Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মসজিদে বিস্ফোরণে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ, দুর্ভোগে ২০ হাজার পরিবার


৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৩:৫০

নারায়ণগঞ্জ: নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার পশ্চিম তল্লা বায়তুস সালাত জামে মসজিদে বিস্ফোরণের ঘটনার পর থেকে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ পশ্চিম তল্লা ও সবুজবাগসহ আশেপাশের এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ রেখেছে বলে অভিযোগ এলাকাবাসীর। কয়েকদিন ধরে স্থানীয়রা গ্যাস সুবিধা পাচ্ছেন না। পাকা ভবন ও টিনের ঘরের ভেতরে ইট দিয়ে বাঁশ-কাঠ জ্বালিয়ে অনেকে রান্না-বান্নার কাজ সারছেন। গ্যাসের সংযোগ বিচ্ছিন্ন থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন ওই এলাকার গৃহিণীরা।

বিজ্ঞাপন

তল্লা কায়েমপুর ও গোদনাইল এলাকায় অবস্থিত ফকির নিটওয়্যার, মডেল ডি ক্যাপিটাল গার্মেন্টস, খাজা গার্মেন্টস ও নিট কনসার্নসহ বেশ কয়েকটি গার্মেন্টস কারখানার কর্মরত স্বল্প আয়ের মানুষের বসবাস পশ্চিম তল্লা ও সবুজবাগে। বায়তুস সালাত জামে মসজিদে এশার নামাজের সময় বিস্ফোরণের পর পরই দুটি এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয় তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। ফলে দুই এলাকার বাসিন্দারা রান্না-বান্না করতে না পেরে খাদ্য সংকটে ভুগছেন। অনেকেই দোকান থেকে শুকনো খাবার কিনে কিংবা হোটেল থেকে খাবার এনে দিনযাপন করছেন। বিস্ফোরণে পর মসজিদ কমিটি ও এলাকাবাসী অভিযোগ করেছিলেন, মসজিদে গ্যাসের লিকেজ থেকেই বিস্ফোরণ ঘটেছে। এরপর থেকেই এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ।

বিজ্ঞাপন

পশ্চিম তল্লার বাসিন্দা মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘মসজিদে বিস্ফোরণের পরই পশ্চিম তল্লা ও সুবজবাগ এলাকায় গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেয় তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ। ফলে বাসায় রান্না বন্ধ রয়েছে। জ্বলছে না চুলা। বাহির থেকে কখনও শুকনো খাবার খেয়ে দিন পার করছি।’

তিনি বলেন, ‘এ দুটি এলাকার ২০ হাজার পরিবারের বাসাবাড়িতে গ্যাস না থাকায় রান্না-বান্নায় অসুবিধা হচ্ছে।’

একই এলাকার গৃহিনী রোজিনা ইসলাম জানান, মসজিদে বিস্ফোরণের পর তিতাস গ্যাস অফিসের লোকজন রাতের আঁধারে এসে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ করে দেন। ফলে গ্যাসের চুলায় রান্নাবান্না করতে না পেরে ছোট ছোট ছেলে-মেয়েদের নিয়ে কলা রুটি খেয়ে দিন পার করছি।

তিনি বলেন, ‘গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার কারণে আশপাশের হোটেল রেঁস্তোরা থেকে বেশি দামে খাবার কিনে এনে খেতে হচ্ছে। আমরা স্বল্প আয়ের মানুষ। আমাদের পক্ষে প্রতিদিন হোটেল থেকে খাবার কিনে খাওয়া সম্ভব নয়। তাই দ্রুত পুনরায় গ্যাস সংযোগ প্রদান করে ত্রুটিপূর্ণ গ্যাস লাইন মেরামতে দাবি জানাই।’

স্থানীয় একটি কলেজের অধ্যক্ষ দাবি করেন, গ্যাস সরবরাহ না থাকায় শ্রমঘন এলাকায় মানুষকে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। মসজিদে বিস্ফোরণের পর থেকে তিতাস কর্মকর্তাদের খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি সংশিষ্ট কর্তৃপক্ষকে ত্রুটিপূর্ণ লাইন মেরামত করে এলাকায় পুনরায় গ্যাস সরবাহের দাবি জানান।

নারায়ণগঞ্জ তিতাস গ্যাস অফিসের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. মফিজুল ইসলাম জানান, মসজিদে বিস্ফোরণের পর ফের যাতে কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে সে কারণেই ওই এলাকার গ্যাস লাইনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছিল। তিনি বলেন, গ্যাস লাইনে যদি কোনও ত্রুতি ধরা পড়ে তবে তা সংস্কারের ব্যবস্থা করা হবে।

প্রসঙ্গত, ৪ সেপ্টেম্বর রাতে এশার নামাজের সময় এ বিস্ফোরণ ঘটে। ফরজ নামাজের মোনাজাত শেষে অনেকে সুন্নত ও অন্য নামাজ পড়ছিলেন। এ সময় মসজিদের ভেতরে প্রায় ৪০ জন মুসল্লি ছিলেন। বিস্ফোরণে তাদের প্রায় সবাই দগ্ধ হন। তাদের মধ্যে এ পর্যন্ত মারা গেছেন প্রায় ২৬ জন।

গ্যাস সংযোগ নারায়ণগঞ্জ মসজিদে বিস্ফোরণ

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর