ঐতিহ্যবাহী ভিমরুলির ভাসমান পেয়ারার হাট
১৮ আগস্ট ২০২০ ১৬:১৬
পিরোজপুরের কুড়িয়ানার পেয়ারার খ্যাতি রয়েছে দেশজুড়ে। বাংলার আপেলখ্যাত সুমিষ্ট পেয়ারা উৎপাদনের কারণে কুড়িয়ানা পরিচিতি পেয়েছে ‘পেয়ারার গ্রাম’ হিসেবে। এখানকার মানুষের আয়ের অন্যতম প্রধান উৎস পেয়ারা। শত বছর ধরে গ্রামগুলোতে বাণিজ্যিকভাবে পেয়ারা চাষ করা হচ্ছে। পেয়ারার মৌসুমে এখানে প্রতিদিন ভাসমান হাট বসে।
দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে ব্যবসায়ীরা হাটে পেয়ারা কিনতে আসেন এসব এলাকার মূল হাট-বাজারগুলো ভাসমান হওয়ায় নৌকায় নৌকায় চলে পেয়ারা বেচাকেনা। ঝালকাঠির জেলার স্বরূপকাঠি উপজেলার কুড়িয়ানা ভাসমান পেয়ারা বাজার বসে জলের দেশ বরিশাল এর দক্ষিণাঞ্চলের জেলা ঝালকাঠী ও স্বরূপকাঠীর বিভিন্ন জায়গায়। এর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় হলো ভিমরুলি, আটঘর, কুড়িয়ানা বাজার।
অনেকে এই ভাসমান বাজারগুলোকে থাইল্যান্ডের ফ্লোটিং মার্কেটের সাথে তুলনা করে থাকেন। প্রতিদিন কয়েক হাজার মণ পেয়ারা বেচাকেনা হয় এই অঞ্চলে। দূর-দূরান্ত থেকে নদীপথে পাইকাররা এসে এখানে পেয়ারা কিনেন।
জলে ভেসে বেচাকেনা ভিমরুলি হাটে [ছবি]
সংশ্লিষ্টরা জানান, বাংলাদেশের উৎপাদিত মোট পেয়ারার প্রায় ৮০ ভাগই উৎপাদিত হয় ঝালকাঠির বিভিন্ন গ্রামে। আটঘর, কুরিয়ানা, ডুমুরিয়া, বেতরা, ডালুহার, সদর ইত্যাদি এলাকার প্রায় ২৪,০০০ একর জমিতে পেযারার চাষ হয়! আর এ পেয়ারা বেঁচা-কেনার জন্য ঝালকাঠির ভিমরুলিতে জমে ওঠে বাংলাদেশের সবচে বড় ভাসমান পেয়ারা বাজার।
এই এলাকায় রয়েছে অসংখ্য পেয়ারার বাগান। চাষিরা সরাসরি বাগান থেকে পেয়ারা পেরে বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকারদের কাছে বিক্রি করে। প্রতি বছরের জুলাই, আগস্ট, সেপ্টেম্বর এই মৌসুমে কয়েকশ’ কোটি টাকার পেয়ারা উৎপাদন ও কেনাবেচা হয়।
ঐতিহ্যবাহী ভিমরুলি হাট খালের একটি মোহনায় বসে। তিনদিক থেকেই এই খালটি খোলা আর প্রশস্ত। ভিমরুলি গ্রামের আশেপাশে রয়েছে অসংখ্য পেয়ারা বাগান। পেয়ারা আর আখের মৌসুম শেষ হলে আসে আমড়ার মৌসুম।
স্থানীয় এক বাগানের মালিক চিন্ময় জানান, এখানে প্রতি কেজি পেয়ারার ৪ টাকা থেকে ৮ টাকা কেজি দরে বিক্রি করে। সকাল ৬টা থেকে বাগানে পেয়ারা তোলার কাজ শুরু করে বাগাানের মালিকরা নয়টা পর্যন্ত পেয়ারা তোলার পরে ভিমরুলের ভাসমান বাজারে নিয়ে আসে। এখানে জলের ওপরে সব বেচাকেনা হয় নৌকায়। তবে করোনাভাইরাসের কারণে এবার পাইকারি ব্যবসায়ীরা অনেক কম এসেছেন বলেও জানান তিনি।