Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

‘বঙ্গবন্ধু হত্যায় উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিশন দরকার’


২৬ আগস্ট ২০২০ ০০:০৯

ঢাকা: ক্ষমতার পট পরিবর্তনের জন্য বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করেতই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সমস্ত তথ্য-উপাত্ত উদঘাটনের জন্য একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিশন দরকার। কমিশনের রিপোর্ট ইতিহাসের একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে। তাহলে অনাগত ভবিষ্যৎ বলতে পারবে, এই হত্যাকাণ্ডে কারা কারা জড়িত ছিল। আর এই হত্যাকাণ্ডে জিয়াউর রহমানের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদ ছিল। তার মরণোত্তর বিচার করা জরুরি।

মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা কাউন্সিল (বিএআরসি) মিলনায়তনে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত শোক দিবসের এক আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম, সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। তাদের বক্তব্যে এসব কথা উঠে আসে।

কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড ইতিহাসের নির্মম হত্যাকাণ্ড। এর আগে রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডে পরিবারসহ কাউকে হত্যা করা হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করতেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছিল। মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি, যারা পরাজয়কে মেনে নিতে পারেনি, তার সঙ্গে একটি আন্তর্জাতিক চক্র, যারা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানকে সহায়তা করেছে, তারাই সম্মিলিতভাবে বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে। স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করতেই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে। মহাকাব্যের মহানায়ক ছিলেন বঙ্গবন্ধু। স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি সব সময় বঙ্গবন্ধু হত্যা করতে চেয়েছে। বঙ্গবন্ধুর সাহসকে সবাই ভয় পেতো।

কৃষিমন্ত্রী আরও বলেন, ‘পৃষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করা বর্তমান সরকারের অন্যতম চ্যালেঞ্জ। কৃষির বাণিজ্যিকীরণ ও আধুনিকীরণের চেষ্টা চলছে। আমরা কৃষিকে যান্ত্রিকীকরণ করব। কৃষিকে বহুমুখীকরণ করে লাভজনক করতে হবে, যাতে দেশের ৬০ ভাগ মানুষ যারা গ্রামে বাস করেন, তাদের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটে।’

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদমন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম বলেন, ‘সেনাবাহিনীর সদস্য হিসেবে জিয়াউর রহমান শপথ নিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের আগে ফারুক-রশিদরা জিয়াকে বলেছিলেন, আমরা বঙ্গবন্ধু সরকারকে উৎখাত করতে চাই। সিনিয়র সদস্য হিসাবে তাকে জড়ানোর কথা না বললেও জিয়া তাদের বলেছিলেন, এগিয়ে যাও। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর জিয়াকে এই খবর দেওয়া হলে তিনি বলেছিলেন, প্রেসেডেন্ট নেই তো কী হয়েছে, ভাইস প্রেসিডেন্ট তো আছে। বঙ্গবন্ধু খুন হওয়ার ৮ ঘণ্টার মধ্যে খুনি মোশতাক সরকারকে স্বীকৃতি দিয়েছিল পাকিস্তান। বঙ্গবন্ধু হত্যার পর আরও কয়েকটি রাষ্ট্র বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেয়। বঙ্গবন্ধু খুনের বিচার করা যাবে না, এই আইনে সই করেছিলেন জিয়াউর রহমান। ক্ষমতার পট পরিবর্তনের জন্য বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়নি। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধ্বংস করার জন্যই বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়েছে। ১৫ই আগস্টকে জাতীয় পার্টিও কিন্তু গণতন্ত্র দিবস পালন করেছিল।’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু হত্যা ক্ষমতার পরিবর্তনে হত্যা নয়, বঙ্গবন্ধু হত্যা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশকে হত্যা। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সমস্ত তথ্য-উপাত্ত উদঘাটনের জন্য একটি উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন কমিশন দরকার। আমরা দৃশ্যমান হত্যাকারীদের বিচার করেছি। কিন্তু কমিশনের রিপোর্ট হয়ে থাকবে ইতিহাসের একটি মাইলফলক। তাহলে অনাগত ভবিষ্যৎ বলতে পারবে এই হত্যাকাণ্ডে কারা কারা জড়িত ছিল। আগামী প্রজন্মের জন্য বঙ্গবন্ধুর খুনের পরিকল্পনা প্রণয়নকারী, বাস্তবায়নকারী ও উপকারভোগীদের স্বরূপ উন্মোচন করা প্রয়োজন। সে উন্মোচনের ভেতরে যেই পড়ে মানুষকে জানাতে হবে।’

সংস্কৃতিবিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ বলেন, ‘জিয়ার পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী বঙ্গবন্ধুকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকে ঘিরে ১৫ই আগস্টের পরে যা হয়েছে সবই চিত্রনাট্য। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পেছনে জাসদের ঐতিহাসিক ভূমিকা রয়েছে।’ অনুষ্ঠানে অন্যান্যরাও জিয়াউর রহমানের মরণোত্তর বিচার দাবি করেন।

বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী সভাপতি মো. হামিদুর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন- কৃষি মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হোসনে আরা ও মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়েল সচিব রওনক মাহমুদ, অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের নির্বাহী সাধারণ সম্পাদক বদিউজ্জামান বাদশা।


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর