খুলেছে সাজেক উপত্যকা, বাড়ছে পর্যটক
৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৭:৩৫
রাঙ্গামাটি: নভেল করোনাভাইরাসের (কভিড-১৯) প্রভাবে দীর্ঘ পাঁচ মাস ১৩ দিন বন্ধের পর অবশেষে ১ সেপ্টেম্বর থেকে খুলেছে দেশের আকর্ষণীয় পর্যটন কেন্দ্রের একটি রাঙ্গামাটির সাজেক ভ্যালি। চালু হয়েছে স্থানীয় কটেজ-রিজোর্ট, খাবারের দোকান। আঁকাবাঁকা পাহাড়ি পথে ফের নেমেছে চাঁদের গাড়ি। তবে প্রশাসনের কড়া নির্দেশনা— পর্যটকদের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হলেও সংশ্লিষ্ট সবাইকেই মানতে হবে স্বাস্থ্যবিধি।
এদিকে, ১ সেপ্টেম্বর সাজেক উন্মুক্ত করে দেওয়ার পর থেকেই সাজেক ভ্যালিতে পর্যটকদের আনাগোনা বাড়ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রথম কিছুদিন পর্যটক সংখ্যা কিছুটা কম থাকতে পারে। তবে সামনের সময়টাতে পর্যটক বাড়বে। এছাড়া সাপ্তাহিক ছুটিতে সাজেকে সবসময় পর্যটকরা ভিড় জমান। এতে করে দীর্ঘদিনের ক্ষতি পুষিয়ে ফের ঘুরে দাঁড়াবে সাজেক— এমনটিই প্রত্যাশা পর্যটন সংশ্লিষ্টদের।
বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) কথা হয় রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আহসান হাবিব জিতুর সঙ্গে। তিনি বলেন, সাজেক ভ্যালি খুলে দেওয়া হয়েছে দুই দিন হলো। যতটুকু জেনেছি, পর্যটকরা মোটামুটি আসছেন। স্বাস্থ্যবিধি মানতে কটেজ-মালিকদের কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। মালিক সমিতি কটেজ-রিজোর্ট মালিকদের সঙ্গে বৈঠক করেই সাজেক ভ্যালির হোটেল-রিজোর্ট খুলেছেন।
ইউএনও বলেন, স্বাস্থ্যবিধি মানার বিষয়ে আমি তাদের বারবার অনুরোধ করেছি। কটেজ মালিক সমিতি স্বাস্থ্যবিধি মানার ব্যাপারে নিজেরাও মনিটরিং টিম গঠন করেছেন। যারা স্বাস্থ্যবিধি মানবেন না, তাদের ৫ হাজার টাকা জরিমানার একটি বিধান করেছেন। এছাড়া আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযান পরিচালনা করলেও আইনি ব্যবস্থা নেব।
সাজেক কটেজ মালিক সমিতির সভাপতি সুপর্ণ দেব বর্মণ বলেন, সাজেক খুলেছে মাত্র দু’দিন হলো। প্রথমদিক হিসেবে মোটামুটি ভালোই পর্যটক এসেছে। আশা করছি, সামনের ছুটির দিনগুলোতে পর্যটক ও স্থানীয়দের জনসমাগম আরও বাড়বে।
সাজেকে অবস্থিত এভারেস্ট রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী মোসলেম উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, দীর্ঘ বিরতির পর সাজেক খুলেছে— এতে আমরা ব্যবসায়ীরা সবাই খুশি। শ্রমিক-কর্মচারীরাও কাজে ফিরেছেন। মোটামুটি রুমের বুকিং আসছে। এছাড়া সাজেক মালিক সমিতির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রতিটি ডাবল বেডের রুমের প্রতিটি বেডে একজনের বেশি থাকতে দেওয়া হচ্ছে না। যারা সাজেক আসছেন, প্রবেশ পথেই তাদের শরীরের তাপমাত্রা পরীক্ষা করা হচ্ছে। প্রবেশের পর বাইরে ঘোরাঘুরি করলেই মাস্ক পরার বিষয়টি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সর্বোপরি পর্যটকদের স্বাস্থ্যবিধি মানাতে আমরা প্রাণান্ত চেষ্টা করছি। নিজেরাও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছি।
সাজেকের উদ্দেশে খাগড়াছড়ি থেকে ছেড়ে চাঁদের গাড়ির লাইনম্যান অরুণ কুমার দে জানিয়েছেন, প্রথম দুই দিনে খাগড়াছড়ি শহর থেকে ২০টির মতো চাঁদের গাড়ি সাজেকের উদ্দেশে পর্যটক নিয়ে গেছে। দীঘিনালা থেকেও চাঁদের যায় সাজেক ভ্যালিতে। এছাড়া স্থানীয় অনেকেই মোটরসাইকেল কিংবা অন্যান্য যানে করে সাজেকে পৌঁছান।
অরুণ বলেন, সাজেক ভ্যালি খুলেছে মাত্র দুই দিন হলো। ধীরে ধীরে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পর্যটকরা আসতে শুরু করবেন। বিশেষ করে শুক্র-শনিবার ও সরকারি ছুটির দিনে এ সংখ্যা আরও বেড়ে যায়।