মেয়াদোত্তীর্ণ বিদেশি প্রসাধনী বিক্রি করছে এসপিএস, গ্রেফতার ৫
২৮ আগস্ট ২০২০ ১১:২৮
ঢাকা: ইংল্যান্ডের বিখ্যাত ব্র্যান্ড উইপ্রো এন্টারপ্রাইজ ও হাঙ্কেল কোম্পানীর সাবান, পাউডার, লোশনসহ বিভিন্ন ধরনের মেয়াদোত্তীর্ণ প্রসাধনীতে নতুন মেয়াদের সিল বসিয়ে বাংলাদেশের ‘এসপিএস’ নামে একটি প্রতিষ্ঠান বাজারজাত করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। শুধু তাই নয়, গত ১০ বছর ধরে আমদানীকারক এই প্রতিষ্ঠানটি ইয়ার্ডলে ব্র্যান্ডের সাবান,পাউডার, বডি স্প্রেসহ নানা রকম মেয়াদোত্তীর্ণ প্রসাধনী এভাবেই বাজারজাত করছে। প্রতারণার এমন অভিযোগের ভিত্তিতে এসপিএসের গোডাউনে অভিযান চালিয়ে মেয়াদোত্তীর্ণ প্রায় ১০ কোটি টাকার প্রসাধনী জব্দ করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ সময় পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) সিআইডির ঢাকা মেট্রো দক্ষিণের অতিরিক্ত ডিআইজি শেখ মো. রেজাউল হায়দার চৌধুরী এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। গ্রেফতারকৃতরা হলেন— শঙ্কর মন্ডল (৩৪), হারুন অর রশিদ (৪৫), মো. সবুজ আহমেদ (৩০), মো. মনিরুজ্জামান (২৩) এবং বিরেশ্বর মন্ডল (৩৬)।
সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত ডিআইজি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে হাঙ্কেল ও উইপ্রো এন্টারপ্রাইজ নামে দুটি কোম্পানীর সাবান, পাউডার, লোশন, বডি স্প্রেসহ বিভিন্ন ধরনের প্রসাধনীর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। বাংলাদেশেও এর চাহিদা আছে। বিশেষ করে গুলশান, বনানী, উত্তরা,ধানমন্ডিসহ অভিযাত এলাকাগুলোতে বিদেশি পণ্যের চাহিদা বেশি থাকে। বাংলাদেশি আমদানীকারক প্রতিষ্ঠান এসপিএস হাঙ্কেল ও উইপ্রো এন্টারপ্রাইজের বিভিন্ন প্রসাধনীর একমাত্র আমদানীকারক। প্রতিষ্ঠানটি এ দুই কোম্পানীর কাছ থেকে প্রসাধনী আমদানী করে তা বাজারজাত করে।
সিআইডির তথ্যমতে, হাঙ্কেল ও উইপ্রো এন্টারপ্রাইজ কোম্পানী দুটির প্রসাধনীর মেয়াদ শেষ হলেও এগুলোতে নতুন মেয়াদের সিল বসিয়ে বাজারজাত করা হয়। অভিযোগের ভিত্তিতে সিআইডির ঢাকা মেট্রো দক্ষিণের অভিযান পরিচালনাকারী দল রাজধানীর ভাটারা এলাকায় গত ২৫ আগস্ট অভিযান চালায়। এসপিএস এন্টারপ্রাইজের মালিক সুধির মন্ডলের ভাটারা থানার সাঈদনগর এলাকায় বাড়িতে অভিযান চালিয়ে সিআইডি হাতেনাতে এসপিএস করপোরেশনের দুই ব্যবসা অংশীদারসহ ৫ জনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে ভাটারা থানায় প্রতারণার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, বিদেশি পণ্যের গায়ে একটি নির্দিষ্ট মেয়াদ থাকে। মেয়াদোত্তীর্ণ পণ্যগুলো সাধারণত ধ্বংস করার বিধান রয়েছে অথবা কোম্পানীর কাছে ফেরত পাঠাতে হয়। কিন্তু এসপিএস কোম্পানীর আমাদানীকৃত পণ্যের মধ্যে যেগুলো অবিক্রিত থেকে মেয়াদ শেষ হয়েছে, সেগুলোতে নতুন মেয়াদ বসিয়ে বাজারজাত করার জন্য বিদেশ থেকে তারা বিশেষ মেশিন এনেছে। ওই মেশিনে কোম্পানীর দেওয়া মেয়াদের তারিখ তুলে সেখানে নতুন করে মেয়াদ বসিয়েছেন তারা। মেয়াদোত্তীর্ণ প্রসাধনী ব্যবহারে ত্বকে নানা ধরনের ক্ষতি হয়। ক্যান্সার হওয়ার আশঙ্কাও থাকে।
এক প্রশ্নের জবাবে সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি রেজাউল হায়দার বলেন, প্রতিষ্ঠানটির সরবরাহ করা কী পরিমাণ প্রসাধনী বাজারে আছে তার কোন হিসাব নেই। এ বিষয়ে তদরকি করতে বিএসটিআইয়ের কোন গাফিলতি ছিল কি না তা তদন্ত করা হবে। আমরা মানুষের কাছে অনুরোধ করতে চাই বিশেষ করে যারা বিদেশি পণ্য ব্যবহার করেন তাদের বলছি, হাঙ্কেল ও উইপ্রো এন্টারপ্রাইজ কোম্পানীর লোশন, সাবান, পাউডার আপাতত ব্যবহার বন্ধ রাখুন। আর বিদেশি পণ্য কেনার সময় ভালো করে ম্যানুফ্যাকচারিং ডেট, কোম্পানীর নাম যাচাই করুন।
ইয়ার্ডলে উইপ্রো এন্টারপ্রাইজ ও হাঙ্কেল নকল প্রসাধনী মেয়াদোত্তীর্ণ প্রসাধনী