আনুষ্ঠানিকভাবে প্রার্থিতা নিলেন ট্রাম্প, ভোটারদের বিক্ষোভ
২৮ আগস্ট ২০২০ ১১:১৯
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে টানা দ্বিতীয় মেয়াদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে রিপাবলিকান পার্টির মনোনয়ন পেয়েছেন ট্রাম্প। আগে থেকেই তার প্রার্থিতা চূড়ান্ত হলেও বাকি ছিল আনুষ্ঠানিকতা। রিপাবলিকান পার্টির চার দিনব্যাপী ন্যাশনাল কনভেনশনের শেষ দিন সেই আনুষ্ঠানিকতাও শেষ হয়েছে। এরপর ট্রাম্প বলেছেন, তার সেরাটা এখনো দিতে পারেননি। পুনঃনির্বাচিত হলে তিনি সেটি দেওয়ার চেষ্টা করবেন।
এদিকে, ট্রাম্পের প্রার্থিতা যখন নিশ্চিত হচ্ছে, তখন হোয়াইট হাউজের বাইরে বিক্ষোভ করেছেন মার্কিন ভোটাররা। ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’ স্লোগান দিয়েছেন তারা। ট্রাম্পবিরোধী নানা রকমের ফেস্টুন-প্ল্যাকার্ডও প্রদর্শন করেছেন তারা।
বিবিসির খবরে বলা হয়, বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) ছিল চার দিনব্যাপী রিপাবলিকান ন্যাশনাল কনভেনশনের শেষ দিন। এদিন ট্রাম্পকে আনুষ্ঠানিকভাবে ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্রেটিক দলের জো বাইডেন।
চূড়ান্ত মনোনয়ন গ্রহণ করার পর হোয়াইট হাউজের অনুষ্ঠানে দেওয়া বক্তৃতায় ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদের সাফল্য তুলে ধরতেই ব্যস্ত ছিলেন। নতুন নতুন বাণিজ্যচুক্তি, প্যারিস ক্লাইমেট অ্যাকর্ড থেকে যুক্তরাষ্ট্রকে প্রত্যাহার করে নেওয়া, ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি বাতিল, ইসরায়েলে মার্কিন দূতাবাস জেরুজালেমে স্থানান্তরের মতো বিষয়গুলো গুরুত্ব দিয়ে তুলে ধরেন তিনি। বলেছেন মেক্সিকোর সঙ্গে সীমান্তে দেয়াল তোলার কথাও। তবে দ্বিতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসতে পারলে কী করবেন, সে বিষয়ে তেমন একটা কিছু বলেননি তিনি।
বক্ততৃতায় মূলত আত্মপ্রশংসা করতেই ব্যস্ত ছিলেন তিনি। এমনকি ট্রাম্প এ-ও বলেন, ‘আমি আফ্রিকান আমেরিকানদের জন্য যা করেছি, আব্রাহাম লিংকনের পর আর কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট তাদের জন্য এত কিছু করেননি।’ জো বাইডেন তার ৪৭ বছরের রাজনৈতিক ক্যারিয়ারে কৃষ্ণাঙ্গদের জন্য যা করে দেখা পারেননি, ট্রাম্প তার চার বছরের প্রেসিডেন্সিয়াল মেয়াদে সেটি করে দেখিয়েছেন— এই দাবিও করেন ট্রাম্প।
তবে নিজের ‘সেরা’টা এখনো দিতে পারেননি বলে জানিয়েছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। সেই ‘সেরা’টা দেখতে হলে তাকে দ্বিতীয় মেয়াদে নির্বাচিত করতে হবে মার্কিন ভোটারদের— বলছেন ট্রাম্প।
হোয়াইট হাউজে ট্রাম্পের বক্তৃতার আগে বক্তৃতা দেন তার মেয়ে ইভানকা ট্রাম্প। বাবাকে তীব্র সমর্থন দিয়ে তিনি বলেন, দীর্ঘ দিন পর মার্কিনিরা একজন ‘নিজেদের প্রেসিডেন্ট’ পেয়েছিল।
ইভানকা বলেন, আমার বাবাকে নিয়ে অনেক অভিযোগ আছে। কিন্তু তিনি কেবল মানুষের কথাই ভাবেন। অন্য অনেক প্রেসিডেন্ট আছে, যাদের ‘এলিট’ সমর্থক গোষ্ঠী আছে। কিন্তু আপনারা কী ভাবেন, সেটিই আমার বাবার জন্য মুখ্য। তিনি জানেন তিনি কী বিশ্বাস করেন, তিনি কী করছেন। আপনি তার সঙ্গে একমত হোন বা না হোন, আপনি সবসময়ই জানেন তার অবস্থানটি কী।
ইভানকা আরও বলেন, ওয়াশিংটন ডোনাল্ড ট্রাম্পকে বদলে দিতে পারেনি, বরং ডোনাল্ড ট্রাম্পই ওয়াশিংটনকে বদলে দিয়েছেন। আমেরিকার এই মুহূর্তে কোনো ফাঁকা কলসের প্রয়োজন নেই, যে কি না শুধু আওয়াজ করবে। বরং আমেরিকার এই মূহর্তে আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি প্রয়োজন একজন যোদ্ধাকে, যিনি সবার হয়ে সবার সামনে দাঁড়িয়ে আরও চার বছর বুক চিতিয়ে লড়াই করবেন।
হোয়াইট হাউজের বাইরে বিক্ষোভ
এদিকে, ট্রাম্পের দলীয় প্রার্থিতা চূড়ান্ত হওয়ার সময় ট্রাম্পবিরোধীতে স্লোগানে মুখর ছিল হোয়াইট হাউজের বাইরের অংশটি। রিপাবলিকান এই কনভেনশনের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করতে শত শত মানুষ জড়ো হতে থাকেন সন্ধ্যা থেকেই। তাতে করে কনভেনশন শুরু হতে হতে জনাকীর্ণ হয়ে ওঠে গোটা এলাকা।
বিক্ষোভকারীদের মুখে প্রধান স্লোগান ছিল ‘ব্ল্যাক লাইভস ম্যাটার’। একইসঙ্গে ট্রাম্পকে নিয়ে নানা ধরনের প্ল্যাকার্ড-ফেস্টুন প্রদর্শেন করে তার বিরোধিতা করেন। এসময় পুলিশকে বেশ সতর্ক অবস্থান নিতে দেখা যায়। তবে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর পরিস্থিতি দেখা যায়নি।
তবে রিপাবলিকান পার্টির কনভেনশনের জন্য হোয়াইট হাউজকে বেছে নেওয়ার সমালোচনা চলছে এখনো। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সরকারি বাসভবনে এই অনুষ্ঠান আয়োজনের মাধ্যমে ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হিসেবে ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন বলে মনে করছেন তারা।
ইভানকা ট্রাম্প ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট নির্বাচন মার্কিন প্রেসিডেন্ট রিপাবলিকান কনভেনশন রিপাবলিকান প্রার্থী