প্রতিবন্ধীকে মারধর, উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা
২৬ আগস্ট ২০২০ ০২:৪৭
রাঙ্গামাটি: রাঙ্গামাটিতে রেকর্ড করা জায়গা জোর করে বেদখলের উদ্দেশে শারীরিক প্রতিবন্ধীকে মারধরের অভিযোগ উঠেছে জেলার লংগদু উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুল বারেক সরকারের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল বারেক সরকারকে আসামি করে রাঙ্গামাটি চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
লংগদু উপজেলার গুলশাখালী ইউনিয়নের রাজনগর গ্রামের শারীরিক প্রতিবন্ধী মোসলেম উদ্দীন সোমবার (২৪ আগস্ট) এই মামলা দায়ের করেন। পরদিন মঙ্গলবার (২৫ আগস্ট) বিকেলে রাঙ্গামাটি রিপোর্টার্স ইউনিটি সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি বারেক সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ তুলে ধরেন। তবে মোসলেম উদ্দীনের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আব্দুল বারেক সরকার।
সংবাদ সম্মেলনে মোসলেম উদ্দীন অভিযোগ করেন, ১৭ আগস্ট চেয়ারম্যান আব্দুল বারেক সরকার আমাকে লংগদু আওয়ামী লীগ অফিসে ডেকে নিয়ে আমার নামে রেকর্ড করা এক একর ৩৫ শতক জায়গা জোর করে ৬ লাখ টাকার বিক্রয় করতে বলেন। আমি রাজি না হলে অফিসেই আমাকে বেধড়ক মারধর করেন বারেক সরকার। আমি একজন প্রতিবন্ধী মানুষ, আমার সাত কন্যা সন্তান আছে। তাদের জন্য এই জায়গায়ই আমার একমাত্র সম্বল। কিন্তু বারেক সরকার আমার প্রতিবেশি রুহুল আমিনের পক্ষ নিয়ে এই জায়গা তাকে নিয়ে দিতে যড়যন্ত্র করছে।
মোসলেম উদ্দিন আরও বলেন, বারেক সরকার আমাকে মারার সময় বার বার বলেছেন, মারপিট সবে শুরু, জায়গা না বিক্রি করলে তোমার কপালে আরও শনি আছে। তিনি আমাকে বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়েছেন। ফলে আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আমি বাড়িতে থাকতে পারছি না। সবসময় আতঙ্কে থাকি, কখন আবার আমার ওপর চড়াও হয়।
তিনি বলেন, আমাকে মারার পর আমি লংগদু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিতে সাহস পাইনি। আহত অবস্থা রাঙ্গামাটি এসে জেনারেল হাসপাতালে এসে চিকিৎসা নিয়েছি। বারেক সরকার লংগদু উপজেলা বিএনপি সভাপতি মো. নাছির উদ্দিনের পক্ষ নিয়ে আমাকে ভিটেহারা করতে পাঁয়তারা করছে। আমার প্রতিবেশী রুহুল আমিন নাছির উদ্দিনের ভগ্নিপতি। এরা সবাই এক হয়ে আমার অসহায়ত্বের সুযোগ নিয়ে আমার কোটি টাকা দামের জায়গায় নাম মাত্র মূল্য দিয়ে দখল করতে চাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে মোছলেম উদ্দিন ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জামাল উদ্দীন, মনির হোসেন ও সাদ্দাম হোসেন।
তবে এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল বারেক সরকার। তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ আনা হয়েছে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। উপজেলার চেয়ারম্যান হিসেবে আমি জমির বিষয়টি সালিশি বৈঠকের মাধ্যমে নিষ্পত্তি করেছি।
তিনি আরও বলেন, বাদী আওয়ামী লীগের কর্মী ও বিবাদী বিএনপির লোক হলেও আমি দল না দেখে যেটা ন্যায্য সেটা করেছি। কিন্তু আমার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বী সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আব্দুর রহিম ও কাপ্তাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মফিজুল হক ষড়যন্ত্র করে ওদের দিয়ে এসব অভিযোগ তুলছেন।