নদী ভাঙনের ঝুঁকিতে নড়াইলের চরসুচাইল বিদ্যালয়
৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৮:১০
নড়াইল: নড়াইলের লোহাগড়া উপজেলার ইতনা ইউনিয়নে মধুমতি নদীর ভাঙনে পাংখারচর-চরসুচাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় বিলীন হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। বিদ্যালয় ভবন ছাড়াও সংলগ্ন পাংখারচর, চরসুচাইল ও চরপরাণপুর গ্রামের শতাধিক পরিবার নদীভাঙন আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছে। ১০ বছর ধরে নদী ভাঙনে এই তিনটি গ্রামের শতাধিক বাড়ি, হাজারো গাছপালা ও কৃষি জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, খরস্রোতা মধুমতি নদী গতি পরিবর্তন করায় এই তিন গ্রামের মধ্যে বিশাল বাঁওড়ের সৃষ্টি হয়েছে। ফলে নিয়মিত জোয়ার-ভাটায় তীব্র স্রোত সৃষ্টি হয়। এই স্রোতে কয়েকটি পয়েন্টে ভাঙন দেখা দিয়েছে। এর মধ্যে পাংখারচর-চরসুচাইল প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় ভাঙনের তীব্রতা বেশি।
ভাঙন কবলিত এলাকা চরসুচাইল গ্রামের বাসিন্দা কল্লোল ফকির বলেন, মধুমতি নদীর মূল স্রোত অন্যত্র দিয়ে প্রবাহিত হলেও নদীভাঙনের কষ্ট আমাদের ছাড়ে নাই। বাঁওড়ের তীরবর্তী তিন গ্রামের মানুষ এখনও নদীভাঙনে সহায় সম্বল হারাচ্ছে। সেখানকার একমাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি যে কোন সময়ে নদীভাঙনে বিলীন হতে পারে। অনেকে বাড়িঘর, কৃষি জমি, গাছপালা হারিয়েছেন। ভাঙন রোধে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ না করলে আরও অনেকেই নিঃস্ব হবে বলে জানান তিনি।
চরসুচাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুন্সী কামরুজ্জামান বলেন, ১০ বছর আগে এই বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে যোগদান করি। প্রথমদিকে দুই শতাধিক শিক্ষার্থী থাকলেও নদীভাঙন আতঙ্কে অনেক শিক্ষার্থী স্কুল ছেড়ে চলে গেছে। এখন বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র ১১০জন। বিদ্যালয়ের মাঠটিও এক বছর আগে নদীগর্ভে চলে গেছে। এখন টিনশেডের পাকাঘরটির কাছেই ভাঙন শুরু হয়েছে। ভাঙন থেকে মাত্র ১০ ফুট দূরে আছে বিদ্যালয় ভবন। ঝুঁকির মধ্যে শিক্ষার্থীদের নিয়ে ক্লাস করতে হয়। নড়াইল -২ আসনের সাংসদ মাশরাফি বিন মর্তুজা যেন স্কুল রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেন— এমন দাবি জানান তিনি।
এ ব্যাপারে পানি উন্নয়ন বোর্ড নড়াইলের কর্মকর্তারা জানান, চরসুচাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও এলাকার ভাঙন প্রতিরোধে গত বছর একটি প্রকল্প দাখিল করা হলে ২ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়। যা দিয়ে ১৭০ মিটার কাজ বাস্তবায়ন হলেও ভাঙন প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখা সম্ভব হতো না। তাই পরবর্তীতে মধুমতি নদীর ঝুঁকিপূর্ণ প্রকল্পের আওতায় একটি প্রকল্প দেয়া হয়েছে। এই প্রকল্পটি পাশ হলে এখানে ৬০০ মিটার নদীতীর সংরক্ষণ কাজ বাস্তবায়ন করা যাবে। আশা করছি, চলতি বছরের ডিসেম্বরের মধ্যেই প্রকল্পটি অনুমোদন করা হবে।