Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘করোনায় ভ্যাকসিন একমাত্র সমাধান নয়, তবে নীতিমালা দরকার’


২৪ আগস্ট ২০২০ ১৯:৩৫

ঢাকা: করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মোকাবিলায় ভ্যাকসিনই একমাত্র সমাধান নয়। তবে এই ভাইরাসের ভ্যাকসিন পাওয়া গেলে তা প্রয়োগ করার জন্য একটি নীতিমালা দরকার। তাছাড়া ভ্যাকসিন কিভাবে পাওয়া যাবে, কী পরিমাণ পাওয়া যাবে, কিভাবে সেগুলো ব্যবহার করা হবে— সবকিছু মিলিয়ে একটি ফ্রেমওয়ার্ক দরকার। তা না হলে সামনের দিনে সমস্যা দেখা দিতে পারে। আর সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে তথ্যের অবাধ প্রবাহ প্রয়োজন। তাতে করে সংশ্লিষ্ট খাতের অভিজ্ঞ যারা আছেন, তারা নিজেদের অভিজ্ঞতাকে দেশের মানুষের জন্য প্রয়োগের সুযোগ পাবেন।

বিজ্ঞাপন

সোমবার (২৪ আগস্ট) বিকেলে সারাবাংলা ডটনেটের নিয়মিত আয়োজন ‘সারাবাংলা ফোকাস’ অনুষ্ঠানে যুক্ত হয়ে অতিথিরা এসব কথা বলেন। ‘ভ্যাকসিন ডিপ্লোম্যাসি’ শীর্ষক এই পর্বে অতিথি হিসেবে যুক্ত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. খলিলুর রহমান, স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ (সিডিসি) শাখার সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. বেনজির আহমেদ ও জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক সাহাব এনাম খান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সারাবাংলা ডটনেটের স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট এমএকে জিলানী।

বিজ্ঞাপন

আলোচনায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. খলিলুর রহমান বলেন, ভ্যাকসিনের বিষয়ে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে মার্চ-এপ্রিল থেকে আমরা যোগাযোগ করছি। ভ্যাকসিন উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত সবার সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ অব্যাহত আছে। প্রধানমন্ত্রী আমাদের সেভাবেই নির্দেশনা দিয়েছেন। ভ্যাকসিন কেনার জন্য আমাদের যথেষ্ট ফান্ডও রয়েছে। যদি আমাদের ভ্যাকসিন কিনতেও হয়, তাহলেও আমরা প্রতিটি মানুষের জন্য ভ্যাকসিন নিশ্চিত করব।

তিনি আরও বলেন, সবার জন্য ভ্যাকসিন নিশ্চিত করতে একটি ফ্রেমওয়ার্ক প্রয়োজন। আমরা এখনো জানি না ভ্যাকসিন কিভাবে আসবে এবং কিভাবে দেওয়া হবে বা কারা পাবে। তাই এগুলোর জন্য আলাদা কমিটি দরকার। চীন, রাশিয়া, ভারতসহ যারা ভ্যাকসিন নিয়ে কাজ করছে, তাদের সাথে আমাদের পক্ষ থেকে যোগাযোগ রয়েছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক পরিচালক অধ্যাপক ড. বেনজির আহমেদ বলেন, এরই মধ্যে বেশকিছু দেশ ভ্যাকসিন ছাড়াই করোনা নিয়ন্ত্রণ করেছে। যেমন চীন এখন সবচেয়ে সফলভাবে করোনা নিয়ন্ত্রণ করছে। তাই ভ্যাকসিন এক্ষেত্রে একমাত্র সমাধান নয়। যে ভাইরাসটি সারাবিশ্বকে আক্রান্ত করেছে, তাকে ছোট করে দেখার অবকাশ নেই। ফলে একে প্রতিরোধ করতে হবে নানামুখী উপায়ে। অনেক দেশই এখন করোনার ভ্যাকসিন তৈরির পথে রয়েছে। কিন্তু কোনো ভ্যাকসিন শেষ পর্যন্ত কতটুকু কার্যকর হবে কিংবা আদৌ কার্যকর হবে কি না, সেটা নিয়েও আমাদের সন্দেহ রয়েছে। কারণ ভ্যাকসিন প্রস্তুত হওয়ার পরও সেটি কাজ করছে না— এমন উদাহরণও অনেক আছে। আর সবচেয়ে কম সময়ে যে ভ্যাকসিন তৈরি হয়েছে, সেটির পেছনেও সময় লেগেছে ১৬ বছর। ফলে এসব বিষয় আমাদের মাথায় রাখতে হবে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের সাবেক এই কর্মকর্তা বলেন, অনেক দেশ ভ্যাকসিন তৈরি করছে। সেগুলো আমরা কতটুকু পাব, কোন ভ্যাকসিনটি পাব, অক্সফোর্ড-রাশিয়া নকি চীনের ভ্যাকসিন পাব— এইসব বিষয় মাথায় রেখে একটি সার্বিক নীতিমালা দরকার ছিল। করোনা নিয়ে আমাদের তথ্যের অবাধ প্রবাহ থাকা উচিত। সেটা থাকলে আমাদের মতো যারা আছি, আমাদের অভিজ্ঞতাটা আমরা সরকারের নীতি নির্ধারণের জন্য কাজে লাগাতে পারতাম, পরামর্শটা দিতে পারতাম। কিন্তু সেই তথ্যের অবাধ প্রবাহ নেই। ফলে আমাদের অভিজ্ঞতা থেকে কিন্তু দেশ বঞ্চিত হচ্ছে। এছাড়া করোনা নিয়ে সার্বিকভাবে সরকারের যতটুকু প্রস্তুতি থাকা উচিত ছিল, আমরা ততটুকু দেখিনি।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের অধ্যাপক সাহাব এনাম খান বলেন, ভ্যাকসিন যেগুলো আসবে, সেগুলো কতটুকু কার্যকর সেটি নিয়ে আমাদের গবেষণার প্রয়োজন। ভ্যাকসিন পেতে আমাদের মতো করে প্রস্তুতি আমাদের থাকবে। সঙ্গে এটিও দেখা দরকার— বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সঙ্গে বসে ইউনিসেফ একটি তালিকা করেছে, কারা কারা ভ্যাকসিন পাবে। বলা হচ্ছে ২ বিলিয়ন ডোজ ভ্যাকসিন লাগবে দ্রুততম সময়ের মধ্যে। ২০২১ সালে লাগবে ৩ বিলিয়ন ডোজ ভ্যাকসিন। ২১ সালের শেষে ৭ দশমিক ৪ বিলিয়ন ডোজ আর ২০২৩ সালে ১৪ দশমিক ১ বিলিয়ন ডোজ ভ্যাকসিন লাগবে। এখানে বড় ধরনের বৈশ্বিক রাজনীতি আছে।

তিনি আরও বলেন, ভ্যাকসিন তৈরি করে বিতরণ করাটাও কঠিন হয়ে যাবে। ভ্যাকসিন উৎপাদন যারা করছে, তাদের সব আশাবাদ বাস্তবে রূপ নিলেও ভ্যাকসিনের চাহিদার মোট ১৯ শতাংশ ২০২০ সালে পাওয়া যাবে। ২০২৩ সালে ভ্যাকসিনের ৪০ শতাংশ আসবে চীন থেকে, আর ২২ শতাংশ আসবে ভারত থেকে। বাকি ডোজ আসবে সারাবিশ্ব থেকে। সুতরাং ভ্যাকসিনের উৎপাদন বড় একটি ক্ষেত্র। তাই ভ্যাকসিন নিয়ে আমাদের সব ধরনের প্রস্তুতি থাকতে হবে।

অতিরিক্ত সচিব ড. খলিলুর রহমান অধ্যাপক ড. বেনজির আহমেদ অধ্যাপক সাহাব এনাম খান করোনা ভ্যাকসিন ভ্যাকসিন ডিপ্লোম্যাসি সারাবাংলা ফোকাস

বিজ্ঞাপন

নামেই শুধু চসিকের হাসপাতাল!
২২ নভেম্বর ২০২৪ ২২:০৬

আরো

সম্পর্কিত খবর