ঢাকা: দেশে মাথাপিছু আয় বাড়লেও সাধারণ জনগণ তা অনুভব করতে পারছেনা। করোনাকালে তা কোনোভাবেই বাড়ার কথা নয়। এছাড়া মোট দেশজ উৎপাদন বা জিডিপি প্রবৃদ্ধি নিয়েও অর্থনীতিবিদদের মধ্যে খটকা রয়েছে। তবে মাথাপিছু আয় ও জিডিপি নিয়ে অর্থনীতিবিদদের ‘অনুভব আর খটকা’কে উড়িয়ে দিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, জিডিপিসহ দেশের সব অর্থনৈতিক সূচকের হিসাবই সঠিক রয়েছে। করোনার কারণে জিডিপি যেমন কমেছে তেমনি মাথাপিছু আয়ও ততটা বাড়েনি। এছাড়া দেশের রিজার্ভ এখনও বাড়তির দিকে রয়েছে। তাই পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) হিসাবকে অগ্রহণযোগ্য বলা অনেকটাই অসৌজন্যমূলক।
বুধবার (২৬ আগস্ট) সারাবাংলা ডটনেটের নিয়মিত আয়োজন সারাবাংলা ফোকাসে ‘প্রবৃদ্ধির সূচক বনাম বাস্তবতা’ শীর্ষক আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। সারাবাংলা ডটনেটের স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট এমএকে জিলানীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও যুক্ত ছিলেন পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক ও অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর। অনুষ্ঠানটি একযোগে সারাবাংলা ডটনেটের ফেসবুক পেইজ, ইউটিউব চ্যানেল ও বেসরকারি টেলিভিশন জিটিভিতে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়ে থাকে।
পরিকল্পনা মন্ত্রী এম এ মান্নান বলেন, আমাদের সংস্থা আছে বিবিএস। এখানে প্রফেশনালরা আছেন, তারা পড়াশোনা করে চাকরি নিয়ে এখানে এসেছেন। এরা প্রশিক্ষিত। তারা দীর্ঘদিন যাবৎ এ কাজটি করছেন। তারা প্রতিবছরই এ ফিগারগুলো দেন। ১০ থেকে ১৫ বছর যাবৎ সরাসরি আমি এর সঙ্গে জড়িত এবং দেখছি। অনেক সময় অনেকে আমাদের তথ্য নিয়ে ভিন্নমত পোষণ করেন। আমাদের যে মূল ফিগার যেটা জিডিপি যেটাতে মানুষের অনেক আগ্রহ, আগ্রহের কারণটা হচ্ছে গত কয়েকবছর যাবৎ আমরা অনেক ভালো করছিলাম। এটা প্রায় ৯ এর কোঠায় পৌঁছে গিয়েছিল, সে যায়গায় এবার তা ৫.২৪। দুনিয়ার অন্য কোথাও এমন প্রবৃদ্ধি হয়নি বা টিকেনি। মনে হয় এটা নিয়ে, সন্দেহ নয়, অনেকের সংশয় আছে। অনেকের চিন্তাধারা আছে এটা সঠিক কিনা। সানেম, সিপিডি বা পিপিআরসি অনেকে সন্দেহ প্রকাশ করে, সিপিডির একটি কাগজ আমি অনলাইনে দেখেছি, সরাসরি তাদের সঙ্গে তর্কে যাওয়া ঠিক হবে না আমাদের। কারণ তারা তাত্ত্বিক মানুষ, গবেষণা করে। আমাদের গবেষণা আছে, আমাদেরটি প্রায়োগিক গবেষণা, মাঠ পর্যায়ে কাজ করি। আমাদের ফিগারে ভুল-ভ্রান্তি হতে পারে, উই ডোন্ট ডিনাই, সন্দেহ বা সংশয় হবে আমরা মনে করি সেটা সঠিক নয়।
তিনি বলেন, সরাসরি শুধু সংখ্যাটা নয়, অন্যান্য কিছু উপাদান আছে। যেমন ধরুন মাথাপিছু আয়, মাথপিছু আয়ের হিসাব তো আমরা লুকাতে পারবো না। আরও কয়েকটি বিষয় আছে যেমন মূল্যস্ফীতি বাজারদর, এটা তো রিফ্লেকশন হয়। বাজারদর স্থিতিশীল না হলেও মোটামুটি পজেটিভ সেন্সে আছে। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের অবস্থা ক্রমান্বয়ে বেড়েই চলছে এবং এখনও বাড়ছে। এছাড়া আমাদের যে টাকা তার যে বিনিময় হার ডলারের সঙ্গে, বিনিয়ম হারেও ভয়ংকর অধপতন বা উল্লম্ফন হয়নি। স্থিতিশীল আছে, পজেটিভ আছে। সুতরাং আমরা মনে করি যে, ফিগারগুলো মূল কারণ হচ্ছে আমাদের জিডিপি এবং মাথাপিছু আয়ের হিসাব সঠিক। যদি কেউ ভুল মনে করেন ভালো। আমরা সেগুলো কাগজে পড়বো, দেখবো এবং শেখার চেষ্টা করবো।
মন্ত্রী বলেন, আপাদত আমরা যে অবস্থানে আছি আমাদের ফিগারগুলো গ্রহণযোগ্য, প্রাকটিক্যাল। দুই চার পয়েন্টে পার্থক্য থাকতে পারে এবং থাকেও। শুধু আমাদের দেশে না বিশ্বের বিভিন্ন দেশেও তাই। গ্রহণযোগ্য নয় বা কেউ কেউ বলেছেন বিসিএস এটা প্রশাসনিকভাবে নির্ধারণ করেছে। আমি মনে করি এটা আনকাইন্ড, এটাকে আমরা আনএকাডেমিক মনে করি। বিশেষ করে যারা কাজটা করেছে, আমাদের শত শত কর্মী, তাদের প্রতি এটি অসৌজন্যমূলক আচরণ।
তিনি বলেন, অনুভব এবং খটকা— এই দুটি বিষয়ের পরিমাপ করার পন্থা নেই। অনুভব হচ্ছে আবেগ বা ইমোশন। খটকা হচ্ছে সন্দেহের চেয়েও কম, মনে হচ্ছে বা হতে পারে এমন। এই দুটি শব্দ অর্থনীতিতে মাপজোখ করা কঠিন বলে আমি মনে করি। আমি অনুভবে যাবো না। মনসুর সাহেব যে বললেন ৯৫ শতাংশ মানুষকে জিজ্ঞেস করলে বলবে আমরা ভালো নেই। উনি বা উনার প্রতিষ্ঠান এটা নিয়ে কী কোন স্টাডি করেছেন? রাস্তায় বেরিয়ে মানুষকে জিজ্ঞেস করেছেন? এটা তার ধারণা। অনুভব, ধারণা বা খটকাকে আমরা আমলে নিতে পারিনা।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমাদের আয় ২ হাজার ডলার বেড়েছে। আমাদের প্রক্ষেপনে ২১০০ ডলারের বেশি হওয়ার কথা ছিল। সাধারণ যে গতিতে আমরা এগিয়ে যাচ্ছিলাম, ৮.৪ শতাংশ যদি প্রবৃদ্ধি হতো, ২২০০ ডলারের কাছাকাছি আজকে থাকার কথা ছিল। আমাদের যেখানে ৮.২ হওয়ার কথা ছিল সেখানে আমরা ৫.২৪। আমাদের অর্ধেক প্রবৃদ্ধি কম পেয়েছি। আমরা তো অস্বীকার করছিনা, আমাদের প্রবৃদ্ধি কমেছে। আমাদের আয় কমেছে, গত বছরের চেয়ে সামান্য কিছু বেড়েছে। মন্ত্রী আরও বলেন, আমলাদের বেতনভাতা বাড়ানো হয়েছে। কিন্তু তারা দুর্নীতি করছে। সবাই করছে তা নয়। কেউ কেউ দুর্নীতি করার পন্থাই খুঁজতে থাকে। আবার অনেক আমলার মধ্যে কাজ ফেলে রাখা বা দেরি করার প্রবণতা আছে। আমলাদের সময়ক্ষেপন এখন আমাদের জন্য সবচেয়ে মারাত্মক ঝুঁকি। তবে সরকার সংস্কার করছে। বিভিন্নভাবে কর্মচারীদের কাজের গতি বাড়াতে সরকার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
তিনি বলেন, আমরা লোকাল কমিউনিটির ওপর নির্ভর করেই বেঁচে আছি। চেয়ারম্যান, মেম্বার, ভোটার আমরা তাদের দুয়ারে দুয়ারে ঘুরি। গ্রামে গেলে তো আমরা প্রচুর চাপে থাকি। সুতরাং আমাদের ভোটারের সঙ্গে যোগাযোগের কোন ঘাটতি আছে বলে আমি মনে করিনা। বরং মাঝেমধ্যে আমাদের জীবন কঠিন হয়ে দাঁড়ায় ওই সব মোকাবিলা করতে গিয়ে, এটা আমাদের সিস্টেমের একটা শক্তি বলে আমি মনে করি। আমাদের সরকার, দল, আমরা জনগণের সঙ্গে এতো বেশি সম্পৃক্ত আমাদের প্রতিটি পদক্ষেপ সম্পর্কে জনগণ প্রশ্ন করে, জনগণ জানতে চায়, তারা আমাদের কাছে আসে, এটা গণতন্ত্রের জন্য ভালো এবং উন্নয়নের জন্য ভালো। আমরা জনগণের সঙ্গে আছি বলেই ক্ষমতায় আছি। এটা করেই আমরা টিকে আছি। সুতরাং কারো যদি আশঙ্কা থাকে আমরা জনগণ থেকে দূরে যাচ্ছি এটা খুবই আমাদের জন্য খুবই ক্ষতিকর। এটা আমরা হতে দেবো না। ওখানেই আমাদের প্রাণভ্রমরা। এই জনগণই আমাদের প্রাণভ্রমরা।
অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর বলেন, আমরা যেভাবে দেখি, সরকারের তথ্যকে চ্যালেঞ্জ করার মতো সোর্স বা বিকল্প কিছু আমাদের নেই। কারও নেই এবং পৃথিবীর কোন দেশেই নেই। সাধারণত এসব তথ্য মাঠ পর্যায় থেকে সংগ্রহ করে একটি সিস্টেমের মধ্য দিয়ে আসে। যেখানে পার্থক্য আসে সেটি দুটি জায়গায়। যেভাবে প্রকাশ করা হয় টেকনিক্যাল স্বাধীনতা সেই প্রতিষ্ঠানের আছে কি না। দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে অন্যান্য সূচকের সঙ্গে এর কতোটুকু সামঞ্জস্যতা আছে। সামঞ্জস্যপূর্ণতার জায়গায় একটি খটকা লেগে যায়। খটকাটা হচ্ছে যদিও আমরা বলি বাংলাদেশে ৫ শতাংশ বেড়েছে প্রকৃতমূল্যে টাকার অঙ্কে এটা হয়তো ১১ থেকে ১২ শতাংশ বেড়েছে। কিন্তু আমরা কাউকে জিজ্ঞেস করি আপনার বেতন কী বেড়েছে কিংবা আপনি কী আগের চেয়ে ভালো ফিল করছেন? ৯৫ শতাংশ মানুষ উত্তর দেবে ‘না’। তারা বলবে আমাদের পকেট খালি হয়ে যাচ্ছে, আমরা বাড়ি ভাড়া দিতে পারছিনা, আমরা বেতন আগের চেয় কম পাচ্ছি, দোকনটা খুললে পরে সেখানে বিক্রি হচ্ছেনা, সেখানে ক্রেতা নেই, ক্রেতা বলছে আমার পকেটে টাকা নাই। বড় বড় ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের সামর্থ্য থাকলেও তারা তাদের উৎপাদন বাড়াতে পারছেনা, কারণ বিক্রি হচ্ছেনা। এটা হচ্ছে সামগ্রিক চিত্র।
তিনি বলেন, শহর থেকে মানুষ গ্রামে চলে যাচ্ছে, এখন তাদের চাকরি নেই, তারা খোঁজ খবর রাখছে আবার কবে চাকরি হবে। কিছু কিছু সেক্টর ঘুরে দাঁড়িয়েছে বলে সন্দেহ নেই। কিন্তু ঘুরে দাঁড়ানো মানে এই নয় তারা আগের চেয়ে ভালো হয়ে গেছে। আমার মনে হয় না কোন খাতই বর্তমানে আগের চেয়ে ভালো আছে। যেমন পোশাক খাত ঘুরে দাঁড়িয়েছে, সেটাও কিন্তু আগের চেয়ে ভালো অবস্থায় নয়, ২০১৯ সালের অবস্থায় তারা কিন্তু ফেরত যেতে পারেনি। হয়তো ডিসেম্বর, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি বা মার্চে তারা যেতে পারে। আমরা সেটাতে খুবই আশাবাদী। আমরা পজেটিভ সাইন সেখানে দেখতে পাচ্ছি। কিন্তু অন্য খাতগুলো, অভ্যন্তরীণ বাজারে যাদের চাহিদা সেখানে ভয়ঙ্কর রকমের দুর্বলতা দেখতে পাচ্ছি। সেই জন্যই প্রশ্নটা উঠেছে মাথাপিছু আয় বাড়ছে সেটা অনুভব করছিনা কেন? মানুষ কেন অনুভব করছেনা। এই জায়গাটায় একটা গড়মিল সৃষ্টি হচ্ছে। তখন প্রশ্নটা আসে তাহলে কী তথ্যটা ঠিক না মানুষের যে পারসেপশনটা ঠিক। মানুষের পারসেপশনটা তো বাস্তবভিত্তিক। তারা তো বাড়ি ছেড়ে চলে গেছেন, বাড়িওয়ালাকে জিজ্ঞেস করলে বলবে আমি তো ভাড়াটিয়া পাচ্ছিনা, ভাড়াটিয়াকে জিজ্ঞেস করলে বলবে, আমি তো ভাড়া দিতে পারছিনা, রিকশাওয়ালা বলবে আগে ১ হাজার টাকা পেলেও এখন ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা পাই, রিকশা ভাড়া দিয়ে আমার খাওয়ার টাকা থাকেনা, তবু আসছি যদি আস্তে আস্তে আয় বাড়ে। দোকানদার বলবে খুলে রেখেছি যদি আমরা কাছে কাস্টমার আসে তাহলে অন্তত দোকানের ভাড়াটা তো দিতে পারবো। এইগুলো হচ্ছে মানুষের প্রত্যাশা। এই প্রত্যাশার সময়ে যে কথা বলা হচ্ছে টাকার মূল্যে আমার ১০ থেকে ১২ শতাংশ আয় বেড়েছে, এই অঙ্ক মেলে না। তিনি বলেন, আয় অল্প কিছু মানুষের কাছে যেতে পারে। কিন্তু আমরা যদি উৎপাদনশীল খাত দেখি সেখানে কিন্তু বড় কোন উৎপাদনশীল খাত দেখছিনা যেখানে আয় বেড়েছে। গার্মেন্টস শিল্পে আয় বাড়তে পারে, তারা কিন্তু বলবে তাদের আয় বাড়েনি। এবং সত্যিকার অর্থেও তাদের আয় সেভাবে বাড়েনি। আমরা যদি ওয়ালটনের কথাই বলি, তারা বলবে আমরা টিকে আছি, টিকে থাকার চেষ্টা করছি, চাহিদা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। আয় তো আমাদের বাড়েনি। আইসক্রিমের ফ্যাক্টরিকে জিজ্ঞেস করবেন, তারা বলবে আমাদের বিক্রিটা হচ্ছেনা সেভাবে। বিশাল মানুষ এখনও কর্মচুত্য, ব্যবসাচুত্য, এসএমই খাত তাদের ব্যবসা শুরু করতে পারছেনা। আমরা কিভাবে বলি আগের চেয়ে আমরা বেশি আয় করেছি? কারা তারা?
আহসান এইচ মনসুর বলেন, সামনের দিকে এগিয়ে যেতে সরকারের সদিচ্ছার কোন স্বল্পতা দেখছিনা। বর্তমান পরিস্থিতিতে আমাদের প্রবৃদ্ধি হয়েছে কী হয়নি এটি গুরুত্বপূর্ণ নয়। আমরা এই সংকট কাটানোর জন্য কী কী করছি যেটা জনকল্যাণ। আমরা আগামী দিনের জন্য কী প্রস্তুতিটা নিচ্ছি। যেটা আগামী দিনের প্রবৃদ্ধিকে টেকসই করবে এবং আগামী দিনে প্রবৃদ্ধিকে বাড়াবে। অর্থাৎ আমরা রিফর্ম কী নিচ্ছি সেটা হচ্ছে বড় প্রশ্ন। আমি মনে করি এই যায়গাটায় সরকারের আরও বেশি মনযোগ দেওয়া দরকার। এই বছর যদি আমাদের প্রবৃদ্ধি নেগেটিভও হয় কেউ সরকারকে দোষ দেবেনা। পৃথিবীর সব দেশেই তো নেগেটিভ হয়েছে। আমাদেরও হতে পারে। এটা কোন সরকারের ব্যর্থতার লক্ষ্যণ নয়। এই কঠিন সময়ে আগামী দিনের জন্য আমি কিভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি। প্রশাসনিক যন্ত্রকে আরও সচল করে তোলা যাতে সরকারের যে অর্থ তার সঠিক ব্যবহার হয়। সেটা ত্বআরিতগতিতে যাতে হয়, কালক্ষেপণ যাতে না ঘটে, সেবাগুলো সঠিক সময়ে সঠিকভাবে পায়। এখনও কিন্তু সেবা পাচ্ছেনা।… ফাইল আটকে রাখাই হয়ে অসাধুপায়ের উপায়। মানুষকে কষ্ট দিলে পয়সা আসে। মানুষকে কষ্ট দিয়ে তারা পয়সা নেই। এই যায়গাটা ঠিক করতে হবে। এছাড়া আমরা রিসোর্সের স্বল্পতা রয়েছে, এবং এটা ঘনীভূত হচ্ছে। আমাদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির সঙ্গে রেভিনিউ প্রবৃদ্ধি কিন্তু নেগেটিভ হয়ে গেছে। এই বৈসাদৃশ্যটা কিন্তু লক্ষ্যণীয়। গত বছর রাজস্ব আয় নেতিবাচক ছিল। এ বছরও হয়তো নেগেটিভ থাকতে পারে, অল্প কিছু বাড়তে পারে, কিন্তু লক্ষ্যমাত্রার ধারে কাছে যাবেনা। আমাদের ব্যাপক সংস্কার করতে হবে রাজস্ব খাতে।
ড. মনসুর আরও বলেন, সরকার যদি নিজেকে আরও ডায়নামিক করতে চায় তাহলে যেটাকে ডিজিটাল বাংলাদেশ বলা হয় সেটাকে ডিজিটাল গর্ভনেন্স এই যায়গাটায় নিয়ে আসতে হবে। সব কিছু যদি আমরা একটি ড্যাশবোর্ডের মাধ্যমে নিয়ে আসতে পারি তাহলে কাজে দেবে। যেমন যদি বলি আমি যদি গাড়ি নবায়ন করতে চায় কেন আমাকে নির্দিষ্ট ব্রাঞ্চে গিয়ে টাকা জমা দিতে হবে? আমি কিন্তু যে কোন যায়গায় জমা দিতে পারি। সেটা কিন্তু এখনও করা হয়নি। আমাকে ওই যায়গায় গিয়ে ওই ব্রাঞ্চে টাকা জমা দিতে হবে। কেন বাংলাদেশ কী এতোই পিছিয়ে আছে। ওই স্বার্থান্বেসী মহল চায় যেন আমি ওখানেই যায়। এছাড়া লোকাল যেসব প্রকল্প আছে প্রকল্প বাস্তবায়নের সঙ্গে আঞ্চলিক জনগোষ্ঠীকে অন্তভূর্ক্ত করুন। কমিউনিটিকে জানান তোমার এলাকায় এই ব্রিজটি হচ্ছে, এই রাস্তাটি হচ্ছে, এই রাস্তার এই স্পেসিফিকেশন, তোমাদের কোন অভিযোগ থাকলে আমাদের ড্রপবক্সে অভিযোগ করতে পারো। ইমেইল বা এসএমএসের মাধ্যমে করতো পারো, আমরা সেটা দেখবো। এটা সরাসরি করতে হবে। ছোট ছোট প্রকল্পের ক্ষেত্রে এটা করা যেতে পারে আর বড় প্রকল্পের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞ বা অভিজ্ঞদের দ্বারা মান যাচাই করা উচিত।