ইসিতে রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আইনের খসড়া অনুমোদন
২৬ আগস্ট ২০২০ ১৭:১৭
ঢাকা: রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আইনের খসড়া অনুমোদন দিয়েছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। প্রয়োজনীয় সংশোধনসহ খসড়াটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে ইসি’র কমিশন সভায়। সংশোধনীগুলো শেষ হলে খসড়াটি আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে।
কমিশন সভায় ‘রাজনৈতিক দলসমূহের নিবন্ধন আইন, ২০২০’ শীর্ষক এই আইন প্রণয়নের বিরোধিতা করে নোট অব ডিসেন্ট (ভিন্নমত) দিয়েছিলেন ইসি কমিশনার মাহবুব তালুকদার। তবে প্রধান নির্বাচন কমিশনারসহ (সিইসি) বাকি নির্বাচন কমিশনাররা তার সেই ‘নোট’ আমলে নেননি।
আরও পড়ুন- নতুন আইন ‘হঠকারী’— নোট অব ডিসেন্ট মাহবুব তালুকদারের
বুধবার (২৬ আগস্ট) রাজধানীর আগারগাঁও নির্বাচন ভবনে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কে এম নুরুল হুদার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত কমিশন সভায় নতুন আইনটির খসড়ায় অনুমোদন দেওয়া হয়।
সভা শেষে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব মো. আলমগীর সাংবাদিকদের বলেন, সার্বিক দিক পর্যালোচনা করে কিছু সংযোজন-বিয়োজনের নির্দেশনাসহ রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধনের এই আইনের খসড়ায় অনুমোদন দিয়েছে ইসি। আগামী সপ্তাহের মধ্যেই এই সংযোজন-বিয়োজনের কাজ শেষ করে কমিশনারদের কাছে ফের উপস্থাপন করা হবে খসড়াটি। তারা এটি দেখার পর পরবর্তী পদক্ষেপের জন্য সরকারের সংশ্লিষ্ট দফতরে পাঠানো হবে।
ইসি সচিব আরও বলেন, বর্তমানে সংসদ নির্বাচনের পাশাপাশি স্থানীয় সরকার পরিষদ দলীয় প্রতীকে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কিন্তু নিবন্ধনের বিষয়টি আরপিও’তে থাকলে তা কেবল সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রযোজ্য হয়। এক্ষেত্রে স্থানীয় সরকার নির্বাচনে দলীয় প্রতীকের জন্য আলাদা আইনের প্রয়োজন পড়বে। আরপিও থেকে নিবন্ধনের অধ্যায়টি বের করে একটি স্বতন্ত্র আইন প্রণয়নের পরিকল্পনা থেকেই এই খসড়াটি তৈরি করা হয়েছে।
মো. আলমগীর বলেন, আধুনিক দলের নিবন্ধনের বিষয়টি বাহাত্তরের গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশে (আরপিও) ছিল না। এটি ২০০৮ সালে আরপিওতে যুক্ত করা হয়। তখনও আলাদা আইনের কথা বলা হয়েছিল। কিন্তু সময়ের অভাবে আলাদা আইন করা যায়নি, বিষয়টিকে আরপিওতে সংযুক্ত করা হয়। এ অবস্থায় রাজনৈতিক দলের নিবন্ধনের বিষয়টি আলাদা করে আইন করার প্রয়োজন বলে মনে করছে বর্তমান কমিশন। তারা মনে করছেন, আইনের এই অংশটি আরপিও থেকে বের করে স্বতন্ত্র করা উচিত। তাছাড়া সরকারেরও সিদ্ধান্ত আছে— সব আইন বাংলায় প্রণয়ন করতে হবে। সবকিছু মিলিয়ে আইনটি প্রণয়ন করা হচ্ছে, সেটি বাংলাতেই করা হচ্ছে।
এই প্রণয়ন করতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠনসহ ৪১ প্রতিনিধির মতামত নেওয়া হয়েছে বলে জানান ইসি সচিব। তিনি বলেন, এসব মতামত পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে কমিশন সভায় উপস্থাপন করা হয়েছে। মতামতগুলোর মধ্যে যেগুলো গ্রহণযোগ্য মনে হয়েছে, কমিশন সেগুলো গ্রহণ করেছে। বাকিগুলো গ্রহণ করা হয়নি।
এদিকে, ‘রাজনৈতিক দলসমূহের নিবন্ধন আইন, ২০২০’ প্রণয়নের বিরোধিতা করে কমিশন সভায় ‘নোট অব ডিসেন্ট’ দেন কমিশনার মাহবুব তালুকদার। পরে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি আগেও বলেছি, ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২’ একটি ঐতিহাসিক আইনি দলিল, যা বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার অনন্য স্মারক। নির্বাচন কমিশনের নতুন আইনের প্রস্তাব গৃহীত হলে ‘গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২’-এর অঙ্গহানি ঘটবে। এতে করে এই আদেশকে বিকলাঙ্গ মনে হবে।
আইনের খসড়া অনুমোদন আরপিও ১৯৭২ কমিশন সভা কমিশনার মাহবুব তালুকদার গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ নতুন আইন নিবন্ধন আইন নির্বাচন কমিশন নোট অব ডিসেন্ট রাজনৈতিক দল নিবন্ধন আইন সিইসি কে এম নুরুল হুদা