Saturday 07 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

তোমরা আগামী প্রজন্মের জন্য দৃষ্টান্ত— ছাত্রলীগকে শেখ হাসিনা


১ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০২:১৫

ঢাকা: করোনাভাইরাস ও বন্যাসহ বিভিন্ন দুর্যোগ পরিস্থিতিতে অসহায় মানুষের পাশে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দাঁড়ানোর জন্য ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ভূয়সী প্রশংসা করলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, আমি খুব আনন্দিত। তোমাদেরকে ধন্যবাদ জানাই। আমি বলার সঙ্গে সঙ্গে তোমরা মাঠে নেমে গেছো এবং কাজ করেছো। তোমরা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছ আগামী প্রজন্মের জন্য।

সোমবার (৩১ আগস্ট) দুপুরে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ আয়োজিত জাতীয় শোক দিবসের আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেন ছাত্রলীগের সাংগঠনিক নেত্রী বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলব, এটা আমাদের নির্বাচনি ইশতেহারে ছিল। আজ ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছি বলেই তো ভিডিও কনফারেন্সিংর মাধ্যমে কথা বলতে পারছি। এটা যদি না হতো তাহলে সবকিছু স্থবির হয়ে যেত।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি ছাত্রলীগকে ধন্যবাদ জানাই। কোভিডের জন্য মানুষ নিজের আত্মীয়-স্বজন ও আপনজনের মৃতদেহ ফেলে চলে যায়। কাফন-দাফনের ব্যবস্থা হয় না। ছাত্রলীগের ছেলেরা সেখানে ছুটে গেছে। নিজের জীবনের সব মায়া ত্যাগ করে মৃতদের তাদের দাফন-কাফন ও সৎকারের ব্যবস্থা করেছে। সেজন্য আমি ছাত্রলীগকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’

এছাড়া লকডাউনের সময় কৃষকদের ধান কাটায় এগিয়ে আসার জন্য ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ভূমিকার কথা তুলে ধরেও প্রশংসা করেন তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, ‘কোন অহমিকা তো কাজ করেনি। সবাই তো কৃষকের কাছে ছুটে গেছে। ছুটে যেয়ে তোমরা সেই কৃষকের পাশে দাঁড়িয়েছা এবং ধান কেটে তাদের ঘরে তুলে দিয়েছ। তাদের পাশে থেকেছো। একেই বলে দেশসেবা। এই যে তোমরা সবকিছু ভুলে গিয়ে চলে গেলে, কৃষকের পাশে দাঁড়ালে। তোমাদের সঙ্গে পরবর্তীতে আমাদের যুবলীগ গেছে, স্বেচ্ছাসেবক লীগ, কৃষক লীগ গেছে আর আওয়ামী লীগ তো গেছেই’— বলেন আওয়ামী লীগ সভাপতি।

বঙ্গবন্ধুকন্যা বলেন, ‘বন্যার সময় রিলিফের জন্য প্রত্যেকে যার যার সাধ্যমতো সহায়তা পৌঁছে দিয়েছো। করোনার কারণে যারা একেবারে দরিদ্র তারা হাত পাততে পারে, তারা এক রকম! কিন্তু যারা হাত পাততে পারে না, চাইতে পারে না। তাদের ঘরে ঘরে খাবার পৌঁছে দেওয়া, পণ্য পৌঁছে দেওয়া, সেটাও তোমরা ভালোভাবে করেছো। সেজন্য সত্যিই আমি খুব আনন্দিত। তোমাদের ধন্যবাদ জানাই।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘তোমরা দৃষ্টান্ত স্থাপন করছো আগামী প্রজন্মের জন্য। কোনো কাজই অবহেলার না। নিজের কাজ নিজে করতে হয়। যা খেয়ে আমাদের জীবন বাঁচে, ক্ষুন্নিবৃত্তি হয়, সেটার জন্য আমরা নিজেরা কাজ করব। এতে লজ্জার কি আছে? কখনও কোনো কাজ অবহেলার না। তোমরা সেটা করতে পেরেছো। তোমাদের ভয়ভীতি কাজ করেনি। অহমিকা জয় করে মানুষের পাশে দাঁড়ানোই তো বড় কথা, সেটা তোমরা করতে সক্ষম হয়েছো।’

মুজিববর্ষ উপলক্ষে সরকারের ঘোষিত বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি সফল করার লক্ষ্যে ছাত্রলীগ ব্যাপকভাবে রোপণ করে যাচ্ছে এবং এটা অব্যাহত রাখার পাশাপাশি সবসময় পরিবেশ রক্ষার দায়িত্ব নিয়ে ছাত্রলীগকে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে বাজেট দিয়েছি। স্কুলে ক্লাস নেই। তবুও আমরা কিন্তু ছাত্রছাত্রীদের উপবৃত্তি দিয়ে যাচ্ছি। করোনার সময় অনেকেরই তো আয় রোজগার নেই। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছে, ডিসেম্বরে ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিশেষ করে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের জন্য কিছু প্রণোদনা দেবো। কিছু কাপড়-চোপড় কেনার ব্যবস্থা আমরা করে দেবো। যাতে গার্জিয়ান তাদের ছেলে-মেয়েদের কাপড়চোপড় দিতে পারে। স্কুলের পোশাক দিতে পারে। সেই ব্যবস্থাটা আমরা নেবো।’

শিক্ষাব্যবস্থা ব্যাপকভাবে সম্প্রসারণের লক্ষ্যে সরকার কাজ করছে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘শিক্ষার মাধ্যমে আমরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। সেদিকে লক্ষ্য রেখে আমরা বিভিন্ন ব্যবস্থা হাতে নিয়েছি। জাতি যখন শিক্ষিত হবে তখন দেশ অগ্রসর হবে।’

ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘লেখাপড়া শিখতে হবে। হ্যাঁ, এখন যেহেতু ক্লাস বন্ধ। আমরা টেলিভিশনের মাধ্যমে কিছু ক্লাস নিচ্ছি। সংসদ টেলিভিশনের মাধ্যমে। এখন সংসদ যেহেতু বেশি চলে না। তাই টিভির ক্লাসের মাধ্যমে পড়াশোনাটা চালিয়ে যেতে হবে। পড়াশোনার অভ্যাসটা যেন নষ্ট না হয়। অবস্থা একটু ভালো হলে হয়ত আমরা স্কুল কলেজ খুলে দিতে পারব। কিন্তু এই মুহূর্তে আমি মনে করি, প্রত্যেকের জীবন বাঁচানোটা হচ্ছে সবার আগে দায়িত্ব।’

একইসঙ্গে করোনা সংক্রমণ থেকে মুক্ত থাকার জন্য স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার পাশাাপাশি করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের সচেতনতা সৃষ্টির জন্য আরও উদ্যোগ গ্রহণের আহ্বান জানান আওয়ামী লীগ সভাপতি।

বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সভাপতি আল নাহিয়ান খান জয়ের সভাপতিত্বে সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিশষ অতিথির বক্তব্য দেন। এ সময় কেন্দ্রীয় নেতাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, সাংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, দফতর সম্পাদক ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়াসহ ছাত্রলীগের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণসহ কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারা। সভা পরিচালনা করেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্টচার্য।

সভার শুরুতে জাতির সকল শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। এছাড়া ছাত্রলীগের প্রকাশনা মাতৃভূমি’র মোড়ক উন্মোচন করা হয়।

১৫ ই আগস্ট আলোচনা ছাত্রলীগ জাতীয় শোক দিবস দৃষ্টান্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ

‘তুফান’ আসছে হিন্দি ভাষায়
৭ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ১৭:৪৯

সম্পর্কিত খবর