বিএনপি পূর্ণিমার আলোতেও অমানিশার অন্ধকার দেখে: কাদের
৫ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২০:১৮
ঢাকা: আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘বিএনপির মির্জা ফখরুল সাহেবরা সাহসী ভূমিকা দেখতে পান না, দেখতে পান অশনিসংকেত। তারা পূর্ণিমার রাতেও অমানিশার অন্ধকার দেখতে পান।’
শনিবার (৫ সেপ্টেম্বর) ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু: বাঙালির চেতনার বাতিঘর’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি তার সরকারি বাসভবন থেকে ভিডিও কলের মাধ্যমে যুক্ত হন।
তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অপরাধীকে অপরাধী হিসাবেই দেখেন। অপরাধীর কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। দুর্নীতির অপরাধে কোনো এমপির বিরুদ্ধে দুদকে মামলা ঝুঁলছে। অপরাধ করার পর শেখ হাসিনা কাউকে পার পেয়ে যেতে দেননি। কোনো কোনো এমপির দুদকের মামলায় সাজাও হয়েছে। মির্জা ফখরুল কি দেখাতে পারবেন তাদের ক্ষমতার আমলে তাদের কাউকে শাস্তি দিতে পেরেছেন? দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের ঘটনায় সরকার আগে ঘোষণা দিয়েছে অপরাধী যেই হোক আইনের আওতায় আনা হবে। আমরা কারও হাতে ইস্যু তুলে দিতে চাই না।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু মুজিবকে ইতিহাস থেকে যারা মুছে দিতে চেয়েছিল তারাই আজ মুছে যাচ্ছে ইতিহাসের পাতা থেকে। তাদের ঠাঁই হচ্ছে ইতিহাসে আস্তাকুড়ে। আজ ঘরে ঘরে লাখো কোটি ভাবাবেগ সিক্ত চেতনা সিক্ত মুজিব আছে। তার রেখে যাওয়া বিজয়ের প্রতীক নৌকার পালে আজ উদ্যম বাতাস। বঙ্গবন্ধু নেই আছে তার বাংলা। বুকে নিরন্তর দোলে অজানা এক দুঃখী ঢেউ বঙ্গবন্ধুর জন্য। বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশে ফিরে এসে ১৯৮১ সালের এক ঝঞ্ঝা বিক্ষুব্ধ দিনে পিতা মুজিবের রক্ত ভেজা মাটিতে ফিরে সারাবাংলা তিনি চষে বেড়িয়ে ছিলেন আওয়ামী লীগকে ঐক্যবদ্ধ করতে।‘
তিনি বলেন, ‘দেশরত্ন শেখ হাসিনা সেদিন ফিরে এসেছিলেন বলেই ’৭৫-এর নির্মম হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়েছে; জাতি কলঙ্কমুক্ত হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার দুঃসাহস কারও ছিল না। বঙ্গবন্ধু যে বিচার শুরু করেছিলেন সেই বিচার কাজও সমাপ্ত করেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। যেসকল খুনিরা বিভিন্ন দেশে লুকিয়ে আছে। তাদের কেউ ছাড় পাবে না। তাদের ফিরিয়ে এনে শাস্তি কার্যকর করতে কূটনৈতিক কার্যক্রম জোরদার করা হয়েছে।’
কাদের বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন নিয়ে শুধু ভাবেন না, তিনি ভাবেন পরবর্তী প্রজন্ম নিয়ে। তাই নিছক একজন রাজনীতিবিদ নন, প্রচলিত ধারার রাজনীতিক নন তিনি, তিনি পরবর্তি প্রজন্মের নেতা, তিনি একজন দূরদর্শী রাষ্ট্র নায়ক। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০৪০ সালের বাংলাদেশ নিয়ে ভাবেন। তার স্বপ্নে সমৃদ্ধ উন্নত বাংলাদেশ। তিনি শত বছরের বাংলাদেশ নিয়ে ভাবেন। তাই তো গ্রহণ করেছেন শতবর্ষি বদ্বীপ পরিকল্পনা।’
তিনি আরও বলেন, ‘মাদক, সামাজিক অপরাধ, সাইবার অপরাধসহ সামাজিক অবনমনের বিরুদ্ধে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে। আমরা মানবিক মানুষ চাই। আবেগহীন রোবট না, চাই সমাজ ঘনিষ্ঠ দেশপ্রেমিক নতুন প্রজন্ম। আমরা পরীক্ষার্থী চাই না, আমরা চাই শিক্ষার্থী। আমরা জীবিকা নয় জীবনের জন্য শিক্ষা চাই। এ বাস্তবতা উপলদ্ধি করতে হবে।’
কদের বলেন, ‘শেখ হাসিনা অপরাধীকে অপরাধী হিসাবেই দেখেন। অপরাধীর কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই। বিশ্বজিৎ হত্যা বরগুনার হত্যাকাণ্ড বুয়েটের আবরার হত্যা, ফেনির নুসরাত হত্যা প্রতিটি হত্যাকাণ্ড দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছে। ব্যবস্থা নিয়েছে শাহাজদপুরে সাংবাদিক হত্যার বিরুদ্ধে সেখানে আমাদের নির্বাচিত মেয়র তার পরেও তাকে জেলে যেতে হয়েছে। দুর্নীতির অপরাধে কোনো এমপির বিরুদ্ধে দুদকে মামলা ঝুঁলছে। অপরাধ করার পর শেখ হাসিনা কাউকে পার পেয়ে যেতে দেননি। কোনো কোনো এমপিরও এরইমধ্যে দুদকের মামলায় সাজা হয়েছে।’
দিনাজপুরের ঘোড়াঘাটের ঘটনায় জড়িত থাকার অপরাধে কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে নেওয়া হয়েছে সাংগঠনিক ব্যবস্থা। দেশ ও জনগণের প্রতি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ বলেই শেখ হাসিনা সরকার যেকোনো ধরনের ঘটনায় সবার আগে রেসপনস করে। কারও হাতেই ইস্যু আমরা তুলে দিতে চাই না। সরকার আগে ঘোষণা দিয়েছে অপরাধী যেই হোক তাকে আইনের আওতায় আনা হবে। মির্জা ফখরুল সাহেবরা সাহসী ভূমিকা দেখতে পান না, দেখতে পান অশনিসংকেত। তারা পূর্ণিমার রাতেও অমানিশারঅন্ধকার দেখতে পান। তাদের দৃষ্টিতে নেতিবাচক রাজনীতির কুয়াশা জমেছে বলে সরকারের সাহসী উদ্যোগ ও প্রশংসনীয় উদ্যোগ দেখতে পান না। আন্দোলন ও নির্বাচনে পরাজিত হয়ে আস্থা হারিয়ে ফেলেছে। গভীর হতাশা থেকে দুই একটা হাঁক ছাড়ে তারা। তারা আষাড়ের তর্জন গর্জনেই সার। এতে জনগন বিভ্রান্ত হয় না।