পুলিশ নির্দেশনা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাস স্টপেজ সিটি করপোরেশন

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর