পারব না বলে পিছিয়ে যেতে রাজি নই: শেখ হাসিনা
৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৭:৩৫
ঢাকা: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, করোনা থাকা সত্ত্বেও আমরা বাজেট দিয়েছি। সত্যি কথা বলতে কি জানি না, ভবিষ্যত আমরা কতটুকু করতে পারব? যদি সারা বিশ্বব্যাপী মন্দা চলতেই থাকে বা খারাপ হয় তাহলে হয়তো পারব না। কিন্তু পারবো না বলে আমি পিছিয়ে যেতে রাজি নই।
সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে গণভবন থেকে সশস্ত্র বাহিনী পর্ষদ ২০২০ (১ম পর্ব)’এ অংশগ্রহণের ভার্চুয়াল সভায় যুক্ত হয়ে তিনি এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ঢাকা সেনানিবাসের সেনাদর, নৌবাহিনীর সেনা সদর এবং বিমান বাহিনীর সদর দফতরে যুক্ত হয়ে কথা বলেন।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘প্রতিটি ক্ষেত্রে মানুষের সাথে থেকে মানুষের জন্য কাজ করে যাওয়া। এটিই হচ্ছে সবচেয়ে বড় কাজ। সেই কাজগুলো অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে আপনারা করে যাচ্ছেন। আজকে করোনার জন্য সারা বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিচ্ছে। খাদ্য সংকট দেখা দিচ্ছে। সেই ক্ষেত্রে আমরা কতগুলো পদক্ষেপ নিচ্ছি কারণ আমরা শুরু থেকে খুব সজাগ ছিলাম। যাই হোক আমাদের দেশের খাদ্যের অভাব যেন না হয়।’
‘কৃষি কাজ এবং কৃষিতে ভর্তুকি দেওয়া, সব রকম সহযোগিতা করা এবং খাদ্য উৎপাদন নিশ্চিত করবার জন্য আমরা সব রকম ব্যবস্থা নিই। এই একটা দিক থেকে আমরা নিশ্চিন্ত আছি যে আমাদের খাদ্যে কোন সংকট হবে না। আল্লাহর রহমতে। সেই সংকট আমরা হতে দেব না। যেই জন্য আমি ইতোমধ্যে নির্দেশ দিয়েছি এক ইঞ্চি জমি যেন অনাবাদী না থাকে বা কোন জলাভূমি যেন পড়ে না থাকে। ফলে আজকে মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ সারা বিশ্বে দ্বিতীয়। চাল উৎপাদনে তৃতীয় স্থানে আছি’ বলেন প্রধানমন্ত্রী।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ‘খাদ্য নিরাপত্তাটা হচ্ছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কথায় বলে পেটে খেলে পিঠে সয়। সেই খাদ্য নিরাপত্তাটা আমরা নিশ্চিত করতে চাই। পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড যেন সচল থাকে তার জন্য আমরা বিভিন্ন প্রণোদনা প্যাকেজ দিয়েছি।’
‘করোনা থাকা সত্ত্বেও আমাদের বাজেট আমরা দিয়েছি। এই বাজেট কিন্তু- সত্যি কথা বলতে কি জানি না ভবিষ্যত আমরা কতটুকু করতে পারবো, কিন্তু আমার কথা হচ্ছে খুব স্বাভাবিক ভাবে আমরা যে বাজেট দেই সেই ভাবে আমরা কিন্তু বাজেটটা দিয়েছি। বাজেটটা দিয়েছি লক্ষ্য আমরা স্থির রেখেছি। এর ভেতরে যতটুকু আমরা অর্জন করতে পারি। যদি সারা বিশ্বব্যাপী মন্দা চলতেই থাকে বা খারাপ হয় তাহলে হয়ত পারব না। কিন্তু পারবো না বলে আমি পিছিয়ে যেতে রাজি নই।’
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের আয়োজন থাকবে, প্রস্তুতি থাকবে এবং যতটুকু পারি আমরা করব এটিই আমাদের লক্ষ্য। মুজিববর্ষে আমাদের লক্ষ্যই ছিল বাংলাদেশকে আমরা দারিদ্র্যমুক্ত করব। বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধি আমরা ৮.২ ভাগ অর্জন করব এটা আমাদের লক্ষ্য ছিল। এপ্রিল মাস পর্যকন্ত আমরা ৭.৮ ভাগ আমরা অর্জনও করেছি। কিন্তু করোনার ধাক্কায় সেটা ৫.৮ ভাগে নেমে এসেছে। তারপরও আমরা আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছি।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘যেখানে যতটুকু সহযোগিতা দেওয়া যায় আমরা সেটা করে যাচ্ছি। যার জন্য বাজেটে কিন্তু আমরা টাকা পয়সা কম দেইনি। কিন্তু ব্যয় করার সময় সকলকে একটু সীমিত ভাবে ব্যয় করতে হবে এই কারণে বাজেটে আমরা বরাদ্দ ধরে রেখেছি কিন্তু এ অর্থনৈতিক অবস্থায় কতটুকু অর্থ আমরা সংগ্রহ করতে পারব আর কতটুকু ব্যয় করতে পারবো সেখানে আমাদের এখন থেকে হিসেব করে চলতে হবে। সেই অনুরোধটা আমি সকলকে করবো, আমার সশস্ত্র বাহিনী- তিন বাহিনীকেও আমি বলব।… টাকার জোগানটা আমরা কতটুকু দিতে পারবো সেটাও একটা বিষয়। খুবই প্রয়োজনী সেটা ছাড়া অন্য ব্যয়গুলো আমরা আপাতত স্থগিত রাখবো। যদি সুদিন আসে তখন আমরা করব।’
‘অনেকে মনে করেছে রিজার্ভ আমরা ধরে রাখতে পারব না। আল্লাহর রহমতে রিজার্ভ আমাদের বেড়েছে। ৩৯ দশমিক ৪ বিলিয়ন ইউএস ডলার আমাদের এখন রিজার্ভ। আমাদের রেমিট্যান্সও যথেষ্ট আসছে। সেখানে আমরা প্রণোদনা দিয়েছি বলে উল্লেখ করেন শেখ হাসিনা’ বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।