Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

৫ বছরও শেষ হয়নি হোসেনি দালানে বোমা হামলার বিচার


৩০ আগস্ট ২০২০ ০৯:১৫

ঢাকা: রাজধানীর পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে হোসেনি দালানে পবিত্র আশুরার তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতির সময় বোমা হামলা মামলার বিচার পাঁচ বছরেও শেষ হয়নি। অভিযোগপত্রে দুই নাবালককে সাবালক দেখানোর কারণে ২২ মাস ধরে সাক্ষ্যগ্রহণ স্থগিত রয়েছে। তবে বিষয়টি দ্রুত সমাধান করে বিচার শেষ হওয়ার আশার আলো দেখছেন রাষ্ট্রপক্ষ।

সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী গোলাম সারোয়ার জাকির সারাবাংলাকে জানান, বর্তমানে মামলাটি সাক্ষ্যগ্রহণের পর্যায়ে রয়েছে। তবে দুই আসামি নাবালক হওয়ায় তাদের বিরুদ্ধে সম্পূরক চার্জশিট দেওয়া হয়েছে। বিচারের জন্য সম্পূরক চার্জশিট নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে বদলি করা হয়েছে। এ কারণে মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণ বন্ধ ছিল। চলমান করোনাভাইরাসে মামলার কার্যক্রম কিছুটা ব্যহত হলেও ফের আদালত বসছে।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, ‘সাক্ষী এখন থেকে নিয়মিত আদালতে হাজির করে যত দ্রুত সম্ভব মামলাটির বিচার শেষ করার চেষ্টা করব। আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা নিশ্চিতের জন্য কাজ করে যাব।’

বর্তমানে মামলাটি ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইবুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমানের আদালতে বিচারধীন রয়েছে। মামলাটিতে ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর সর্বশেষ সাক্ষ্য নেন আদালত। পরে আইনি জটিলতার কারণে আর কোনো সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করতে পারেননি আদালত। এক আসামি নাবালক প্রমাণিত হওয়ার পর আরেক আসামিকে নাবালক দাবি করেছেন তার আইনজীবী। পরে ওই দুই কিশোরকে নাবালক হিসেবেই সম্পৃক্ত চার্জশিট দাখিল করেছে পুলিশ। এরপর আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ধার্য রয়েছে।

বিজ্ঞাপন

এদিকে আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারুক আহম্মেদ  সারাবাংলাকে বলেন, মামলার চার্জশিটে মারাত্মক ত্রুটি ছিল। দুই নাবালককে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাবালক করে চার্জশিট দিয়েছেন। মূলত তদন্ত কর্মকর্তার ত্রুটির কারণে মামলটির বিচারকাজ এগোচ্ছিল না। গত দুই বছর থেকে মামলাটিতে কোনো সাক্ষ্য হয়নি।

তিনি আরও জানান, সম্প্রতি তদন্ত কর্মকর্তা দুই নাবালকের বিরুদ্ধে সম্পূরক চার্জশিট দিয়েছেন। কিন্তু নাবালকদের বিরুদ্ধে সম্পূরক চার্জশিট দেয়া যাবে না। এ বিষয়ে তিনি আবারও গাফিলতি করেছেন। এর কারণে আবারও বিচার আটকে যেতে। আর এ কারণে অন্য আসামিরা বিনা বিচারে কারাগারে রয়েছেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৪ অক্টোবর তাজিয়া মিছিলের জন্য পুরান ঢাকার নাজিমউদ্দিন রোডে হোসেনি দালান ইমামবাড়ায় সমবেত হলে জামাআতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) জঙ্গিরা বোমা হামলা চালায়। এতে দুজন নিহত ও শতাধিক আহত হন। ওই ঘটনায় রাজধানীর চকবাজার থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) জালাল উদ্দিন বাদী হয়ে সন্ত্রাস দমন আইনে একটি মামলা করেন।

আন্তর্জাতিক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট (আইএস) এই হামলার দায় স্বীকার করলেও এ ঘটনায় তাদের (আইএস) কোনো যোগসূত্র নেই বলে দাবি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর।

মামলাটির তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি দক্ষিণের পুলিশ পরিদর্শক শফিউদ্দিন শেখ ২০১৬ সালের ২১ এপ্রিল জামাআতুল মুজাহিদিন বাংলাদেশের (জেএমবি) ১০ জঙ্গির নামে চার্জশিট দাখিল করেন। এর পরের বছর ৩১ মে ১০ জঙ্গির বিরুদ্ধে চার্জগঠন করে বিচার শুরু করেন আদালত। ২০১৮ সালের ১৪ মে মামলাটি ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তরিত হয়।

এ মামলায় চার্জশিটভুক্ত আসামি ১০ জন হলেন- শাহাদাৎ ওরফে আলবানি ওরফে মাহফুজ ওরফে হোজ্জা, আবদুল বাকি আলাউদ্দিন ওরফে নোমান, সাঈদ ওরফে হিরন ওরফে কামাল, জাহিদ হাসান ওরফে রানা ওরফে মোসায়েব, আরমান, রুবেল ইসলাম ওরফে সজীব, কবির হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আশিক, মাসুদ রানা, হাফেজ আহসান উল্লাহ মাহমুদ, আবু সাঈদ সোলায়মান ওরফে সালমান, শাহ জালাল, চাঁন মিয়া ও ওমর ফারুক ওরফে মানিক।

এর মধ্যে আসামি ওমর ফারুক ওরফে মানিক, শাহ জালাল, হাফেজ আহসান উল্লাহ মাহমুদ ও চাঁন মিয়া- এই চারজন জামিনে আছেন। আর ছয়জন রয়েছেন কারাগারে। আসামিদের মধ্যে জাহিদ হাসান ওরফে রানা, আরমান ও কবির হোসেন ওরফে রাশেদ ওরফে আশিক বিভিন্ন সময়ে আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধি অনুসারে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। মামলার মোট সাক্ষী ৪৬ জন। এর মধ্যে ১১ জন সাক্ষ্য দিতে পেরেছেন আদালতে।

হোসেনি দালান হোসেনি দালানে বোমা হামলা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর