Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ছিল ইতিহাসের জঘন্যতম হামলা’


২১ আগস্ট ২০২০ ১১:২৩

ঢাকা: দিনটি ছিল শনিবার। ঢাকায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউতে আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে এক সমাবেশে জড়ো হয়েছিলেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে রাস্তায় একটি ট্রাকে অস্থায়ী মঞ্চ তৈরি করা হয়। বিকেল তিনটা থেকে দলটির কিছু মধ্যম সারির নেতা বক্তব্য দেওয়া শুরু করেন। আর জড়ো হওয়া নেতাকর্মীরা অপেক্ষায় থাকেন কখন আসবেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী তৎকালীন বিরোধীদলের নেতা শেখ হাসিনা। সমাবেশের প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি।

বিজ্ঞাপন

বিকেল ৩টা গড়িয়ে ৪টা। এ সময় আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতাদের বক্তব্য দেওয়ার পালা। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা এ সময়ও এসে পৌঁছাননি সমাবেশে। দলের নেতা-কর্মী এবং সমর্থকরা শেখ হাসিনার বক্তব্য শোনার অপেক্ষায় ছিলেন। পরে দলটির সভানেত্রী সমাবেশস্থলে এসে ট্রাকে স্থাপিত মঞ্চে উঠে বসেন। এরপরই পরপর ১২টি গ্রেনেড বিস্ফোরিত হয়।

ওই সময় আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা সভানেত্রীকে রক্ষার জন্য মানবঢাল তৈরি করে ঘিরে রাখেন তাকে। ফলে প্রাণে বেঁচে যান আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা।

গ্রেনেড হামলার ১৬ বছর পূর্তি আজ শুক্রবার। দেশের রাজনীতিবীদরা মনে করেন, ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলার উদ্দেশ্য ছিল আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্ব পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করে দেওয়া। মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধ্বংস করে দিয়ে দেশে সাম্প্রদায়িক জঙ্গি রাষ্ট্রে পরিণত করা।

বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা যে পটভুমিতে সৃষ্টি হয়েছিল সে পটভূমি অব্যাহত রয়েছে। সরকার পটভূমি চিহ্নিত করে যথাযথ পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছে। সিপিবির অগ্রগতিকে থামিয়ে দেওয়ার জন্য ২০০১ সালে  দলটির মহাসমাবেশে বোমা হামলা হয়েছিল। ওই সময় সমাবেশে হামলা করে প্রতিক্রিয়াশীল ঘাতক চক্র। আর ২০০৪ সালে আওয়ামী লীগের সমাবেশে গ্রেনেড হামলা করে আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করে দেওয়ার জন্য।’

মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘আজ আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় দেশ পরিচালনা করছে তারা। তারা বিরোধীদলে থাকার সময় জনগনের সমস্য সমাধানের কথা বললেও এখনও আওয়ামী লীগ জনগণের সমস্য সমাধান করতে পারেনি। জনগনের সমস্যগুলো সমাধান করতে হবে। আর তা না হলে আর্ন্তজাতিক অপশক্তির উত্থান হবেই।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘ক্রসফায়ার নামে বিনা-বিচারে মানুষ হত্য চলছে দেদারছে। অথচ সরকার জনগণের সমস্যগুলো সমাধান করতে পারেনি। আমি মনে করি, এই সরকারের সময় জনগণের সমস্যা সমাধান করা সম্ভব হবে না।’

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা বিষয়ে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও জাতীয় সংসদের বিরোধীদলের উপনেতা জি এম কাদের বলেন, ‘২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বাংলাদেশের ইতিহাসের একটি দুর্ভাগ্যজনক জঘন্যতম হামলা। তৎকালীন বিএনপি সরকারের সময় প্রতিপক্ষের নেতৃত্ব শূন্য করে দেওয়ার জন্য শীর্ষ নেতাদের হত্যা করতে গ্রেনেড হামলা করা হয়েছিল।’

তিনি বলেন, ‘বর্তমান সরকার গ্রেনেড হামলাকরীদের দমন করতে পেরেছে। সরকার জজ মিয়া নাটকের অবসান ঘটিয়ে আক্রমণকারীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় এনেছে। যদিও বিচারকার্যে দীর্ঘসূত্রিতা চলছে। এই দীর্ঘসূত্রিতা দেশে নতুন নয়। তারপরও আমি মনে করি, জঘন্যতম গ্রেনেড হামলার বিচার হচ্ছে। এটিই বড় কথা।

গণফোরামের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং সাবেক এমপি মোস্তফা মহসীন মন্টু বলেন, ‘কোনো হত্যাকাণ্ডই মেনে নেওয়া যায় না। ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ছিল বাংলার ইতিহাসের একটি জঘন্যতম হামলা। রমনা বটমূলে এবং সিপিবির মহাসমাবেশে বোম হামলার ঘটনা ঘটেছে। এসব হামলা মেনে নেওয়া যায় না।’

তিনি বলেন, ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা যারাই করেছে তাদেরকে এবং মদদদাতাদের যেন সঠিকভাবে চিহ্নিত করে বিচার করা উচিৎ।’

বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া বলেন, ‘২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা ছিল সুপরিকল্পিত। যারা হামলা করেছে তারা বাংলাদেশকে মেনে নিতে পারেনি। ওদের উদ্দেশ্য ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে চিরতরে ধ্বংস করে দেওয়া। দেশে মৌলবাদী শক্তিকে প্রতিষ্ঠিত করা।’

২১ আগস্ট ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর