Wednesday 11 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘অপারেশন ক্লিন হার্টের নামে বহু মানুষকে হত্যা করা হয়েছে’


১৬ আগস্ট ২০২০ ২৩:১৪

খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে ‘অপারেশন ক্লিন হার্টে’র নামে বহু মানুষকে হত্যা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। এর মাধ্যমে একটি খুনের রাজত্ব গড়ে তোলা হয়েছিল বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘এক্সট্রা জুডিশিয়াল কিলিংয়ের (বিচার বহির্ভূত হত্যা) কথা আজ সবাই বলে। অনেকে ভুলে গেছে যে খালেদা জিয়া ২০০১ সালে প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসে  অপারেশন ক্লিন হার্টের নামে বহু মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা করেছে।’

আরও পড়ুন- ‘জিয়া ইনডেমিনিটি দিয়ে প্রমাণ করেন, বঙ্গবন্ধু হত্যায় জড়িত ছিলেন’

রোববার (১৬ আগস্ট) বিকেলে জাতির পিতার ৪৫তম শাহাদাতবার্ষিকী এবং জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্মরণ সভায় এসব কথা বলেন তিনি। করোনা পরিস্থিতির কারণে ভার্চুয়াল প্ল্যাটফর্মে অনুষ্ঠিত এই স্মরণসভায় দলের সভাপতি গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মূল অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হন।

অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সময়ে সংঘটিত ১৯টি ক্যু’র কারণে অফিসার ও সৈনিক হত্যার প্রসঙ্গ টেনে শেখ হাসিনা বলেন, ‘সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল আমাদের সেনাবাহিনী ও বিমান বাহিনী। বিমান বাহিনীর ৬৬৫ জনকে আর সেনা বাহিনীর দুই থেকে আড়াই হাজার জনকে হত্যা করা হয়েছিল। কেউ বলতে পারত না কে বেঁচে থাকবে আর কে কখন মৃত্যুবরণ করবে। এরকম একটা ত্রাসের রাজত্ব তারা কায়েম করেছিল।’

খালেদা জিয়ার সময়েও একই ঘটনা ঘটেছিল উল্লেখ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘ঠিক তার (জিয়া) স্ত্রী (খালেদা জিয়া) ক্ষমতায় এসেও একই ঘটনা ঘটিয়েছে। আমাদের সেনাবাহিনীর যত মুক্তিযোদ্ধা অফিসার ছিল, তাদের একে একে হত্যা করেছে। হাজার হাজার অফিসার ও সৈনিককে নির্বিচারে হত্যা করেছে। কাউকে কোর্ট মার্শাল দিয়েছে, কাউকে গুলি করে হত্যা করেছে।’

‘এভাবে বহু অবলা মায়ের কোল খালি হয়েছে, কেউ একটা প্রতিবাদ করার সাহস পেত না। কারণ, কেউ প্রতিবাদ করলে সে আর জীবিত থাকত না। সাদা গাড়িতে করে তুলে নিয়ে কোথায় ফেলে দিত, লাশও পাওয়া যেত না,’— বলেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘অপারেশন ক্লিন হার্টের নামে আমাদের আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মী যেখানেই যাকে পেয়েছে, নির্যাতন করে হত্যা করেছে।’ গুম-খুনের শিকার খুলনা-চট্টগ্রাম-নারায়ণগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকার আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীর বেশ কয়েকজনের নাম উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এরকম বহু ঘটনা আছে। আমার মনে হয় সেগুলো আবার স্মরণ করা উচিত। কারণ কিভাবে একটা দেশে খুনের রাজত্ব তারা শুরু করেছিল, সেটা জানা দরকার।’

ওই সময় আওয়ামী লীগের রিচার্স সেন্টার দখল, বইপত্র, তিনশ ফাইল, কম্পিউটার হার্ডডিস্ক ও নগদ টাকা লোপাটসহ রাজনৈতিক কর্মসূচি বন্ধ করে দেওয়ার জন্য খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করে তিনি বলেন, ‘সেই হত্যার বিচার হবে না— এই ইনডেমনিটিও খালেদা জিয়া দিয়ে গেছে।’

বঙ্গবন্ধুর খুনিদেরও খালেদা জিয়া পুরস্কৃত করেছেন অভিযোগ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘শুধু তাই নয়, যে পাশা (বঙ্গবন্ধুর খুনি) মৃত্যুবরণ করেছে, তাকে প্রমোশন দিয়ে তার সব টাকা-পয়সা স্ত্রীকে দেওয়া হয়েছে। খায়রুজ্জামানের (বঙ্গবন্ধুর আরেক খুনি) চাকরি চলে গিয়েছিল। কিন্তু খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে তাকে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের চাকনিতে পুনর্বহাল করে এবং প্রমোশন দেয়। সামনেই খায়রুজ্জামানের খুনের মামলার বিচারের রায় হওয়ার কথা থাকলেও তাকে প্রমোশন দিয়ে সবাইকে বুঝিয়ে দেয়, তাকেই সে (খালেদা জিয়া) সমর্থন করে।’ এর অর্থটা কী দাঁড়ায়— প্রশ্ন রাখেন শেখ হাসিনা।

জিয়া ও খালেদা জিয়ার প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘এভাবেই তারা এ দেশে হত্যার রাজনীতি শুরু করেছে।’

দলীয় কার্যালয় থেকে দলের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সভায় সূচনা বক্তব্য রাখেন। পরে দলীয় নেতাদের মধ্যে বক্তৃতা করেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, কেন্দ্রীয় সদস্য আ খ ম জাহাঙ্গীর হোসেন, মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা আবু আহমেদ মান্নাফি ও মহানগর উত্তরের সভাপতি শেখ বজলুর রহমান।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন দলের প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আব্দুস সোবহান গোলাপ। অনুষ্ঠানের শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিবসহ পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট নিহতদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। বাসস।

অপারেশন ক্লিন হার্ট আওয়ামী লীগ সভাপতি আওয়ামী লীগের স্মরণসভা টপ নিউজ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা শেখ হাসিনা শোক দিবস স্মরণ সভা


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

ই-ক্যাবে প্রশাসক নিয়োগ
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৬:১৪

সম্পর্কিত খবর