পান্থপথের হোটেল ওলিওতে বিস্ফোরণের ৩ বছর, শুরু হয়নি বিচার কাজ
১৫ আগস্ট ২০২০ ১৭:৫৪
ঢাকা: ২০১৭ সালের ১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবসের আগে রাজধানীর পান্থপথের হোটেল ওলিওতে বিস্ফোরণের তিন বছর পার হলেও এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয়নি মামলাটির বিচার কাজ।
তিন বছর আগে ১৫ আগস্টের এইদিনে কর্মসূচিতে হামলার পরিকল্পনা করতে পান্থপথের ওই হোটেলে আশ্রয় নেয় জঙ্গিরা। তবে তাদের পরিকল্পনাকে বাস্তবায়ন করতে দেয়নি আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী। ঘটনার আগের রাতেই পুলিশের অভিযানের সব কিছু নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। এক পর্যায়ে সকালে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে এক জঙ্গি আত্মঘাতী হন।
ওই ঘটনার পরের দিন পুলিশ বাদী হয়ে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে অজ্ঞাতনামাদের আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন।
২০১৯ সাকের ২৪ নভেম্বর জাতীয় শোক দিবসের কর্মসূচিতে জঙ্গি হামলার পরিকল্পনায় সম্পৃক্ত ১৪ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে কাউন্টার টেররিজম ইউনিট। মামলাটি বর্তমানে ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধ বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মজিবুর রহমানের আদালতে বিচারের অপেক্ষায় রয়েছে। মামলাটির আগামী ১৬ সেপ্টেম্বর চার্জশুনানির জন্য দিন ধার্য রয়েছে।
সংশ্লিষ্ট টাইব্যুনালের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর গোলাম ছারোয়ান খান (জাকির) মামলা সম্পর্কে জানতে চাইলে সারাবাংলাকে বলেন, মামলাটি কিছুদিন আগেই আমাদের আদালতে এসেছে। এরই মধ্যে মামলার বিচারকাজ অনেকটায় এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলাম। কিন্তু মহামারি করোনার কারণে আদালত সাধারণ ছুটিতে চলে যায়। যার ফলে কয়েক মাস বন্ধ থাকার পর এখন আবার আদালতের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। মামলাটি চার্জশুনানির পর্যায়ে আছে। চার্জগঠন হয়ে গেলে সাক্ষীদের আদালতে হাজির করে মামলাটির বিচারকাজ দ্রুত শেষ করার চেষ্টা করবো।
এদিকে আসামি পক্ষের আইনজীবী জাকির হোসেন জানান, মামলার চার্জশুনানির দিন আসামির অব্যাহতির চেয়ে আদালতে শুনানি করবো। যদি চার্জ গঠন হয়ে যায়। তাহলে মামলার সাক্ষীদের জেরা, যুক্তিতর্কের মধ্য দিয়ে আসামিকে কিভাবে নির্দোষ প্রমাণ করা যায় সেই চেষ্টা করবো।
মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন, আকরাম হোসেন খান নিলয় ওরফে স্লেড উইলসন, নাজমুল হাসান ওরফে মামুন, আবুল কাশেম ফকির ওরফে আবু মুসাব, আব্দুল্লাহ আইচান কবিরাজ ওরফে রফিক, তারেক মোহাম্মদ ওরফে আদনান, কামরুল ইসলাম শাকিল ওরফে হারিকেন ওরফে রোবট ওরফে তানজিম, লুলু সরদার ওরফে সহিদ ওরফে মিস্ত্রি, তাজরীন খানম শুভ, সাদিয়া হোসনা লাকী, আবু তুরাব খান, তানভির ইয়াসিন করিম ওরফে হিটম্যান ওরফে জিন, হুমায়রা জাকির নাবিলা, নব মুসলিম আব্দুল্লাহ ও তাজুল ইসলাম ওরফে ছোটন ওরফে মোহাম্মদ ওরফে ফাহিম। এদের মধ্যে তাজুল ইসলাম কিশোর হওয়ায় তার বিরুদ্ধে শিশু আইনে পৃথক একটি চার্জশিট দাখিল করা হয়।
তাজুল বাদে অপর ১৩ আসামির মধ্যে তাজরীন খানম, সাদিয়া হোসনা লাকী, আবু তুরাব খান, তানভির ইয়াসিন করিম, হুমায়রা জাকির নাবিলা ও আব্দুল্লাহ এই ছয় আসামি হাইকোর্ট থেকে জামিনে আছেন। অপর সাত আসামি কারাগারে রয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সালে ১৫ আগস্ট ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কে জাতীয় শোক দিবসের অনুষ্ঠান চলার মধ্যেই ৩০০ মিটার দূরে পান্থপথের হোটেল ওলিও ইন্টারন্যাশনালে অভিযান চালায় কাউন্টার টেররিজম ইউনিট ও সোয়াট সদস্যরা। কয়েক ঘণ্টা ধরে চলা ওই অভিযানের এক পর্যায়ে হোটেল ওলিও ইন্টারন্যাশনাল থেকে বিকট বিস্ফোরণ ও গুলির শব্দ পাওয়া যায়। বিস্ফোরণে হোটেলের চতুর্থ তলার রাস্তার দিকের অংশের দেয়াল ও গ্রিল ধসে নিচে পড়ে।
হামলার পরিকল্পনা ও বোমা বিস্ফোরণের ঘটনায় ওই সময় কলাবাগান থানায় ১৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন কলাবাগান থানার এসআই সৈয়দ ইমরুল সায়েদ।