অগ্রণী ব্যাংকে লেনদেন করা যাবে বিকাশের মাধ্যমেও
২১ আগস্ট ২০২০ ০০:১১
ঢাকা: অগ্রণী ব্যাংকের প্রায় এক কোটি গ্রাহক এখন থেকে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা বিকাশের মাধ্যমে ব্যাংকিং কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবেন। এই সেবা চালুর ফলে অগ্রণী ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে বিকাশ অ্যাকাউন্টে টাকা স্থানান্তর করা হবে। একইভাবে বিকাশ অ্যাকাউন্ট থেকেও আগ্রণী ব্যাংকের অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দেওয়াসহ সব ধরনের লেনদেন করা যাবে। শুধু তাই নয়, জরুরি প্রয়োজনে কিংবা ব্যাংক বন্ধ থাকলেও বিকাশের মাধ্যমে দ্রুত অর্থ লেনদেনও করা যাবে।
বৃহস্পতিবার (২০ আগস্ট) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল এক ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে অগ্রণী ব্যাংক ও বিকাশের মধ্যেকার এই ডিজিটাল লেনদেনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। বিকাশের কমিউনিকেশন বিভাগের প্রধান শামসুদ্দিন হায়দার ডালিমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গভর্নর আহমেদ জামাল, অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. জায়েদ বখত, ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও সিইও মোহাম্মদ শামস-উল ইসলাম, বিকাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদির, চিফ কমার্শিয়াল অফিসার মিজানুর রশীদসহ অন্যরা।
অনুষ্ঠানে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, অগ্রণী ব্যাংক ও বিকাশের যৌথ উদ্যোগ দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশের পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে নিলো। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে সাধারণ মানুষের জীবনমান উন্নয়নে সরকারের সদিচ্ছায় পাবলিক-প্রাইভেট পার্টনারশিপে অগ্রণী ব্যাংকের সেবা বিকাশের মাধ্যমে মানুষের ঘরে পৌঁছে যাচ্ছে। আমাদের দেশের মোবাইল আর্থিক সেবার খ্যাতি বিশ্বজোড়া, আজকের এই উদ্যোগে সেই সাফল্যে আরও একটি পালক যুক্ত হলো।
মন্ত্রী বলেন, কোভিড-১৯ সংক্রমণের এই সময়ে নিরাপদ দূরত্ব ও স্বাস্থ্য সুরক্ষা বজায় রেখে গ্রাহক ব্যাংকে না এসে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা এই সেবার আওতায় লেনদেন সংক্রান্ত সব ধরনের সুযোগ সুবিধা পাবে। বিকাশ অ্যাপে কয়েকটি ধাপে খুব সহজেই অগ্রণী ব্যাংকের গ্রাহকরা তথ্য সংযুক্ত করে প্রয়োজন অনুযায়ী লেনদেন করতে পারবেন। ফলে অগ্রণী ব্যাংকের অ্যাকাউন্ট থেকে বিকাশে টাকা এনে গ্রাহক প্রয়োজনমতো যেকোনো ইউটিলিটি বিল দিতে পারবেন কিংবা অন্য যেকোনো ধরনের পেমেন্ট করতে পারবেন। আবার ডিপিএস বা ঋণের কিস্তি জমা দেওয়া, প্রয়োজনে ব্যাংকে না গিয়ে অ্যাকাউন্টে টাকা জমা দেওয়াসহ আরও নানা সেবা এখন তারা ঘরে বসেই নিতে পারবেন।
এসময় অর্থমন্ত্রী সবাইকে সতর্ক করে দিয়ে বলেন, ডিজিটাল লেনদেনে যেন নিরাপত্তাটা নিশ্চিত হয়, সে বিষয়েও কাজ করতে হবে। ডিজিটাল করতে গিয়ে যেন কোনোভাবেই গ্রাহকের আস্থা না হারায়, সে বিষয়েও কঠোর নজরদারি বজায় রাখতে হবে।
সিনিয়র সচিব মো. আসাদুল ইসলাম বলেন, গ্রাহকবান্ধব সেবা দিতে অগ্রণী ব্যাংকের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়। এতে করে সব পর্যায়ের গ্রাহকের জন্য ব্যাংকিং সেবা আরও সহজলভ্য হলো।
অগ্রণী ব্যাংকের চেয়ারম্যান বলেন, ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে দেশের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কাছে মোবাইল ব্যাংকিং সেবা পৌছাতে অগ্রণী ব্যাংকের এই উদ্যোগ অগ্রণী ভূমিকা পালন করবে। এই উদ্যোগের ফলে ব্যাংকের গ্রাহক সেবার মানও বাড়বে।
অগ্রণী ব্যাংকের এমডি এবং সিইও বলেন, গ্রাহককে ব্যাংকে আসতে হবে না, ব্যাংক যাবে গ্রাহকের কাছে। বিকাশের মাধ্যমে অগ্রণী ব্যাংকের লেনদেনের সুযোগে এটাই বাস্তবতা। প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শুরু করে শহর-দেশজুড়ে আমাদের ৯৫৮টি শাখা এবং প্রায় ৪০০টি এজেন্ট ব্যাংকিংয়ের অগণিত গ্রাহক নতুন এই সেবার কল্যাণে তাদের প্রয়োজনমতো যেকোনো সময় লেনদেন করতে পারবেন।
বিকাশের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা কামাল কাদীর বলেন, আমাদের গ্রাহকবান্ধব ডিজিটাল লেনদেন প্রযুক্তিকে ব্যবহার করে ব্যাংকগুলো তাদের সেবাকে আরও সৃজনশীলভাবে গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দিতে পারে। কেবল অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা আনা এবং জমা দেওয়াই নয়, ঋণ প্রদান, বিনিয়োগের মতো ব্যাংকিং সেবাগুলোও গ্রাহকের জন্য আরও সহজলভ্য করা সম্ভব।
অগ্রণী ব্যাংক অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল ডিজিটাল লেনদেন বিকাশ