নির্দেশ ছিল রোহিঙ্গা দেখলেই হত্যা – স্বীকারোক্তি মিয়ানমার সেনার
৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৫:৫৪
মিয়ানমার থেকে পালিয়ে দ্য হেগের আন্তর্জাতিক আদালতে হাজির হওয়া দুই সেনাসদস্য তাদের ভিডিও সাক্ষ্যগ্রহণের সময় বলেছেন – ২০১৭ সালে রাখাইনে অভিযান পরিচালনার সময় উর্ধ্বতন সেনা কর্মকর্তারা রোহিঙ্গাদের দেখামাত্র হত্যার নির্দেশ দিয়েছিলেন। খবর নিউইয়র্ক টাইমস।
এদিকে, মিও উন তুন এবং জো নাইং তুন নামের ওই দুই সেনা সদস্য বলেছেন, তাদের কমান্ডিং অফিসারের নির্দেশ পালনে তিনি ছিলেন বাধ্য। তাই তিনি অন্তত ৩০ জন রোহিঙ্গা মুসলিমকে হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন। পরে, যাদেরকে একটি সেনা ঘাঁটির পাশে গণকবর খুঁড়ে মাটিচাপা দেওয়া হয়।
এছাড়াও, ২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে পরিচালিত ওই সেনা অভিযানের সময় এই দুই সেনা সদস্য অন্তত ২০ টি রোহিঙ্গা গ্রাম উজাড়ের সঙ্গে জড়িত ছিলেন বলে স্বীকারোক্তিতে উল্লেখ করেছেন।
সোমবার (৭ সেপ্টেম্বর) তাদেরকে দ্য হেগের আন্তর্জাতিক আদালতে হাজির করে ভিডিওচিত্রে তাদের সাক্ষ্য ধারণ করা হয়।
এর আগে, গাম্বিয়ার দায়ের করা এক মামলায় রাখাইনে গণহত্যা হয়েছে এমন অভিযোগে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ও সরকারকে অভিযুক্ত করা হয়। ওই মামলার প্রথম দফা শুনানি শেষে – মিয়ানমার কৌশলগত অবস্থান থেকে বারবার ওই গণহত্যার অভিযোগ অস্বীকার করে।
এই প্রথম, ২০১৭ সালের ওই সেনা অভিযানে জড়িত কোনো সেনা সদস্য রাখাইনে গণহত্যা, লুণ্ঠন, ধর্ষণের ব্যাপারে মুখ খোলার পর আদালতে মিয়ানমারের অবস্থান প্রশ্নের মুখে পড়লো।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালে মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্য করে পরিচালিত ওই সেনা অভিযানের মুখে নিজেদের ভিটে মাটি ছেড়ে রোহিঙ্গারা সীমান্ত সংলগ্ন কক্সবাজার জেলায় পালিয়ে আসে। জেলার টেকনাফ ও উখিয়া উপজেলায় স্থাপিত অস্থায়ী ৩২টি ক্যাম্পে তারা বর্তমানে মানবেতর জীবন যাপন করছেন। তিন বছরের মধ্যে কয়েকদফা প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও মিয়ানমারের সদিচ্ছার অভাবে তা আলোর মুখ দেখেনি।