ওয়াহিদা খানমের অবস্থার উন্নতি, এইচডিইউতে স্থানান্তর
৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৬:১১
ঢাকা: দুর্বৃত্তের হামলায় আহত দিনাজপুরের ঘোড়াঘাট উপজেলার নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ওয়াহিদা খানমের শারীরিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। এখনো তার মাথায় ব্যথা রয়েছে। তবে তাকে হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ) থেকে হাই ডিপেনডেন্সি ইউনিটে (এইচডিইউ) স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সেখানে তাকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখা হবে।
সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্স অ্যান্ড হসপিটালে ওয়াহিদা খানমের চিকিৎসার জন্য গঠিত মেডিকেল বোর্ডের চিকিৎসকেরা সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।
আট সদস্যের মেডিকেল বোর্ডের প্রধান ও হসপিটালের নিউরোট্রমা বিভাগের প্রধান অধ্যাপক ডা. মো. জাহেদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘৭২ ঘণ্টার নিবিড় পর্যবেক্ষণ শেষে তাকে (ওয়াহিদা) এইচডিইউতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। শারীরিক অবস্থার উন্নতি হওয়ায় তাকে আমরা এইচডিইউতে নিয়ে যাব। এইচডিইউর সার্ভিসটা একই হবে। নিবিড় পর্যবেক্ষণ চলবে। তবে তাকে আইসিইউতে রাখার প্রয়োজনীয়তা নেই। তার ডান পাশ অবশ। সেটার কোনো উন্নতি এখনো হয়নি। এটার উন্নতি হবে, কীভাবে হবে, সেটা আমরা বলতে পারব না।’
ওয়াহিদা খানম শঙ্কামুক্ত—এটা বলা যাবে না উল্লেখ করে অধ্যাপক ডা. মো. জাহেদ হোসেন বলেন, ‘শঙ্কামুক্ত আমরা কখনোই বলতে পারব না। কারণ তিনি একটা বড় আঘাত নিয়ে আছেন। যেকোনো সময় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। তবে আমরা সে চিন্তা না করে উন্নতির কথা বলব। সে আগে যেরকম খারাপ অবস্থায় ছিল, সেখান থেকে অনেক সুস্থ হয়েছেন। এখন একটা মোটামুটি স্ট্যাবল পজিশনে আছেন। আমরা যতদিন তাকে ছুটি না দিচ্ছি, ততদিন শঙ্কামুক্ত কথাটা বলতে পারছি না।’
তিনি বলেন, ‘যেহেতু তিনি মাথায় বড় একটা আঘাত পেয়েছেন, যেকোনো সময় যেকোনো কিছু ঘটতে পারে। ইউএনও ওয়াহিদা খানম পুরনো স্মৃতিগুলো স্মরণ করতে পারছেন। পারিবারিক এবং তার সন্তানের খোঁজ নিচ্ছেন। তার স্বামীর সঙ্গে কথা বলছেন। সেলাই কাটার তিন-চারদিন পরে ওয়াহিদা খানমকে কেবিনে দেওয়া হবে। তবে তার যে পাশটা অবশ হয়ে আছে সে অংশের এখনো কোনো উন্নতি হয়নি এবং এটার জন্য আমরা ফিজিওথেরাপি দিয়ে যাচ্ছি। কবে উন্নতি হবে সেটা বলা যাবে না।’
সংবাদ সম্মেলনে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের যুগ্ম পরিচালক ডা. বদরুল আলম উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, বুধবার (২ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে ইউএনও ওয়াহিদার সরকারি বাসভবনের ভেন্টিলেটর ভেঙে বাসায় ঢুকে ওয়াহিদা ও তার বাবার ওপর হামলা চালায় দুর্বৃত্তরা। পরে ইউএনওকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (রমেক) নিয়ে ভর্তি করা হয়। এরপর তার অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারে করে তাকে ঢাকায় আনা হয়। তিনি বর্তমানে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বৃহস্পতিবার (৩ সেপ্টেম্বর) রাতে ৬ সদস্যের চিকিৎসক দল প্রায় দুই ঘণ্টার চেষ্টায় ইউএনও ওয়াহিদার মাথায় জটিল অস্ত্রোপচার সম্পন্ন করে। অস্ত্রোপচার শেষেই তাকে ৭২ ঘণ্টার পর্যবেক্ষণে রাখেন চিকিৎসকরা।