‘৭৫-এর অপশক্তিই ২১শে আগস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিল’
২৩ আগস্ট ২০২০ ০১:০১
ঢাকা: আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেছেন, পাকিস্তানের প্রতিনিধি আর তাদের আন্তর্জাতিক মোড়লদের প্রতিনিধি খন্দকার মোশতাক ও খুনি জিয়াউর রহমান ষড়যন্ত্র করে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। যে খুনিরা ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করছে, সেই অপশক্তিই ২০০৪ সালের ২১শে আগস্ট শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিল।
শনিবার (২২ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর নয়াবাজার হাজী জুম্মন কমিউনিটি সেন্টারে বংশাল থানা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনায় অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।
১৫ আগস্টের নির্মম হত্যাকাণ্ডের ঘটনা স্মরণ করে এসএম কামাল বলেন, ‘সেদিন কারা হত্যা করেছে? যে পাকিস্তান বঙ্গবন্ধুর কাছে পরাজয় বরণ করেছে। যে পাকিস্তানের সৈনিকরা নাকে খত দিয়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল। যে পাকিস্তানের তথাকথিত লৌহমানব আইয়ুব খান পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছিল। সেই পাকিস্তানের প্রতিনিধি আর তাদের আন্তর্জাতিক মোড়লদের প্রতিনিধি খন্দকার মোশতাক আর খুনি জিয়াউর রহমান সেদিন ষড়যন্ত্র করে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বাংলাদেশ আবার পাকিস্তানের ধারায় ফিরে যায়। তারা শুধু বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেনি, হত্যা করেছিল বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে, হত্যা করেছিল বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে, হত্যা করেছিল বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধকে।’
বঙ্গবন্ধু হত্যা করার পর কেমন হয়েছিল বাংলাদেশ? প্রশ্ন তুলে এসএম কামাল বলেন, ‘সারাদেশের ক্যান্টনমেন্টগুলোতে সিপাহী জোয়ানদের স্ত্রী-সন্তানদের আর্তনাদ আহাজারিতে ক্যান্টনমেন্ট ভারি হয়ে গিয়েছিল। আওয়ামী লীগের সাড়ে হাজার নেতাকর্মীকে হত্যা, গুম খুন করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর সেই অন্ধকার থেকে জননেত্রী শেখ হাসিনা এই আওয়ামী লীগের হাল ধরেন। আবার দেশের মানুষের ভোটের অধিকার, ভাতের অধিকার, গনতন্ত্রের অধিকার ফিরিয়ে দেন।’
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, ‘আমরা এই শোক দিবস পালন করছি। কিন্তু ২০০৪ সালের ২১শে আগস্টের কথা আপনারা একবার স্মরণ করেন। সেদিন আমিও ছিলাম, আমিসহ অনেকেই গ্রেনেডে আহত হয়েছেন। সেদিন ষড়যন্ত্র ছিল জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যা করার। যে শক্তি ৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে, তার পরিবারকে হত্যা করেছে, সেই অপশক্তিই শেখ হাসিনাকে হত্যা করতে চেয়েছিল। আপনাদের দোয়া ভালবাসায় আল্লাহ সেদিন শেখ হাসিনাকে রক্ষা করেছেন।’
এসএম কামাল বলেন, ‘আমাদের অহংকার, আমাদের গর্ব, আমরা আওয়ামী লীগ করি। আমাদের অহংকার, আমরা শেখ মুজিবের কর্মী। যে শেখ মুজিব মানে বাংলাদেশ। আমরা সেই দলের কর্মী। আমরা অহংকার করি, বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠাতা আওয়ামী লীগের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব। আর আজকে আমাদের অহংকার বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনা। শত প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে তিনি মানুষের কথা ভাবেন। মানুষের কথা চিন্তা করেন। স্বপ্ন দেখেন, স্বপ্ন বাস্তবায়ন করেন। সাহসিকতার সঙ্গে, দক্ষতার সঙ্গে সব ক্রাইসিস অতিক্রম করেন।’
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘করোনার মধ্যেও আম্পান এসেছে। সেদিন ছিল শবে কদরের রাত। আমরা সবাই ঘুমিয়েছিলাম। কিন্তু বাংলাদেশের একজন ঘুমাননি। তিনি হচ্ছেন শেখ হাসিনা। সারারাত জেগে তাহাজ্জুদের নামাজ পড়েছেন।’
বংশাল থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম মোস্তফার সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। এছাড়া ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ দক্ষিণের সভাপতি আবু আহম্মেদ মান্নাফী, সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, ঢাকা-৭আসনের সংসদ সদস্য হাজী সেলিম প্রমুখ।