‘২১শে আগস্ট গ্রেনেড হামলার দায় বিএনপি-জামায়াত এড়াতে পারে না’
২৩ আগস্ট ২০২০ ০০:৪৫
ঢাকা: ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট যে নির্মম গ্রেনেড হামলা চালানো হয় বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে তার দায় তৎকালীন ক্ষমতাসীন বিএনপি-জামায়াত সরকার এড়াতে পারে না। ২১শে আগস্ট পৃথিবীর ইতিহাসে অন্যতম একটি নির্মম ঘটনা। এই ঘটনাটির সঙ্গে জড়িত হরকাতুল জিহাদ আর তারাই এটি সংগঠিত করেছে। যেহেতু বিএনপি-জামায়াত তখন রাষ্ট্র ক্ষমতায় ছিল, তাই এর দায় কোনোভাবেই তারা এড়াতে পারে না।
শনিবার (২২ আগস্ট) ‘সারাবাংলা ফোকাস: ২১ আগস্ট ২০০৪’ ভাচুর্য়াল অনুষ্ঠানে বক্তরা এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে অতিথি ছিলেন সাবেকমন্ত্রী ও সংসদ সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন সারাবাংলা ডটনেটের স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট এমএকে জিলানী।
বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বাংলাভাই ও আব্দুর রহমানকে গ্রেফতার করে বিচার করেছিল বিএনপি। কিন্তু এখন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানকে জড়িয়ে বিচার করা রাজনৈতিক প্রতিহিংসা ছাড়া কিছু নয়। ২১শে আগস্ট পৃথিবীর অন্যতম নির্মম একটি ঘটনা। যেহেতু বিএনপি জামায়াত তখন ক্ষমতায় ছিল, তাই তারা এর দায় এড়াতে পারে না। এমনকি এই ঘটনায় যে পদক্ষেপগুলো নেওয়া দরকার ছিল, সেদিন সেগুলো নেওয়া হয়নি। অপরদিকে আইনি প্রক্রিয়াগুলো যথাযথভাবে না নিয়ে তৎকালীন প্রশাসন ইচ্ছে মতো ক্রসফায়ার, মামলা ও গ্রেফতার করেছে। সেদিন তাদের উচিত ছিল লাঠিচার্জ না করে মানুষের সেবা দেওয়া। সেদিন প্রশাসন চরম ব্যর্থ হয়েছে। সব মিলিয়ে ক্ষমতায় যেহেতু বিএনপি জামায়াত ছিলো তাই দায় এড়ানো সম্ভব না।’
তিনি আরও বলেন, ‘বিএনপি সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় কোন জঙ্গি হামলা হয়নি। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকার সময় জঙ্গি হামলা শুরু হয়। সব মিলিয়ে আমি বলতে চাই, ২১ শে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় যারা জড়িত তাদের যেন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হয়। বিএনপি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় রাজনীতি করে। পরপর যে দুটি নিবার্চন হয়েছে সেখানে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে। একটি নিবার্চন দেওয়া হোক তাহলে বোঝা যাবে বিএনপির জনপ্রিয়তা আছে কি না।’
সাবেক মন্ত্রী ও সংসদ সদস্য মুহাম্মদ ফারুক খান বলেন, ‘২১শে আগস্টের ঘটনা রাজনীতিকে ক্ষতি করেছে। আওয়ামী লীগ সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের রাজনীতি করে না। জামায়াত একটি সন্ত্রাসী সংগঠন সেটা আগে থেকেই জানা ছিল। আওয়ামী লীগকে ধ্বংস করতে গ্রেনেড হামলা করা হয়। আমি চাই, এই হামলার বিচার কার্যক্রম যেন দ্রুততার সঙ্গে শেষ হয়। যার মাধ্যমে বাংলাদশে থেকে এই ধরনের কার্যক্রম যেন চিরতরে শেষ হয়। এছাড়া বিএনপির সঙ্গে অবিশ্বাসের বড় একটি কারণ ১৫ই আগস্ট। কারণ বঙ্গবন্ধুর হত্যার সঙ্গে জিয়ার সম্পৃক্ততার প্রমাণ মেলে।’
তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে সম্পৃক্তদের খুঁজে বের করতে একটি কমিশন গঠন জরুরি। ২১ শে আগস্টের রায় দ্রুত কার্যকর করা। খালেদা জিয়ার ১৫ আগস্ট মিথ্যা জন্মদিন পালন রাজনীতির জন্য খারাপ। ২০০৪ সালের ২১ শে আগস্ট ১৬টি গ্রেনেড ছোঁড়া হয়। যার মধ্যে ১৩টি গ্রেনেড সেদিন বিস্ফোরিত হয়। আল্লাহর রহমেত সেদিন বেঁচে গিয়েছিলেন শেখ হাসিনা। এমনকি তাকে হত্যা করতে গাড়িতে গুলি করা হয়। তার দেহরক্ষীও মারা যায়। ৫ থেকে ৭শ নেতাকর্মী সেদিন আহত হয়। আইভি রহমানসহ ২৪ নেতাকর্মী সেদিন মারা যায়।
সেদিনের ঘটনার বিবরণ দিয়ে ফারুক খান আরও বলেন, ‘সেদিন পুলিশবাহিনী আমাদের সহায়তা না করে লাঠিচার্জ করে। যেন গ্রেনেড হামলাকারীরা পালিয়ে যেতে পারে। সরকারি কোনো হাসপাতালে আমরা সেবা পাইনি। তখনকার স্বাস্থ্যমন্ত্রী হাসপাতালে একবারও কাউকে দেখতে যাননি। বিশ্বের ইতিহাসে জঘন্যতম রাজনীতি এমন হয়নি কোথাও। তাই একুশে আগস্ট গ্রেনেড হামলায় যারা জড়িত তাদের দ্রুত বিচার করতে হবে।’