Tuesday 26 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

নতুনভাবে গড়ে তোলা হবে টিএসসি: প্রধানমন্ত্রী


২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৩:৩৫

ফাইল ছবি

ঢাকা: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্রকে (টিএসসি) নতুনভাবে গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। একইসঙ্গে ঢাকা মেডিকেল কলেজকেও (ঢামেক) ৫ হাজার রোগী ধারণক্ষমতার আধুনিক হাসপাতাল হিসেবে গড়ে তোলা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।

বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে দলীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের সম্পাদকমণ্ডলীর সভায় ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন হলগুলো সংস্কার করা হবে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘শুধু হলগুলো নয়, একইসঙ্গে সংস্কার করা হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুকুরগুলো। পাবলিক লাইব্রেরিকেও ডিজটাল করে উন্নত করা হবে, যুক্ত হবে ডিজিটাল ব্যবস্থা।’ আগামী প্রজন্মের জন্য এগুলো সব করে যেতে চান বলে জানান তিনি।

এর আগে, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভা অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠক শেষে ভিডিও কনফারেন্সে সংযুক্ত হন আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমাকে এই কর্মসূচিতে কথা বলতে হবে, আমি সেভাবে জানতাম না। আমার আরেকটা কর্মসূচি ছিল, যেখানে ভিডিও কনফরেন্সের মাধ্যমে আমরা কাজ করছিলাম। সেখানে এরই মধ্যে বলেছি, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিটাকে নতুনভাবে গড়ে তুলতে চাই। সম্পূর্ণ আধুনিকভাবে টিএসসি প্রতিষ্ঠা করব। এটা হচ্ছে আমাদের ছাত্র-শিক্ষকদের একটা মিলন কেন্দ্র। সেটাকে আরও সুন্দরভাবে তৈরি করব। সেই নির্দেশ আমি দিয়েছি। ওখানে নতুনভাবে যা যা করার দরকার করব।’

বিজ্ঞাপন

তিনি আরও বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসির সঙ্গে আমি কথা বলেছিলাম। আমি জানি যে বিশ্ববিদ্যালয় এটা করতে পারবে না। কাজেই যে টাকা পয়সার খরচা লাগে (সরকার সেটা দেবে)। আমি তো এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী, জাতির পিতাও ছাত্র ছিলেন। কাজেই আমরাই এটা করে দেবো, সেই সিদ্ধান্ত আমরা নিয়েছি।’

ঢাকা মেডিকেল কলেজের প্রসঙ্গ তুলে শেখ হাসিনা বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেল কলেজটাকেও আমরা খুব সুন্দরভাবে করতে চাই। কারণ এটা একটা আমাদের জাতীয় প্রতিষ্ঠান। সারাদেশ থেকে চিকিৎসার জন্য এখানে মানুষেরা আসে। কাজেই এখানে যেন ৫ হাজার রোগীর চিকিৎসা হতে পারে, সেভাবে আমরা নতুনভাবে এটাকে গড়ে তুলতে চাই। হ্যাঁ, পুরনো ঐতিহ্য কিছুটা আমরা ধরে রাখতে পারি। কিন্তু ভেতরে সম্পূর্ণ একটি হাসপাতাল এবং মেডিকেল কলেজ আমরা নির্মাণ করে দেবো। এরই মধ্যে সেই পরিকল্পনাও তৈরি করা হয়েছে। সেটা যেন দ্রুত হয়, সেই ব্যবস্থাটা করতে চাই।’

তিনি আরও বলেন, সেখানে আমাদের ঐতিহ্যগুলো রক্ষা করা, সেটিও করা হবে। মেডিকেল কলেজের সঙ্গে আমাদের শহিদ মিনার আছে। এই শহিদ মিনারের মূল ডিজাইনটা ঠিক রেখে এলাকাটাকেও সুন্দরভাবে তৈরি করা হবে। শহিদ মিনারের সঙ্গে ঢাকা মেডিকেল কলেজ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। সেই আমতলায় দাঁড়িয়ে আমাদের ভাষা আন্দোলন শুরু। যেখানে ১৯৪৮ সালের ১৬ মার্চ জাতির পিতা মিটিং করেছিলেন বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার জন্য। কাজেই সেই আমতলাটাও রক্ষা করা। সবকিছু নিয়েই আমরা পরিকল্পনা করব সে ধরনের নির্দেশনা দিয়েছি।

অবকাঠামোগত আরও উন্নয়নের পরিকল্পনা তুলে ধরে শেখ হাসিনা জানান, ময়মনসিংহ বিভাগীয় শহরে বিভাগীয় কমিশনার ভবন নির্মাণের নকশা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রশাসন ক্যাডারের প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান জনপ্রশাসন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের (বিপিএটিসি) অবস্থা জরাজীর্ণ, সেটির জন্যও নতুন নকশার পরিকল্পনা অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। একই পরিকল্পনা রয়েছে পাবলিক লাইব্রেরি ঘিরেও। এটিকে আধুনিক ও ডিজিটাল একটি লাইব্রেরিতে রূপান্তরিত করতে সরকার কাজ করছে।

শেখ হাসিনা বলেন, এটি ডিজিটাল লাইব্রেরি হবে। সেখানে সুন্দর সাইবার ক্যাফেরও ব্যবস্থা থাকবে। সেখানে আমাদের ছেলেমেয়েরা যেন বসতে পারে, সেই ব্যবস্থা থাকবে। আমাদের যে জাতীয় জাদুঘর, তার পেছনে যে পুকুর ও পাবলিক লাইব্রেরির যে ল্যান্ডস্কেপ, পুরো এলাকাটিকে আমরা সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে চাই। তারও একটা প্ল্যান অলরেডি করলাম এবং সেটা তৈরি করাই আছে। সেটার কাজ যাতে যেন দ্রুত শুরু হয়, সে ব্যবস্থা আমরা নিতে চাচ্ছি। অর্থাৎ আমরা প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে একটি আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন করে আমাদের নতুন প্রজন্মের জন্য গড়ে যেতে চাই।

এরও আগে, বুধবার বিপিএটিসি’র প্রশিক্ষণ সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ প্রকল্পের ২০ তলা ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব একাডেমিক ও প্রশাসনিক ভবনে’র নকশা এবং ‘ময়মনসিংহ বিভাগীয় সদর দফতর স্থাপনের জন্য প্রস্তাবিত প্ল্যানের ভূমি ব্যবহার’ পরিকল্পনার উপস্থাপনা অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী কথা বলেন। গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশটা স্বাধীন করে দিয়ে গেছেন। এ দেশটাকে আমরা সুন্দরভাবে গড়ে তুলতে চাই। আমরা স্বাধীন দেশ, স্বাধীন জাতি। বিশ্ব এগিয়ে যাচ্ছে, বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমরা চলতে চাই।’

‘জাতির পিতার স্বপ্ন ছিল বাংলাদেশ উন্নত-সমৃদ্ধ হোক, বিশ্বসভায় মাথা উঁচু করে চলুক। আমরা সেভাবেই বাংলাদেশটাকে গড়ে তুলতে চাই। আজ তিনি নেই, কিন্তু তারা আকাঙ্ক্ষাটা পূরণ করে বাংলাদেশকে সুন্দরভাবে গড়ে তোলা, দারিদ্রমুক্ত ক্ষুধামুক্ত উন্নত শিক্ষিত আধুনিক জ্ঞানসম্পন্ন একটা জাতি হিসেবে বাঙালি জাতিকে গড়ে তোলা এবং বাংলাদেশকে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা গড়া এটাই আমাদের লক্ষ্য,’বলেন শেখ হাসিনা।

বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সভাপতিত্বে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন মাহবুবউল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, আহমদ হোসেন, বি এম মোজাম্মেল হক, এস এম কামাল হোসেন, মির্জা আজম, শফিউল ইসলাম চৌধুরী নাদেল, বিপ্লব বড়ুয়া, অসীম কুমার উকিল, মৃণাল কান্তি দাস, হাবিবুর রহমান সিরাজ, সুজিত রায় নন্দী, সেলিম মাহমুদ, রোকেয়া সুলতানা, ওয়াসিকা আয়শা খান, শাম্মী আহমেদ, সায়েম খানসহ অন্যরা।

টিএসসি প্রধানমন্ত্রী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর