Sunday 08 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

রোহিঙ্গা ঢলের ৩ বছর: মিয়ানমারের অনাগ্রহে থেমে প্রত্যাবাসন আলোচনা


২৬ আগস্ট ২০২০ ০০:১৯

ঢাকা: মিয়ানমার সেনাবাহিনীর দমন-পীড়নের শিকার হয়ে ২০১৭ সালের এই দিনে (২৫ আগস্ট) সাড়ে সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা পালিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়। এসব রোহিঙ্গাদের দেশটিতে ফেরত পাঠাতে গেলো তিন বছর ধরে সরকার চেষ্টা করলেও এখন পর্যন্ত আলোচনার মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে সে উদ্যোগ। আনুষ্ঠানিক চুক্তি করে কয়েকবার দিনক্ষণ ঠিক করার পরও একজন রোহিঙ্গাকেও ফেরত পাঠানো যায়নি। তবে দ্বিপাক্ষিক, আন্তর্জাতিক সব মাধ্যম থেকেই চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে সরকার।

চলতি বছরও ফের আলোচনায় বসার তারিখ ঠিক করে তা মিয়ানমারের পক্ষ থেকেই স্থগিত করা হয়েছে। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় বলছে, বাংলাদেশের পক্ষ থেকে আলোচনার জন্য প্রস্তুত থাকলেও মিয়ানমারের অনাগ্রহের কারণে আলোচনা বার বার পিছিয়ে যাচ্ছে।

জানা যায়, মিয়ানমার সেনাবাহিনীর অত্যাচার, নিপীড়নের শিকার হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের রাখাইনে ফেরত পাঠাতে ২০১৭ সালের নভেম্বরে বাংলাদেশ-মিয়ানমার একটি চুক্তি করে। তার দুই মাস পর ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন শুরু হওয়ার কথা ছিল। সে উদ্যোগ বাস্তবায়নে দু’দেশের পররাষ্ট্র সচিব পর্যায়ে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপও গঠন করা হয়। ওই গ্রুপ গত দুই বছরে চার দফা বৈঠক করে। সর্বশেষ বৈঠক ২০১৯ সালের মে মাসে মিয়ানমারের নেপিডোতে অনুষ্ঠিত হয়।

চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের পঞ্চম বৈঠক ঢাকায় অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিলো। মিয়ানমারের অনুরোধে ওই বৈঠক দুইমাস পিছিয়ে মে মাসে নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু মার্চে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ দেখা দিলে সে বৈঠকও বাতিল হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের আলোচনা কার্যত থেমেই আছে।

এ প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের বিষয়ে মিয়ানমারের সঙ্গে সর্বশেষ আলাপ করার কথা ছিল চলতি বছরের মে মাসে। কিন্তু কোভিডের কারণে তা পিছিয়ে গেলো। যতবার পেছালো মিয়ানমারের পক্ষ থেকেই। এখন কোভিড, আগামীতে তাদের নির্বাচন, ক’দিন পরে বলবে যে, নির্বাচনের কারণে তারা বসতে পারবে না। মিয়ানমারের অনাগ্রহে বিষয়টা এগোচ্ছে না।’

২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমার সরকারের নিপীড়ন নির্যাতনের শিকার হয়ে প্রায় সাড়ে সাত লাখ রোহিঙ্গা তিন বছর আগে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে। উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পে এখন ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গার বসবাস। বাংলাদেশ সরকার এবং ইউএনএইচসিআর’র তত্ত্বাবধায়নে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা এসব রোহিঙ্গাদের খাদ্য, চিকিৎসাসহ বিভিন্ন সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে। সরকারের পক্ষ থেকে শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশন অফিস ৩৪টি শরণার্থী ক্যাম্পে প্রশাসনিক কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।

উখিয়া ও টেকনাফ এলাকায় বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা বসবাসের কারণে পরিবেশ ও প্রতিবেশগত নানা সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। বাড়ছে জনসংখ্যা। হচ্ছে অপরাধ। রয়েছে ভয়াবহ করোনা ঝুঁকিতে। এদিকে রোহিঙ্গাদের বাসস্থানের কারণে উজার হচ্ছে বন। সামাজিক, অর্থনৈতিক বিরূপ প্রভাব পড়ছে স্থানীয় জনগোষ্ঠীর মধ্যে। এ নিয়ে দিন দিন তৈরি হচ্ছে অসন্তোষ। তাই এদেরকে দ্রুত পাঠিয়ে দেওয়ার পক্ষেই মত সকলের।

অনাগ্রহ আলোচনা থেমে মিয়ানমার রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

ভূতের গলির বাসায় মিলল বৃদ্ধের মরদেহ
৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১১:০০

সম্পর্কিত খবর