নানা নাটকীয়তার পর ফের সোনিয়াই কংগ্রেস প্রধান
২৫ আগস্ট ২০২০ ১৩:৩৩
ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে দিনভর উত্তেজনা, শোরগোল এবং নাটকীয়তা শেষে ফের ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস’র (আইএনসি) অন্তর্বর্তী সভাপতির দায়িত্ব পেয়েছেন সোনিয়া গান্ধী। খবর ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস।
এর আগে, নেতৃত্ব নিয়ে জ্যেষ্ঠ নেতাদের মধ্যে অসন্তোষের জেরে স্থানীয় সময় সোমবার (২৪ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে কংগ্রেস পার্টির ওয়ার্কিং কমিটি অনলাইনে এক ভার্চুয়াল বৈঠকে বসে। শুরু থেকেই নানা পক্ষের বক্তব্য নিয়ে বৈঠকে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। এক পর্যায়ে পদত্যাগের সিদ্ধান্তের কথা জানান সোনিয়া। পরে, দলীয় নেতাদের অনুরোধে তিনি পদত্যাগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন।
এদিকে, ভারতীয় উপমহাদেশের শতাব্দী প্রাচীন দল কংগ্রেস পার্টির অন্তর্দ্বন্দ্ব এখন আর গোপন নেই। সম্প্রতি দলের ২৩ জ্যেষ্ঠ নেতা ‘দলীয় নেতৃত্বে’ পরিবর্তন চেয়ে চিঠি লেখার পর দলের শীর্ষ পদ থেকে অব্যাহতি চেয়ে ‘পূর্ণ সময়ের সভাপতি’ মনোনয়নের সুপারিশ করেছিলেন সোনিয়া গান্ধী।
তবে, কলকাতা থেকে প্রকাশিত আনন্দবাজার পত্রিকা জানাচ্ছে, আপাতত সোনিয়া দলীয় প্রধানের পদে থাকলেও, ওয়ার্কিং কমিটি নতুন সভাপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া শুরুর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
প্রসঙ্গত, গতবছর জাতীয় নির্বাচনে কংগ্রেসের ভরাডুবির পর নেতাদের শত অনুরোধ উপেক্ষা করে সভাপতির পদ থেকে রাহুল গান্ধী সরে দাঁড়ানোর পর নেতৃত্ব নিয়েছিলেন সোনিয়া। রাহুল দায়িত্ব ছাড়ার সময় ওয়ার্কিং কমিটিকে গান্ধী পরিবারের বাইরে থেকে নেতা খুঁজে নেওয়া কথাও বলেছিলেন। তখন দলীয় নেতাদের অনুরোধেই অন্তর্বর্তী সভাপতি হতে রাজি হন সোনিয়া।
সোমবারের (২৪ আগস্ট) বৈঠকে সোনিয়া বা রাহুল কাউকেই আর স্বতঃস্ফূর্তভাবে দলের দায়িত্ব নিতে ইচ্ছুক দেখা যায়নি।
ওদিকে, সোনিয়াকে চিঠি লিখে দল পরিচালনা নিয়ে প্রশ্ন তোলা ২৩ নেতার অনেকের সঙ্গেই ভারতের ক্ষমতাসীন দল ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) সম্পর্ক রয়েছে এমন অভিযোগ তুলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন রাহুল গান্ধী – স্থানীয় গণমাধ্যমে এ ধরনের খবর প্রকাশের পর তেলেবেগুনে জ্বলে উঠেন জ্যেষ্ঠ নেতারা। জরুরি ভিত্তিতে ডাকা কংগ্রেসের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠকে এ নিয়ে রীতিমত শোরগোল বেঁধে যায়।
এ ব্যাপারে আনন্দবাজার পত্রিকা জানায়, যে ২৩ নেতা সোনিয়াকে চিঠি লিখেছিলেন তাদের মধ্যে গোলাম নবী আজাদ, কপিল সিব্বল, আনন্দ শর্মার মতো রাজ্যসভার সদস্য, শশী থারুর, মণীশ তিওয়ারির মতো লোকসভার সদস্য, বীরাপ্পা মইলি, রেণুকা চৌধুরীর মতো সাবেক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, জিতেন প্রসাদ, মিলিন্দ দেওরা, সন্দীপ দীক্ষিতের মতো তরুণ নেতা, ভূপিন্দ্র সিংহ হুড়া, পৃথ্বীরাজ চহ্বাণদের, রাজেন্দর কউর ভট্টলদের মতো সাবেক মুখ্যমন্ত্রীরা রয়েছেন।
এই নেতাদের বিরুদ্ধে রাহুলের অভিযোগের প্রতিক্রিয়ায় সবচেয়ে সরব প্রতিবাদ জানান গোলাম নবী আজাদ ও কপিল সিব্বল। আজাদ চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগের প্রমাণ দিতে পারলে রাজনীতি ছেড়ে দেবেন তিনি।
মাইক্রো ব্লগিং ওয়েবসাইট টুইটারেও ওই নেতাদের বাদানুবাদ করতে দেখা গেছে।
অপরদিকে কংগ্রেসের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, অন্তর্বর্তী সভাপতির মেয়াদ সর্বোচ্চ এক বছর। এরই মধ্যে সোনিয়ার সেই মেয়াদ পার হয়ে গেছে। এছাড়াও, যদি সভাপতির মৃত্যু হয় বা তিনি পদত্যাগ করেন তবে অল ইন্ডিয়া কংগ্রেস কমিটির (এআইসিসি) সবচেয়ে প্রবীণ সাধারণ সম্পাদক অস্থায়ীভাবে দায়িত্ব নিয়ে একজন সভাপতি নির্বাচন করবেন।
ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেস (আইএনসি) কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধী সোনাইয়া গান্ধী