তিন মাসে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩৬০৬ কোটি টাকা
২৪ আগস্ট ২০২০ ১৪:০৭
ঢাকা: করোনাভাইরাসের কারণে সৃষ্ট অর্থনৈতিক সংকট মোকাবিলায় ব্যাংকগুলোকে নানা সুযোগ-সুবিধা দিলেও খেলাপি ঋণের পরিমাণ বেড়ে চলেছে। চলতি বছরের এপ্রিল থেকে জুন পর্যন্ত তিন মাসে ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েছে ৩ হাজার ৬০৬ কোটি টাকা। ফলে চলতি বছরের জুন পর্যন্ত সময়ে দেশের খেলাপি ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৯৬ হাজার ১১৬ কোটি টাকা।
বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোর কাছ থেকে সর্বশেষ গত ৩০ জুন পর্যন্ত পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বাংলাদেশ ব্যাংকের তৈরি করা এক প্রতিবেদন এ চিত্র উঠে এসেছে। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বাংলাদেশ ব্যাংকের খেলাপি ঋণের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, চলতি বছরের জুন পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০ লাখ ৪৯ হাজার ৭২৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপি ঋণের পরিমাণ ৯৬ হাজার ১১৬ কোটি টাকা। এটি মোট বিতরণকৃত ঋণের ৯.১৬ শতাংশ। চলতি বছরের মার্চ পর্যন্ত ব্যাংকগুলোর বিতরণ করা ঋণের পরিমাণ ছিল ১০ লাখ ২৪ হাজার ৪৯৮ কোটি টাকা। এর মধ্যে খেলাপির পরিমাণ ৯২ হাজার ৫১০ কোটি টাকা। যা মোট ঋণের ৯.০৩ শতাংশ।
এর আগে, গত বছরের ডিসেম্বরে ১০ লাখ ১১ হাজার ৮২৮ কোটি টাকা ঋণের মধ্যে খেলাপির পরিমাণ ছিল ৯৪ হাজার ৩৩১ কোটি টাকা বা ৯.৩২ শতাংশ।
সূত্র জানায়, মহামারি করোনাভাইরাসে ব্যবসা-বাণিজ্য স্থবির হয়ে পড়ে। এ সঙ্কটকালে ঋণ খেলাপিদের বিশেষ সুবিধা দেয় সরকার। এর মধ্যে রয়েছে আগামী সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কিস্তি না দিলেও খেলাপি হিসেবে চিহ্নিত করা হবে না। এর আগে করোনাভাইরাসের কারণে জানুয়ারি থেকে জুন পর্যন্ত ঋণ শ্রেণিকরণে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পরে মহামারির প্রকোপ দীর্ঘায়িত হওয়ায় আরও তিন মাস বর্ধিত করে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয়। অর্থাৎ চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোনো ঋণের শ্রেণিমান পরিবর্তন করা যাবে না। যে ঋণ যে শ্রেণিতে আছে, সে অবস্থাতেই থাকবে।
শুধু তাই নয়, ব্যাংকগুলোর খেলাপি ঋণ কমাতে সরকারের নির্দেশনায় পুনঃতফসিলে গণছাড় দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ২ শতাংশ ডাউন পেমেন্টে এক বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ১০ বছরে ঋণ পরিশোধের সুযোগ পায় ঋণখেলাপিরা। ২০১৯ সালের ১৬ মে নীতিমালায় এ ছাড় দেওয়ার পর থেকে বিশেষ বিবেচনায়সহ গত বছর পুনঃতফসিল হয়েছে ৫০ হাজার কোটি টাকার বেশি খেলাপি ঋণ। এতো সব সুযোগ-সুবিধা নেওয়ার পরও ব্যাংক খাতের খেলাপি ঋণের পরিমাণ বাড়ছে।