Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

চলছে পদ্মাসেতুর সবশেষ স্প্যানের কাজ, বসবে ডিসেম্বরে


৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৮:০৯

ঢাকা: স্বপ্নের পদ্মাসেতুর সবশেষ স্প্যানের কাজ শুরু হয়েছে। এই স্প্যান তৈরি শেষ হলেই পদ্মাসেতুর আর কোনো স্প্যানের কাজ বাকি থাকবে না। প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, শেষ এই স্প্যানের কাজ শেষ হতে সময় লাগবে আরও দুই মাস। সে হিসাবে অক্টোবরে শেষ হবে এই স্প‌্যান নির্মাণের কাজ। আর এরপর ডিসেম্বরের মধ্যে এটি বসিয়ে দেওয়া হবে খুঁটিতে।

রোববার (৬ সেপ্টেম্বর) পদ্মাসেতুর কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, সেতুর ৪১তম স্প্যানের কাজ চলছে। শ্রমিক প্রকৌশলীরা স্প্যানের যন্ত্রাংশগুলো জোড়া লাগাতে শুরু করেছেন। কারখানার পেছনের দিক থেকে জোড়া দিতে দিতে প‌রিপূর্ণ একটি স্প্যান সামনের দিকে বের হয়ে আসে। পুরো প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে দুই মাস সময় লাগবে।

বিজ্ঞাপন

৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের পদ্মাসেতুতে মোট স্প্যান প্রয়োজন হবে ৪১টি। এর মধ্যে ৩১টি স্প্যান বসানোর কাজ শেষ হয়েছে এরই মধ্যে। বাকি রয়েছে ১০টি স্প্যান বসানোর কাজ। এর মধ্যে ৯টি স্প্যান তৈরিই ছিল। বাকি একটি তৈরিই ছিল না। সেটিও শেষ হয়ে যাচ্ছে অক্টোবরে।


প্রকল্প সূত্র জানায়, তৈরি ৯টি স্প্যানের মধ্যে চারটি স্প্যান খুঁটিতে বসানার জন্য শতভাগ প্রস্তুত হয়ে আছে। এগুলোর শেষ ধাপ পেইন্টিং পর্যন্ত শেষ। নদীতে স্রোত কিছুটা কমলেই এই স্প্যানগুলো বসানোর কাজ শুরু হবে। ৯টি স্প্যানের মধ্যে বাকি পাঁচটি স্প্যানের কাজও বলতে গেলে শেষ। নির্মাণ শেষে এখন কেবল পেইন্টিং বাকি আছে। সম্পূর্ণ প্রস্তুত চারটি স্প্যান বসানোর প্রক্রিয়া এগিয়ে যেতে যেতে এগুলোর পেইন্টিংয়ের কাজও শেষ হয়ে যাবে।

পদ্মাসেতু প্রকল্প সূত্র আরও জানায়, সর্বনিম্ন ১৫ থেকে স‌র্বোচ্চ ৯০ টনের ১০৮ থেকে ১১৫ টুকরো স্টিল জোড়া দিয়ে তৈরি হয় একটি স্প্যান। প্রতিটি স্প্যানের দৈর্ঘ্য ১৫০ মিটার। আর একেকটি স্প্যান বসানোর জন্য প্রস্তুত হয়ে গেলে এর ওজন দাঁড়ায় ২ হাজার ৮০০ টন। তিন হাজার টন ওজন ধারণক্ষমতার ক্রেনে তুলে খুঁটির ওপর বসানো হয় এই স্প্যান।

বিজ্ঞাপন

প্রকল্প কর্মকর্তারা বলছেন, মধ্য সেপ্টেম্বর থেকে ফের স্প্যান বসাতে শুরু করতে পারবেন বলে আশা করছেন তারা। অন্য কোনো জটিলতা দেখা না দিলে ডিসেম্বর নাগাদ শেষ স্প্যানটি বসাতে পারবেন। আর তখনই দৃশ্যমান হবে স্বপ্নের ৬ দশমিক ১৫ কিলোমিটার লম্বা পদ্মাসেতু।

প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম সারাবাংলাকে বলেন, মূল সেতুর কাজের মধ্যে ১০টি স্প্যান বসানোর কাজ বাকি রয়েছে। তাছাড়া সড়কপথের স্ল্যাব শরিয়তপুর অংশ থেকে মুন্সিগঞ্জের দিকে এগিয়ে আসছে। ফলে পদ্মাসেতুর কাজ প্রকৃতপক্ষে খুব বেশি বাকি নেই।

করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ পদ্মাসেতুর কাজে কী প্রভাব ফেলেছে— এমন প্রশ্নের উত্তরে প্রকল্প পরিচালক বলেন, হ্যাঁ, করোনাভাইরাসের সংক্রমণে প্রকল্পের কাজের গতি কম ছিল। তবে কাজ কখনোই বন্ধ ছিল না। এর বাইরে বন্যাতেও কাজের কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। তা শিগগিরই কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে। এরই মধ্যে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।

প্রকল্প সূত্রের তথ্য বলছে, মূল সেতুর কাজের অগ্রগতি এখন প্রায় ৯০ শতাংশ। আর নদী শাসন কাজের অগ্রগতি ৭৩ শতাংশ। পুরো প্রকল্পের সার্বিক অগ্রগতি ৮০ দশমিক ৫০ শতাংশ।

এদিকে, সরকারের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্প হিসেবে পদ্মাসেতু ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত হয়ে আসছে। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) থেকে এই পদ্মাসেতুসহ অন্য ফাস্ট ট্র্যাক প্রকল্পগুলোর সবশেষ অগ্রগতির এক প্রতিবেদন সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। ওই প্রতিবেদনের তথ্য বলছে, মূল সেতুর নির্মাণ কাজের অগ্রগতি ৮৯ দশমিক ২৫ শতাংশ। নদী শাসন কাজের অগ্রগতি হয়েছে ৭৪ শতাংশ। আর সার্বিকভাবে প্রকল্পটির ৮১ শতাংশ বাস্তবায়ন হয়েছে।

পদ্মাসেতু শেষ স্প্যান স্প্যান

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর