১১ ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি ১০ হাজার ১৭৭ কোটি টাকা
২৫ আগস্ট ২০২০ ০০:২৩
ঢাকা: করোনাভাইরাসের কারণে ব্যাংকগুলোকে বিশেষ ছাড় দেওয়ার পরেও ব্যাংকিং খাতে খেলাপি ঋণের বিপরীতে প্রয়োজনীয় প্রভিশন সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়েছে ১১ ব্যাংক। এর মধ্যে সাতটি বেসরকারি ব্যাংকসহ রাষ্ট্রায়ত্ত চারটি ব্যাংকও রয়েছে। চলতি বছরের জুন পর্যন্ত এই ১১টি ব্যাংকের প্রভিশন ( সঞ্চিতি) ঘাটতির পরিমাণ ১০ হাজার ১৭৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে সরকারি চার ব্যাংকের ঘাটতি ছয় হাজার ১৩ কোটি টাকা। আর সাতটি বেসরকারি ব্যাংকের ঘাটতি চার হাজার ১৬৪ কোটি টাকা। বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনে এ চিত্র উঠে এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায়, প্রভিশন ঘাটতিতে থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঘাটতি রয়েছে বেসিক ব্যাংক। গত জুন শেষে বেসিক ব্যাংকের ঘাটতি দাঁড়িয়েছে তিন হাজার ৩১৪ কোটি ১৭ লাখ টাকা। এছাড়াও রূপালী ব্যাংকের ৯২০ কোটি ৫০ লাখ টাকা, সোনালী ব্যাংকের ৮৯২ কোটি ৬৫ লাখ টাকা এবং অগ্রণী ব্যাংকের ৮৮৫ কোটি ৭১ লাখ টাকা প্রভিশন ঘাটতি রয়েছে।
অন্যদিকে বেসরকারি খাতের সাতটি ব্যাংকের মধ্যে সবচেয়ে বেশি প্রভিশন ঘাটতি ন্যাশনাল ব্যাংকের। গত জুন শেষে ব্যাংকটির ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৬৯৬ কোটি ৮৭ লাখ টাকা। এছাড়া এবি ব্যাংকের এক হাজার ২১৪ কোটি ৮৩ লাখ টাকা, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংকের ৫৬৫ কোটি ৬১ লাখ টাকা, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের ২৪৪ কোটি টাকা, ঢাকা ব্যাংকের ২০৩ কোটি ৩৬ লাখ টাকা, সোস্যাল ইসলামী ব্যাংকের ১৯৮ কোটি টাকা এবং ট্রাস্ট ব্যাংকের প্রভিশন ঘাটতি দাঁড়িয়েছে ৪১ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। তবে কিছু ব্যাংকের প্রভিশন উদ্বৃত্ত থাকায় সার্বিক ঘাটতির পরিমান দাঁড়িয়েছে ৪ হাজার ৪৯৯ কোটি ১১ লাখ টাকা।
জানা গেছে, ব্যাংক ব্যবস্থার ঋণের শ্রেণিমান অনুযায়ী, নির্ধারিত পরিমাণ নিরাপত্তা সঞ্চিতির অর্থ সংরক্ষণের বিধান রয়েছে। বিশেষ করে আমানতকারীদের অর্থ যাতে কোনো প্রকার ঝুঁকির মুখে না পড়ে সেজন্য বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নানা বিধিনিষেধ রয়েছে। যার একটি হলো প্রভিশন সংরক্ষণ। বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী, ব্যাংকের অশ্রেণিকৃত বা নিয়মিত ঋণের বিপরীতে দশমিক ২৫ থেকে ৫ শতাংশ হারে প্রভিশন রাখতে হয়। নিম্নমান বা সাব স্ট্যান্ডার্ড ঋণের বিপরীতে রাখতে হয় ২০ শতাংশ, সন্দেহজনক ঋণের বিপরীতে ৫০ শতাংশ এবং মন্দ বা কুঋণের বিপরীতে ১০০ শতাংশ প্রভিশন সংরক্ষণ করতে হয়। কিন্তু উল্লিখিত ১১টি ব্যাংক বিভিন্ন ধরনের ঋণের বিপরীতে প্রয়োজনীয় প্রভিশন রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।
উল্লেখ্য, প্রভিশন ঘাটতি থাকলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কোনো লভ্যাংশ ঘোষণা করতে পারে না। এছাড়া যেসব ব্যাংক প্রয়োজনীয় প্রভিশন সংরক্ষণে ব্যর্থ হয়, তাদের মূলধন ঘাটতিতে পড়ার আশঙ্কাও থাকে।
১০ হাজার ১৭৭ কোটি টাকা ১১ ব্যাংক প্রভিশন ঘাটতি বাংলাদেশ ব্যাংক